স্টাফ রিপোর্টার: আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০০১ সালে গ্যাস বিক্রির অঙ্গীকার করে সরকারে এসেছিল বিএনপি। আওয়ামী লীগের দেশের সম্পদ বিক্রি করে ক্ষমতায় আসার লোভ নেই। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় সূচনা বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্ষমতায় থাকতে বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিতে চায়নি, এখন কেন আন্দোলন করছে? শেখ হাসিনা বলেন, সুযোগ থাকার পরও বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থা করেনি। এখন তারা কেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাইছে? তখন খালেদা জিয়া বলেছিল যে, পাগল আর শিশু ছাড়া কেউ নিরপেক্ষ না। বিএনপির নেতাদের বলছি, তারা কী সেই পাগল আর শিশু কী খুঁজে পেয়েছে? তারা কি জবাব দেবে, কেনো রাজনীতির নামে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল? ভোট চুরি করলে দেশের মানুষ মেনে নেয় না, খালেদা জিয়ার পদত্যাগই তার প্রমাণ। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে সরানোই নাকি বিএনপির একদফা আন্দোলন। দেশবাসীর কাছে আমার প্রশ্ন, কী অপরাধ আওয়ামী লীগের? বিএনপি কেন এক দফার কথা বলছে। যারা স্বজনহারা তাদের জবাব কি খালেদা জিয়া দিতে পারবে? বিএনপি দেশের মানুষকে কী দিতে পেরেছে? আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, বাংলাদেশকে আবার অন্ধকার যুগে ফেরাতে চায় বিএনপি। বিএনপির অত্যাচারের শিকার দেশের সর্বস্তরের মানুষ। যারা দুর্নীতি করে বিদেশে টাকা পাচার করেছে তাদের মুখে এখন নীতির কথা শুনতে হয়। তিনি বলেন, বিএনপির মতো অত্যাচারের পথে হাঁটেনি আওয়ামী লীগ। ২১ আগস্টের হামলার আলামত পর্যন্ত রাখতে দেয়নি তারা। এখনও বিএনপির নেতারা আমাকে সরাসরি হত্যার হুমকি দিচ্ছে। কেন এমন করা হচ্ছে, এর জবাব বিএনপির কাছে চাইতে হবে। বিএনপির আমলে দেশের সর্বস্তরের মানুষ অত্যাচারিত, নির্যাতিত ছিল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তারা (বিএনপি নেতারা) মানুষকে যে নির্যাতন করেছে, সেগুলো কী মানুষ ভুলে যাবে এত তাড়াতাড়ি? এসব কেনো করেছিল এসবের জবাব আমি চাই বিএনপির কাছে। যাদের হাতে রক্তের দাগ তারা কোন গণতন্ত্র দেবে? আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, প্রত্যেকটা খাতকে কেনো তারা পিছিয়ে নিয়েছিল, এর জবাব কী বিএনপি দেবে? তারা ক্ষমতায় থেকে শুধু লুটপাট করেছে, দেশের মানুষকে কিছু দেয়নি। লুটপাট ছাড়া তারা এতো টাকা কোথায় পেলো। এসবের জবাব মানুষের কাছে তাদেরকে দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশকে আবারও অন্ধকারে এবং পেছনে টেনে নিয়ে যাবে। দেশবাসীকে বলবো, বিএনপিকে বিশ্বাস করবেন না। প্রধানমন্ত্রীর সূচনা বক্তব্যের পর তার সভাপতিত্বে নেতৃবৃন্দের রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়। রাত সাড়ে ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বৈঠক চলছিল। আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা রয়েছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে মাঠে থেকে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের বিশেষ বার্তা দেয়া হবে বলে জানা গেছে। এছাড়া আগের সভায় তৃণমূলের যেসব নেতা অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও দ্বন্দ্বের বিষয় দলীয় প্রধানকে অবহিত করেছিলেন সেসব বিষয়েও সভা থেকে নির্দেশনা আসতে পারে। জানা গেছে, আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী বৈঠকের জন্য ৯টি এজেন্ডা রয়েছে। এগুলো হলো- শোক প্রস্তাব, দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উদযাপন (২৮ সেপ্টেম্বর), শেখ রাসেল দিবস (১৮ অক্টোবর), জেলহত্যা দিবস (৩ নভেম্বর), নূর হোসেন দিবস (১০ নভেম্বর), ডা. মিলন দিবস (২৭ নভেম্বর), সমসাময়িক বিষয় (জাতীয় ও আন্তর্জাতিক), সাংগঠনিক বিষয় ও বিবিধ। এছাড়া বৈঠকে একগুচ্ছ নির্বাচনী দিকনির্দেশনা দিতে পারেন দলীয়প্রধান শেখ হাসিনা।