ত্রাণের জন্য হাহাকার : নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে বানভাসিরা
সিলেটে পানি কমলেও নেত্রকোনার পরিস্থিতি ভয়াবহ : হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত
স্টাফ রিপোর্টার: সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। তবে বৃষ্টি ও উজানের ঢল কমায় সিলেটের কিছু কিছু এলাকায় দেড় থেকে দুই ফুট পর্যন্ত পানি কমেছে। উপদ্রুত এলাকায় মানবেতর জীবন-যাপন করছে প্রায় অর্ধকোটি মানুষ। বিদ্যুত ও মোবাইল ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ায় পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। রোববার হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। দুর্গতদের উদ্ধারে সেনা, নৌ ও বিজিবির পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবীরাও নিরন্তর প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। ইতোমধ্যে লক্ষাধিক মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে। পানিবন্দীদের জন্য ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত আছে।
নেত্রকোনার বন্যা পরিস্থিতিও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। রোববার সকালে এ জেলায় পানিতে ডুবে এক কৃষক মারা গেছেন। দুর্গতদের উদ্ধারে নেত্রকোনায়ও সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। জেলায় অন্তত ৩২৪ আশ্রয় কেন্দ্রে লক্ষাধিক বানভাসি ঠাঁই নিয়েছেন। নেত্রকোনার সোমেশ্বরী, ধনু, কংস নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় নৌকা ছাড়া কেউ বের হতে পারছে না।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে রোববার দুপুর পর্যন্ত ৩৮ মিলিমিটার বৃদ্ধি পায়। পানিবন্দীরা নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার জন্য ছটফট করছে। অনাহারে কাতরাচ্ছে শিশু-কিশোরসহ সব বয়সীরা। এক সপ্তাহের বন্দীদশায় গরিব দিনমজুর শ্রেণীর ঘরে খাবার শেষ হয়ে গেছে। যাদের খাবার আছে তারাও রান্না করতে না পারায় অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন। গ্রামের হাট-বাজার তলিয়ে যাওয়ায় কোথাও খাদ্যসামগ্রী কেনার সুযোগ নেই। যেসব এলাকায় বাজার দোকান পাট রয়েছে, সেখানেও দোকানের মালামাল পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় গ্রামের কোথাও খাবারসামগ্রী পাওয়া যাচ্ছে না। বানভাসি এলাকায় এখন খাদ্য সঙ্কট তীব্র আকার ধারণ করেছে। নগরীর বিত্তবান, বিভিন্ন সংগঠনসহ বিভিন্ন পর্যায়ে ত্রাণসামগ্রী নিয়ে মানুষ বন্যাকবলিত এলাকায় যাচ্ছেন। কিন্তু তারা দুর্গম এলাকায় পৌঁছতে পারছেন না। শুক্রবার থেকে নগরীর বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে যাওয়ার পর সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক) ৩২ আশ্রয় কেন্দ্র খুলেছে। এসব আশ্রয় কেন্দ্রে খাবার বা পানীয় জলের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। সিটি কর্পোরেশন স্থানীয় কাউন্সিলরদের দেখাশোনার দায়িত্ব দিলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তাদের দেখা নেই। শুকনো খাবার সংগ্রহ করতে ব্যর্থ সিসিকও। নগরীতে আশ্রয় কেন্দ্র খুললেও সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগ কম। মীরাবাজারে কিশোরী মোহন স্কুল আশ্রয় কেন্দ্রে কয়েকজন বন্যাদুর্গত উঠেছেন। এখানেও খাদ্য সঙ্কট রয়েছে। পানীয় জলের জন্য সিটি কর্পোরেশনের একটি পানির ট্যাঙ্ক রাখা হয়েছে। একইভাবে বন্যাকবলিত এলাকাবাসীর জন্যও বিভিন্ন এলাকায় পানির ট্যাঙ্ক রাখা হয়েছে। তবে কোমর বা বুক সমান পানি ডিঙিয়ে অনেকে সেখান