স্টাফ রিপোর্টার: যশোরের বেনাপোল থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনটি রাজধানীতে ঢোকার মুখেই একটি বগিতে আগুন জ্বলে ওঠে। এ আগুনের বেগ বেড়ে ট্রেনের পাওয়ারকারসহ আরও একটি বগিতে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় শরীরে ধরে যাওয়া আগুন নিয়ে বগির জানালা দিয়ে দুই হাতসহ মাথা বের করেছিলেন এক যাত্রী। তাকে আশপাশের লোকজন বাঁচাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বগির ভেতরে আগুনে পুড়ে মরেছেন তার স্ত্রী সন্তান, তাই তিনিও আর বের হবেন না। কান্নাজড়িত কণ্ঠে এ কথা বলতে বলতে অঙ্গার হলেন ওই যুবক। তাকে বের করতে ব্যর্থ হন স্থানীয়রাও। আগুনে পুড়ে যাওয়ার দৃশ্যটি অসহায় চোখে তাকিয়ে দেখছিলেন হাজারো মানুষ। গতকাল শুক্রবার রাত ৯টার দিকে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে এ অগ্নিকা- ঘটে। এখন পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা চারজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে। ঘটনাস্থলে থাকা এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, জানালায় যিনি ঝুলে ছিলেন তিনি মারা গেছেন। তাকে আমরা বের করার অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু তার স্ত্রী ও সন্তান মারা যাওয়ায় আর বের হতে চাচ্ছিলেন না। উনি তখন অর্ধেক জ্বলে গেছেন। তিনি বলছিলেন, আমার স্ত্রী-সন্তান মারা গেছে, আমি বের হবো না। আমরা আর তাকে বের করতে পারিনি। এ প্রত্যক্ষদর্শী আরও বলেন, আমরা প্রথম যখন ট্রেনের একটি বগিতে আগুন দেখি, তখন বেনাপোল থেকে সায়দাবাদ হয়ে আসছিল। তখন আগুন কম ছিলো। আমরা চিৎকার করে বলছিলাম, তখন তার সামনের বগি থেকে বলছিল দুষ্টুমি করছি কেন। আমরা বললাম দুষ্টুমি না আসলেই আগুন ধরেছে। ভালো করে দেখেন। আমরা দৌড়ে আসতে আসতে আগুন বেড়ে যায়। দু-তিনজনকে বের করতে পেরেছি। আগুন আরও ছড়িয়ে পড়ে। ধোঁয়ার কারণে আমরা ভেতরে ঢুকতে পারিনি। আমরা সরে গেছি। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দিলে ফায়ার সার্ভিস পাঠানো হয়। এদিকে ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার রাকিবুল হাসান জানান, আগুনটি একটি বগি থেকে আরও তিনটি বগিতে ছড়িয়ে পড়ে। এর আগে, ১৯ ডিসেম্বর ঢাকাগামী ‘মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস’ ট্রেনে আগুন দেয় নাশকতাকারীরা। ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে সৈনিক ক্লাব-প্রায় দুই কিলোমিটারের দূরত্বের মধ্যেই আগুন দেয়া হয় ট্রেনটিতে। পরে একটি বগি থেকে মা-ছেলেসহ চার জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তারা হলেন-নাদিরা আক্তার পপি (৩৫) ও তার ছেলে ইয়াসিন (৩), রশিদ ঢালী ও খোকন।
পূর্ববর্তী পোস্ট
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.