মনজুর আলম: ঝিনাইদহে প্রথম পার্পল রাইজ বা বেগুনি রঙের ধান আবাদ করে সাড়া জাগিয়েছে হাফিজুর রহমান নামের এক কৃষক। তিনি জেলার মহেশপুর উপজেলার আজমপুর ইউনিয়নের আদমপুর গ্রামের রমিজ উদ্দিনের ছেলে ও আদমপুর হাই স্কুলের সহকারী শিক্ষক। তিনি আত্মীয়ের মাধ্যমে বীজ সংগ্রহ করে গ্রামের দোবিলা মাঠে এই ধানের আবাদ করেছেন। ইতোমধ্যে তার জমির ধানে এলাকার কৃষকদের আকৃষ্ট করেছে।
হাফিজুর রহমান জানান, গত বছর হাফ কেজি ধান (৫০০ গ্রাম) বীজ সংগ্রহ করে ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝিতে বীজতলায় চারা তৈরি করেন এবং জানুয়ারি মাসে জমি তৈরি করে ২৩ শতক জমিতে চারা লাগান। প্রতিটি গোছায় ১টি করে চারা দেন। চারা থেকে চারা আনুমানিক সাড়ে ৮ ইঞ্চি এবং লাইন ৯ ইঞ্চি দূরত্ব হিসেবে রোপণ করেন। বীজ থেকে চারা এবং রোপণের ১৪৫-১৫৫ দিনের মধ্যে এ ধান কাটার উপযোগী হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এলাকায় এ রঙের ধান নতুন। চারদিকে সবুজ ধানের ক্ষেত আর মধ্যে বেগুনি রঙের ধান দেখে লোকজনের মধ্যে বাড়তি কৌতুহল সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিনই মাঠে এ ক্ষেত দেখতে নারী-পুরুষ ভিড় করছে। বিভিন্ন জনে নানাভাবে জানতে ইচ্ছে পোষণ করছে। ক্ষেতটি প্রথম দিকে বিবর্ণ যা রোগবালাই লেগে নষ্ট হয়েছে, এমন লোকজনে ভাবতো। কিন্তু দিন যতো পার হয়েছে ধানের গাছের কান্ড ও পাতা বেগুনি রঙ ধারণ করেছে।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণের উপ-পরিচালক কৃপাংশু শেখর বিশ^াস বলেন, বেগুনী রঙের এ ধান বিদেশী জাত নয়, দেশীয় শুক্রানু প্রাণরস (জার্মপাজম) থেকে উৎপাদিত। এটা উফশী জাতের ধান। একর প্রতি ফলন অন্যান্য ধানের মতোই। সাধারণত রঙের ব্যাপারে দুই ধরনের ক্লোরফিল কাজ করে। একটি ক্লোরফিল ‘এ’ এবং অপরটি ক্লোরফিল ‘বি’। এই ক্লোরফিলের তারতম্যের কারণে বিভিন্ন ফল ও ফসলের রঙের পরিবর্তন হয়ে থাকে। ধানের বেগুনী রং হবার পেছনেও এ ক্লোরফিলের তারতম্য কাজ করেছে। আসলে এ ধানের মধ্যে নতুনত্ব বলতে কিছু নেই, পুষ্টিগুনও অন্যান্য ধানের মতোই হবে। তবে এক এক এলাকায় এই ধানের স্থানীয়ভাবে নামে পরিচিত। এই জাতের ধানগুলো ব্যাপকভাবে আবাদ না হলেও বিএডিসি ফার্মগুলোতে অনেক সময় কম বেশি চাষ করে থাকে।