ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহে দ্বিতীয় স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় মৃত্যুদ-প্রাপ্ত পলাতক আসামি শহিদুল ইসলাম ও তার প্রথম স্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত পরশু সোমবার রাত ২টার দিকে ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ এ তথ্য জানায়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন-ঝিনাইদহ সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের আব্দুল গনি বিশ্বাসের ছেলে শহিদুল ইসলাম (৫৫) ও তার প্রথম স্ত্রী চম্পা খাতুন (৪৬)। তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
জানা যায়, ঝিনাইদহ সদরের হলিধানী বাজারে খাবারের ব্যবসা করাকালে শহিদুল ইসলামের সঙ্গে মাজেদা খাতুনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর প্রথম স্ত্রীকে না জানিয়ে শহিদুল তাকে বিয়ে করেন। পরে তারা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে শহরে বাসা ভাড়া করে বসবাস করতে থাকেন। হত্যাকা-ের তিন মাস আগে মাজেদাকে নিয়ে শহিদুল রামচন্দ্রপুর গ্রামের নিজ বাড়িতে ওঠেন। এরপর থেকেই শহিদুল তার দ্বিতীয় স্ত্রী মাজেদার কাছে যৌতুক দাবি করতে থাকেন। এতে মাজেদা রাজি না হলে প্রথম স্ত্রীসহ তিনি মাজেদাকে বিভিন্ন সময় নির্যাতন করতেন। এরই জেরে ২০১২ সালের ২৩ জানুয়ারি গভীর রাতে শহিদুল তার প্রথম স্ত্রী চম্পা খাতুনকে সঙ্গে নিয়ে মাজেদার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেন। এতে তার শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে যায়। প্রতিবেশীরা মাজেদার চিৎকারে ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় স্থানীয় চৌকিদার শহীদুল ইসলাম সদর থানায় মাজেদার স্বামী শহিদুল ইসলাম ও প্রথম স্ত্রী চম্পা খাতুনকে আসামি করে মামলা করেন। সেই মামলায় তদন্ত শেষে পুলিশ ওই বছরের ৩০ এপ্রিল আদালতে চূড়ান্ত চার্জশিট দেয়। শুনানি শেষে ঝিনাইদহ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মিজানুর রহমান অভিযুক্ত দুজনকে ২০২৩ সালের ৭ মার্চ মৃত্যুদ-ের আদেশ দেন।
ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ সোহেল রানা বলেন, মৃত্যুদ-ের আদেশের পর থেকেই শহিদুল ও তার প্রথম স্ত্রী চম্পা পলাতক ছিলো। এরপর আদালতের নির্দেশে পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে গ্রেফতার করেন।