দামুড়হুদায় সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে গোপনে চলছে কোচিং বানিজ্য : স্বাস্থ্য ঝুকিতে শিশু শিক্ষার্থীরা

দামুড়হুদা ব্যুরো : দামুড়হুদায় থেমে নেই কোচিং বানিজ্য। সরকারি নিদের্শনা অমান্য করে গোপনে কোচিং বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। কেউ কেউ নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে আবার কেউ কেউ বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে গোপনে চালাচ্ছেন কোচিং বানিজ্য। ফলে স্বাস্থ্য ঝুকির মধ্যে রয়েছে শিশু শিক্ষার্থীরা। উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন সচেতন অভিভাবক মহল। শিশু শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুকির বিষয়ে আশু ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ইউএনও’র হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা। অভিযুক্তদের কেউ কেউ খোঁড়া যুক্তি উপস্থাপন করলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে পড়ানোর কোন সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমান।
জানা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলা সদরস্থ ব্রীজপাড়ায় প্রীতি কোচিং সেন্টার এবং নিউ লাইফ এডুকেশন স্ট্রেট প্রি-ক্যাডেট স্কুল, দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ডস্থ ফাস্ট মাল্টিমিডিয়া মডেল স্কুল এবং বেবী কেয়ার হোম্স, উপজেলা পরিষদস্থ কানন বিদ্যা পীঠ, দামুড়হুদা বাজারপাড়াস্থ রোজ কিন্ডার গার্টেণ নামে স্কুল রয়েছে। এ সমস্ত স্কুলের বাইরেও কয়েকজন শিক্ষক দির্ঘদিন ধরে নিজ বাড়িতে প্রাইভেট পড়িয়ে আসছেন। সম্প্রতি কোভিড-১৯ বা করোনা ভাইরাসের সংক্রমন দেশব্যাপি ছড়িয়ে পড়ায় সরকারিভাবে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষনা করা হয়। ওই সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত বন্ধ করা হলেও সম্প্রতি কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক আবারও পড়াতে শুরু করেছেন। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে কেউ কেউ নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে আবার কেউ কেউ বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে গোপনে পড়িয়ে আসছেন বলে সচেতন অভিভাবক মহলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। সরেজমিন পরিদর্শণ করে দেখা জানা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদস্থ কানন বিদ্যা পীঠ, বাসস্ট্যান্ডস্থ বেবী কেয়ার হোম্স এবং দামুড়হুদা ব্রীজপাড়াস্থ নিউ লাইফ এডুকেশন স্ট্রেট প্রি-ক্যাডেট স্কুল পুরোপরি বন্ধ রয়েছে। তবে খোলা পাওয়া গেছে দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ডস্থ ফাস্ট মাল্টিমিডিয়া মডেল স্কুলটি। এ বিষয়ে ফাস্ট মাল্টিমিডিয়া মডেল স্কুলের পরিচালক মাসুম বিল্লাহ জানান, গত ১৮ মার্চ থেকে আমাদের স্কুল সম্পূর্ণরূপে বন্ধ আছে। তিনি আরও বলেন, আমি লোকমুখে শুনছি কেউ কেউ গোপনে গোপনে পড়ানো শুরু করেছে। দামুড়হুদা ব্রীজপাড়াস্থ নিউ লাইফ এডুকেশন স্ট্রেট প্রি-ক্যাডেট স্কুলের পরিচালক মাওলানা আব্দুস সাত্তার জানান, আমার প্রতিষ্ঠানটিও একইভাবে বন্ধ আছে। দামুড়হুদা বাজারপাড়াস্থ রোজ কিন্ডার গার্টেণ স্কুলের পরিচালক জহুরুল ইসলাম জানান, আমার প্রতিষ্ঠানটি ২৫ মার্চ থেকে বন্ধ আছে। তবে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনির বিষয়টি মাথায় রেখে সম্প্রতি অন লাইনের মাধ্যমে ৫ম শ্রেণির ক্লাস নেয়া হচ্ছে। প্রীতি কোচিং সেন্টারের পরিচালক ফরহাদ হোসেন মুন্না বলেছেন, মিথ্যা বলবোনা। আমি সম্প্রতি ১০ম শ্রেণির ৭ জন, ৯ম শ্রেণির ৮ জন এবং ৮ম শ্রেণির ১০ জনকে পড়াতে শুরু করেছি। এ ছাড়া খা পাড়ায় এবং মিনহাজ আর্মির বাড়িতে সম্প্রতি দু একজনকে পড়াচ্ছি। ৩ মাস ধরে কর্মহীন অবস্থায় রয়েছি। কথায় আছে বসে খেলে রাজার ভান্ডারও একদিন ফুরিয়ে যায়। আমারও তেমনই অবস্থা। এ ছাড়া কিছু লোন আছে। ওষুধ খরচ থেকে শুরু করে দুবেলা দুমুঠো খেয়ে পরে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছি। এ দিকে দামুড়হুদা বাজারপাড়ার কুরইশি নামের এক গৃহবধু সরকারি নিদের্শনা অমান্য করে নিজ বাড়িতে ৪০/৫০ জন শিশু শিক্ষার্থীদের পড়াচ্ছেন। যেখানে সামাজিক দুরত্ব কিম্বা স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছেনা বলেও অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের লক্ষে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন এলাকার সচেতন অভিভাবক মহল। এ বিষয়ে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমান জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই হোক আর যেভাবেই বলেন না কেন পড়ানোর কোন সুযোগ নেই। সরকারি নির্দেশনা সকলকে মানতে হবে। ফলে কোনভাবেই এটা করার সুযোগ নেই। তিনি অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনার সন্তানের লেখাপড়া নিয়ে খুববেশী অস্থির হওয়ার দরকার নেই। মনে রাখবেন আগে জীবন, তারপরতো লেখাপড়া। # #

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More