স্টাফ রিপোর্টার: পদ্মা-যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে তীব্র স্রোতের সৃষ্টি হয়েছে। এতে গত কয়েক দিন ধরে দেশের ব্যস্ততম দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া রুটের ২টি ফেরি মেরামতে থাকা, ২টি অন্য রুটে সরিয়ে নেওয়া এবং ছোট ৬টি ইউটিলিটি ফেরি তীব্র স্রোতের বিপরীতে স্বাভাবিকভাবে চলতে না পারায় দৌলতদিয়া ও পাটুরিয়া ঘাট প্রান্তে আটকা পড়েছে শতাধিক যানবাহন। উভয় পাড়ে মহাসড়কে সৃষ্টি হয়েছে ৪-৫ কিলোমিটারজুড়ে যানবাহনের দীর্ঘসারি। এতে করে আটকে থাকা যানবাহনের যাত্রী ও চালকরা প্রচ- ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। আটকে থাকা পণ্যবাহী ট্রাক চালকরা ৮-১০ ঘণ্টায়ও ফেরির নাগাল পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন। সরেজমিন (১৯ জুন) রোববার দুপুরের দিকে দেখা যায়, দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে মহাসড়কের গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিস স্টেশন পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার জুড়ে যানবাহনের দীর্ঘ সারি সৃষ্টি হয়ে আছে। এর মধ্যে পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানের সংখ্যাই বেশি। এর সংখ্যা ৫ শতাধিক হবে বলে ভুক্তভোগীরা জানান। এর মধ্যে অনেকেই শনিবার মাঝ রাত থেকে দীর্ঘ যানজটে আটকে আছেন। তারা খাওয়া-দাওয়া, গোসল, টয়লেট ব্যবহার, নামাজ আদায়সহ বিভিন্ন সমস্যার কথা জানান। পাটুরিয়া প্রান্তেও একইভাবে ৪-৫ কিলোমিটার যানজটে ৫ শতাধিক বিভিন্ন যানবাহন আটকা পড়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। বেনাপোল সীমান্ত থেকে ছেড়ে আসা কাভার্ডভ্যান চালক জুনায়েদ শেখ বলেন, রোববার ভোর রাত ৩টার দিকে এসে সিরিয়ালে আটকে পড়ি। বাথরুম ও খাবার পানির সমস্যায় আছি। গাড়ি থেকে নেমে বাইরে যাওয়াটাও ঝুঁকিপূর্ণ। একই কথা বললেন ট্রাক চালক বাচ্চু, আকাশ, জুলফিকারসহ অনেকেই।
গোয়ালন্দ উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক সালমা খাতুন বলেন, তিন দিন ধরে গোয়ালন্দ পয়েন্টে পদ্মার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। শনিবার সকাল ৬টা থেকে গতকাল রোববার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় গোয়ালন্দ পয়েন্টে ৩৬ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এখানে পানির বর্তমান স্তর ৭ দশমিক ৭৪ মিটার। পদ্মার এই পয়েন্টে বিপৎসীমা ৮ দশমিক ৫০ মিটার।
এ বিষয়ে বিআইডাব্লিউটিসির আরিচা অঞ্চলের ডিজিএম মো. খালেদ নেওয়াজ বলেন, নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে তীব্র স্রােত সৃষ্টি হওয়ায় ফেরির স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। ফেরি চলাচল ধীরগতির কারণে ট্রিপ সংখ্যা কমে গেছে। তীব্র স্রোতের কারণে বহরের ছোট ৬টি ইউটিলিটি ফেরির চলাচলে খুবই সমস্যা হচ্ছে। তারপরও সার্বক্ষণিক ১৭-১৮টি ফেরি চলাচল করছে। দুটো ফেরি স্থানীয়ভাবে সংস্কারে রয়েছে।
তবে গোলাম মওলা ও বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান নামের শক্তিশালী দুইটি বড় (রো রো) ফেরিকে আরিচা-কাজিরহাট রুট চালু রাখার তাগিদে সেখানে নিয়ে যেতে হয়েছে। স্রোতের তীব্রতা কমলে পরিস্থিতি অনুকূলে আসবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।