পর্যন্ত আসতে পারছেন না। নগরীর ৩২ আশ্রয় কেন্দ্র খোলার কথা জানালেও সেখানে কী পরিমাণ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন; তাও নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা সিসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রুহুল আলম। তিনি বলেন, ১৫০০ থেকে দুই হাজারের মতো মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। এদের দেখাশোনার জন্য স্থানীয় কাউন্সিলরদের বলা হয়েছে। তারা শুকনো খাবার ও পানীয় জলের ব্যবস্থা করছেন। কয়েকজন রান্না করা খাবার দিচ্ছেন। আশ্রয় কেন্দ্রে বিতরণের জন্য শুকনো খাবারও পাওয়া যাচ্ছে না। রুহুল আলম জানান, শুকনো খাবার সংগ্রহের জন্য নগরীর কালিঘাটের পাইকারি বাজারে লোক পাঠানো হয়েছে। সেখানে অনেক দোকান পানিতে তলিয়ে গেছে। যেসব দোকান খোলা রয়েছে, সেখানেও চিড়া-মুড়ি-গুড় পাওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থায় বিস্কুট বা অন্য যেকোন খাবার আনার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। কেবল সিলেট নগরীই নয় জেলার অধিকাংশ আশ্রয় কেন্দ্রেরও একই অবস্থা। বানভাসিরা জানান, বুধবার থেকে সিলেটে এক মাসের ব্যবধানে দ্বিতীয় দফায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এর মধ্যেও পর্যাপ্ত ত্রাণ তৎপরতা চালাতে পারেনি স্থানীয় প্রশাসন। অধিকাংশ জনপ্রতিনিধিকেও তারা সেই অর্থে পাশে পাচ্ছে না। যেখানকার খবর পাওয়া যায়, সেখানেও ত্রাণ নেই। খাবার ও বিশুদ্ধ পানি না পেয়ে দুর্গত মানুষের ক্ষোভ বাড়ছে। ঘর পানিতে ডুবে যাওয়ায় অনেকেরই মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। বিদ্যুতহীন হয়ে অনেকে দুর্বিষহ সময় কাটাচ্ছে। গভীর নলকূপ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বন্যাকবলিত পুরো এলাকায় বিশুদ্ধ পানির জন্য হাহাকার চলছে। গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার একাধিক বানভাসি মানুষ জানিয়েছেন, কোথাও কোথাও ঘরের চাল পর্যন্ত পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এ দুটি উপজেলার শতভাগ বাড়িঘর পানিতে প্লাবিত হয়েছে। অনেকে অনিরাপদ জেনেও বাড়ি ও গবাদিপশুর মায়ায় পানিবন্দী হয়েই দিন কাটাচ্ছেন। কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট উপজেলার আশ্রয় কেন্দ্রে ঠাঁই নেয়া একাধিক ব্যক্তি জানান, অনেকের ঘরে কোমর থেকে গলা সমান পানি। ফলে জীবন বাঁচাতেই আশ্রয় কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছে তারা। তবে এখানে এসেও পড়েছেন আরেক ভোগান্তিতে। স্থানের তুলনায় এসব আশ্রয় কেন্দ্রে মানুষের সংখ্যা বেশি। গবাদিপশুর সঙ্গে গাদাগাদি করে একই কক্ষে আশ্রয় নিয়ে সময় কাটাচ্ছেন। আশ্রয় কেন্দ্রে থাকার উপযোগী পর্যাপ্ত সুবিধা নেই। এমনকি খাবারও পাচ্ছে না অনেকে, ফলে খাবার না পেয়ে অভুক্ত অবস্থাতেই আছেন তারা। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বন্যাকবলিত এলাকায় নৌকার তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এতে অসহায় মানুষের কাছে খুব একটা যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এমনকি সরকারী ব্যবস্থাপনায় চালু হওয়া আশ্রয় কেন্দ্রগুলোয় খাদ্যসামগ্রী পৌঁছানো যাচ্ছে না। এছাড়া খাদ্যগুদামের আশপাশে পানি থাকায় অনেক ক্ষেত্রে সেখান থেকেও খাদ্যসামগ্রী বের করা সম্ভব হচ্ছে না। সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ আনোয়ার সাদাত জানান, জেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তবে বন্যাকবলিত এলাকায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় নৌকার