স্টাফ রিপোর্টার: বাংলা সাহিত্যের খ্যাতিমান কথাসাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার আর নেই। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় বেসরকারি অ্যাপোলো হাসপাতালে মারা যান তিনি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেছে, তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। বেশ কিছু দিন ধরে তিনি অসুস্থ ছিলেন। গত ২৫ এপ্রিল মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হলে সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কারজয়ী সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদারকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর তার শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকে। সমরেশ মজুমদারের প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক শোকবার্তায় মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘সমরেশ মজুমদারের প্রয়াণে সাহিত্য জগতের এক অপূরণীয় ক্ষতি হলো।’ এদিকে সমরেশ মজুমদারের প্রয়াণ উপলক্ষে কোনো আচার-অনুষ্ঠান হবে না বলে জানিয়েছেন তার মেয়ে দোয়েল মজুমদার। শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে কলকাতার নিমতলা মহাশ্মশানে। দোয়েল মজুমদার বলেন, ‘রবীন্দ্র সদনে তার মৃতদেহ থাকবে না। আজ (মঙ্গলবার) সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত কলকাতার ৬৪-বি, শ্যামপুকুর স্ট্রিটের বাড়িতেই মরদেহ শায়িত থাকবে। বাবা চাইতেন না বলে তাই কোনো আচার-অনুষ্ঠান হবে না। দুপুরে নিমতলা মহাশ্মশানে শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হবে।’ ১৯৬৭ সালে দেশ পত্রিকায় ‘দৌড়’ প্রকাশিত হওয়ার পর ‘কালবেলা’, ‘কালপুরুষ’, ‘উত্তরাধিকার’ লিখেন সমরেশ মজুমদার। এ ছাড়া ‘সাতকাহন’, ‘গর্ভধারিণী’, ‘অর্জুন’, ‘মেজরের অ্যাডভেঞ্চার’সহ অনেক পাঠকপ্রিয় উপন্যাস লিখেছেন তিনি, পেয়েছেন অনেক সম্মাননা। চিত্রনাট্যকার হিসেবে বিএফজেএ, দিশারী এবং চলচ্চিত্র প্রসার সমিতির পদকও রয়েছে তার। পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২০১৮ সালে সমরেশ মজুমদারকে ‘বঙ্গবিভূষণ’ সম্মান প্রদান করে। এছাড়া তিনি সাহিত্য আকাদেমি অ্যাওয়ার্ড, আনন্দ পুরস্কার, বিএফজেএ পুরস্কারসহ অনেক পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন। সমরেশ মজুমদারের জন্ম ১৯৪৪ সালের ১০ মার্চ, জলপাইগুড়ির চা বাগান ঘেরা ডুয়ার্সে। তার স্কুলজীবন কেটেছে জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলে। পরে কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে বাংলায় স্নাতক ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর করেন।