জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় বিএনপির সাথে আলোচনায় রাজি
বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে জনসভায় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু
স্টাফ রিপোর্টার: আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিএনপিসহ তাদের মিত্রদের সঙ্গে বিদ্যমান মতবিরোধ আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করতে চান। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, প্রয়োজনে জাতিসংঘের প্রতিনিধি আসুক আমরা বিএনপির সঙ্গে মুখোমুখি বসে আলোচনা করে দেখতে চাই, কিভাবে সবাই মিলে একটি অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু নির্বাচন করা যায়। সেটা আলোচনার মাধ্যমে সুরাহা হতে পারে অন্য কোনো পথে নয়। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ১৪ দলের এক জনসভায় এসব কথা বলেন আমির হোসেন আমু। বিএনপি-জামায়াতের যড়যন্ত্র এবং দেশের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ১৪ দল এ জনসভার আয়োজন করে। বিএনপির উদ্দেশে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু বলেন, সংবিধানের ভিত্তিতে দেশ চলছে। এই সংবিধানের ভিত্তিতে যে কোনো সমাধান করতে আমরা প্রস্তুত। আপনারা আসুন, গণতান্ত্রিক ধারাকে অব্যাহত রাখতে আমরা আলোচনায় রাজি আছি। আলোচনা দ্বার খোলা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। ১৪ দলের সমন্বয়ক আরও বলেন, অন্য কোনো পথে যারা চেষ্টা করবে, যারা অসাংবিধানিক উপায়ে নির্বাচনের কথা বলেন বা নির্বাচন বানচাল করতে চান-তাদের সেই যড়যন্ত্র প্রতিহত করা হবে। বর্তমান সংবিধানের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আগামী দিনে ১৪ দলের নেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সব যড়যন্ত্র মোকাবিলা করা হবে বলে হুঁশিয়ার করেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি প্রসঙ্গে আমু বলেন, আজকে যখন আবার নির্বাচন সামনে এসেছে। তখন বিএনপি বিদেশিদের কাছে ঘুরে ঘুরে সাহায্য-সহযোগিতা চাইছে। ভিসানীতি কি? বৃক্ষ তোমার নাম কি ফলে পরিচয়। এটা নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে কথা বলার সুযোগ নেই। সময় হলে দেখা যাবে ভিসানীতির ফলাফল কী। ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, শুধু প্রকৃতি নয়, দেশের রাজনীতিও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। যড়যন্ত্রের শক্তিরা এখন মাঠ গরম করতে চায়। তারা আমেরিকার ভিসানীতিতে খুশি। ‘বাংলাদেশে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ভিসানীতি অপরিহার্য ছিলো। এ ভিসানীতি আমাদের জন্য লজ্জার।’ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্য উদ্ধৃত করে রাশেদ খান মেনন বলেন, তাহলে আপনারা কোন অবস্থানে আছেন সেটা পরিষ্কার করুন। মেনন বলেন, আমি শেখ হাসিনার সঙ্গে একমত, আমাদের ২০ ঘণ্টা বিমানে চড়ে আমেরিকা যাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। আমাদের আরও অনেক বন্ধু দেশ রয়েছে। এই ভিসানীতি দুরভিসন্ধিমূলক। তারা শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চায়। এজন্য তারা এ ধরনের দুরভিসন্ধি আঁটছে। আমাদের দেশের গণতন্ত্র, সার্বভৌমত্ব রক্ষা, যড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে কাজ করে যেতে হচ্ছে। যড়যন্ত্রকে আমরা মোকাবিলা করব। বিএনপির যদি সাহস থাকে তবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রমাণ করুক গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, বিএনপি-জামায়াত চক্র নির্বাচনের আগে ক্ষমতার অদল-বদল করতে চাচ্ছে। তিনি বিএনপিকে উদ্দেশ করে বলেন, হয় নির্বাচনে আসবেন নতুবা কলার ভেলায় করে সাগরে ভাসিয়ে দেব। ইনু বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য ও বিদ্যুৎ সংকট নিয়ে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। সরকারকে এর সমাধান করতে হবে। বিএনপির কাছে কোনো জাদুর কাঠি নেই। একমাত্র সরকারকেই শাসনতন্ত্র দিয়ে বাজার সিন্ডিকেটকে ধ্বংস করে দিতে হবে। সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রভাবিত করার জন্য বিদেশিরা নানা কৌশল গ্রহণ করছে। আর তাদের সাহায্য করছে আমাদের দেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধীরা। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সরকার ও জনগণের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। জনসভায় আরও বক্তৃতা করেন, আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ও অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার প্রমুখ।