সঙ্কটে এসব ত্রাণ পাঠানো কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে সর্বত্র ত্রাণ পাঠাতে চেষ্টা চলছে। তিনি আরও জানান, জেলায় মোট ৩৫০ আশ্রয় কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০০ কেন্দ্রের আশ্রয় গ্রহণকারীদের তথ্য জেলা প্রশাসনের কাছে রয়েছে। সে হিসাবে ২০০ আশ্রয় কেন্দ্রে ১৬ হাজার ৮৪৪ জন আশ্রয় নিয়েছে। সিলেট আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ চৌধুরী জানান, পূর্বের তুলনায় ১ থেকে দেড় হাত পানি কমে আসায় বাসা-বাড়িতে একটু স্বস্তি ও আশার আলো খুঁজে পাচ্ছেন বন্যাকবলিতরা। তিনি বলেন, সোমবার থেকে আকাশে মেঘের পরিমাণ কমে আসবে। বৃষ্টিপাতও তুলনামূলক কমে যাবে। সেই সঙ্গে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
নেত্রকোনার হাওড়দ্বীপ খালিয়াজুরী, কলমাকান্দা, মোহনগঞ্জ ও মদনসহ ৯ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে। শুধু দুর্গাপুরে বন্যার পানি কিছুটা কমতে শুরু করেছে। রোববার সকালে মোহনগঞ্জের রামজীবনপুর গ্রামের হাওড়ের পানিতে ডুবে রইছ উদ্দিন নামে এক কৃষক মারা গেছেন। পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী এম এল সৈকত জানান, পাহাড়ী নদী সোমেশ^রী, ধনু ও কংসের পানিবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। কলমাকান্দা পয়েন্টে সোমেশ^রীর পানি বিপদসীমার ১শ’ ১৩ সেন্টিমিটার, জারিয়া পয়েন্টে কংস নদীর পানি বিপদসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার এবং খালিয়াজুরী পয়েন্টে ধনু নদীর পানি বিপদসীমার ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। খালিয়াজুরীর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এএইচএম আরিফুল ইসলাম বলেন, ওই উপজেলার ৬ ইউনিয়নের ৭০ গ্রাম পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এসব গ্রামের বেশিরভাগ লোকের ঘরে পানি ঢোকায় সেখানে বসবাস অনিরাপদ হয়ে গেছে। বন্ধ হয়ে গেছে অনেক পরিবারের রান্নাবান্না। দুর্গত পরিবারগুলো সহায়-সম্পদ ও গবাদিপশু নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও আশ্রয় কেন্দ্র খুলতে হয়েছে। রবিবার সকাল থেকে সেখানে সেনাবাহিনীর ১৯ পদাতিক ডিভিশনের ১শ’ ৩০ সদস্য উদ্ধার তৎপরতার অংশ নেন। ওইদিন সেনা সদস্যরা ৬ স্পিডবোটের সাহায্যে যোগিমারা, শ্যামপুর, রোয়াইল, কাদিরপুর প্রভৃতি গ্রামের কিছু পরিবারকে উদ্ধার করা হয়। ইউএনও আরও জানান, খালিয়াজুরী উপজেলা সদরের বেশিরভাগ সরকারী অফিস ও অফিসার এবং কর্মচারীদের আবাসিক ভবনগুলো বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বাসার নিচতলায় কোমর পানি হয়েছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিভিন্ন অফিসের দোতলায় ও হাসপাতালের আবাসিক ভবনে রাত যাপন করে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় দায়িত্ব পালন করছেন। সেখানকার বেশিরভাগ আশ্রয় কেন্দ্রও এখন পানিবন্দী।
কলমাকান্দা, মোহনগঞ্জ, বারহাট্টা, আটপাড়া এবং মদন উপজেলার চিত্রও প্রায় একই। কলমাকান্দা উপজেলা সদরের প্রায় পুরোটাই পানিতে নিমজ্জিত। মোহনগঞ্জেও নওহাল, কাজিহাটি, দৌলতপুর, কাচারি রোড, গরুহাট্টা, মার্কাজ প্রভৃতি এলাকার বাসাবাড়িতে পানি ঢুকেছে। অনেকে বাসাবাড়ি ছেড়ে আশ্রয় কেন্দ্রে বা দূরের আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে চলে যাচ্ছেন। কলমাকান্দার চানপুর রোডের বাসিন্দা শিক্ষক ঝুলন সরকার জানান, ‘এ কয়দিন বাসায় থাকার চেষ্টা করেছি। এখন রান্নাবান্না করাই অসম্ভব হয়ে পড়েছে। বাজারের দোকানপাটগুলো বন্ধ। বিদ্যুত সরবরাহ নেই। তাই নিরুপায়ে আজ গ্রামের বাড়িতে চলে যাচ্ছি।’
জেলা বন্যা নিয়ন্ত্রণ কক্ষের পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, এ পর্যন্ত ১০ উপজেলার ৬২ ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়েছেন ১ লাখ ১ হাজার ৯৮টি পরিবারের প্রায় ৩ লাখ ৬৫ হাজার ৫শ’ ৭০ জন।
জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেছেন, রোববার বিকেল পর্যন্ত বন্যাদুর্গত এলাকায় ৮৯ মেট্রিক টন চাল, ৩ লাখ নগদ টাকা ও ১ হাজার ৩শ’ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এর বাইরে রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির পক্ষ থেকেও দুর্গত উপজেলাগুলোতে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে।
সিলেটে নিত্যপণ্যের সঙ্কট: পানিতে দোকানপাট তলিয়ে যাওয়ায় সিলেটে নিত্যপণ্যের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বেশি দামেও মিলছে না চাল-ডালসহ অন্যান্য কিছু। এলাকায় বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ থাকায় দেখা দিয়েছে মোমবাতি ও দেশলাই সঙ্কট। বহু দোকান তলিয়ে যাওয়ায় এ সঙ্কট দেখা দিয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বন্যায় বেশিরভাগ দোকান খুলছেন না দোকানিরা। অসংখ্য দোকান পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়েছে। ৩৮ টাকা হালি ডিমের দাম বেড়ে ৪৫ টাকা হয়েছে। ২০ টাকার আলু বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। দোকানে দোকানে ঘুরেও এসব পণ্য পাওয়া যাচ্ছে না।
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ: ক্যাম্পাসে পানি উঠে যাওয়ায় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা। শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. বদরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক জরুরী বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বদরুল ইসলাম জানান, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস তলিয়ে গেছে। এমন অবস্থায় ৩০ জুন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। শনিবার সকালের পর থেকে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে হাঁটু পানি দেখা দেয়। ক্যাম্পাসের আশপাশের সড়কেও একইভাবে পানি জমে থাকায় শিক্ষার্থীরা দুর্ভোগে পড়েছেন। তাই বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
ডাকাত আতঙ্ক: এমন ভয়াবহ অবস্থায় শনিবার মধ্যরাতে নগরীতে ডাকাত আতঙ্ক দেখা দেয়। ডাকাতের আক্রমণের গুজবে সয়লাব হয় সামাজিক মাধ্যম। নগরীর মহল্লায় মহল্লায় মসজিদের মাইকে ডাকাত পড়েছে মর্মে এলাকাবাসীর উদ্দেশে সতর্কবাণী প্রচার করা হয়। আতঙ্কগ্রস্ত মানুষ লাঠিসোঁটা নিয়ে রাস্তায় নেমে আসেন। কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আলী মাহমুদ জানান, খবর পেয়ে বিভিন্ন এলাকায় যাই। কেউ আতঙ্কিত হবেন না, পুলিশ মাঠে আছে। এগুলো গুজব। প্রত্যেক জায়গায় পুলিশের টহল জোরদার হয়েছে তাই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই জানিয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার গৌতম দেব বলেন, সিলেট শহরে ডাকাতি হওয়ার কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিচ্ছেন, কোথাও কোথাও মসজিদে মাইকিং করা হচ্ছে। অহেতুক গুজব না ছড়ানোর জন্য আহ্বান করছি। সিলেট মহানগর পুলিশের উত্তরের ডিসি আজবাহার আলী শেখ বলেন, আমরা খবর পেয়ে মহানগরের বিভিন্ন এলাকায় টহল জোরদার করি। এ ধরনের গুজব কাউকে না ছড়ানোর অনুরোধ জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।