গণসমাবেশে বিএনপির ১০ দফা ঘোষণাসহ যুগপৎ আন্দোলন : সাত এমপির পদত্যাগ
নানা নাটকীয়তা উৎকণ্ঠার পর শান্তিপূর্ণভাবে গোলাপবাগ মাঠে ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ
স্টাফ রিপোর্টার: নানা নাটকীয়তা, উৎকণ্ঠার পর শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ। গতকাল শনিবার রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে দলটির সবশেষ বিভাগীয় এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে ১০ দফা দাবিতে সমমনা ও সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। ২৪ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে এ আন্দোলন। ওইদিন ঢাকাসহ সব মহানগর ও জেলায় হবে গণমিছিল। এছাড়া দলের নেতাকর্মী গ্রেফতার ও হত্যার প্রতিবাদে ১৩ ডিসেম্বর সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি। সমাবেশে প্রধান অতিথি দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ১০ দফা ও নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন। সেখানে উপস্থিত হয়ে সংসদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন দলীয় সাত সংসদ-সদস্য। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও দলের স্থায়ী কমিটির পক্ষ থেকে ১০ দফা উপস্থাপন করার কথা জানান ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, সমমনার পাশাপাশি সরকারবিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের সঙ্গে এ ১০ দফা নিয়ে আলোচনা করেছি। এ ১০ দফা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দফা। এটা জনগণের দাবি। আমরা আশা করি, এ দাবির সঙ্গে সবাই একাত্মতা ঘোষণা করবেন। ২৪ ডিসেম্বর ১০ দফার ভিত্তিতে সারা দেশে গণমিছিল হবে। এটা হবে সমমনা দলগুলোকে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনের প্রথম কর্মসূচি। আগামীতে এ ১০ দফা আদায়ের লক্ষ্যে প্রতিটি কর্মসূচি আমরা যুগপৎভাবে পালন করবো। সরকার বিদায়ে জনগণ ধৈর্যসহকারে এ কর্মসূচি এগিয়ে নিয়ে যাবেন-এমন আশা করে মোশাররফ বলেন-স্বৈরাচার, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারকে জনগণ আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। শেখ হাসিনাকে যত দ্রুত সম্ভব পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে দিতে হবে। কর্মসূচি ঘোষণাকালে উপস্থিত নেতাকর্মীরা হরতাল-অবরোধসহ কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচির দাবিতে সেøাগান দেন। এ সময় মোশাররফ বলেন, আপনারা যে কর্মসূচি চাচ্ছেন সেগুলোও সময়মতো ঘোষণা করা হবে।
এদিকে গণসমাবেশ থেকে সরকার পতনে বিএনপির ঘোষিত ১০ দফা দাবি ও কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে সমমনা ও সরকারবিরোধী কয়েকটি রাজনৈতিক দল। তবে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতে ইসলামী অনেকটা কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে। বিএনপির ঘোষিত দফা ও কর্মসূচির প্রতি সরাসরি তারা সমর্থন জানায়নি। তবে দলীয়ভাবে ১০ দফা ও ২৪ ডিসেম্বর সারা দেশে গণমিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
জ্বালানি তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি, দলীয় কর্মসূচিতে নেতাকর্মী নিহত হওয়ার প্রতিবাদসহ কয়েকটি দাবিতে ১০ বিভাগীয় শহরে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি। ১২ অক্টোবর চট্টগ্রাম বিভাগে গণসমাবেশের মধ্যদিয়ে এ কর্মসূচি শুরু হয়। সবশেষ ঢাকার গণসমাবেশ দিয়ে তা শেষ হলো। এসব কর্মসূচি পালনে নানাভাবে বাধার মুখে পড়েন নেতাকর্মীরা। সব বাধা উপেক্ষা করে প্রতিটি সমাবেশেই উপচে পড়া ভিড় ছিল।
গতকাল শনিবার সকাল সোয়া ১০টায় কুরআন তেলওয়াতের মধ্যদিয়ে ঢাকার গণসমাবেশের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। শেষ হয় বিকেল সাড়ে ৪টায়। গণসমাবেশকে ঘিরে সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক পুলিশ, র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্কবস্থায় দেখা যায়। সাঁজোয়া যান, জলকামান, প্রিজন ভ্যানসহ বিভিন্ন যান রাখা ছিল বিভিন্ন সড়কের মোড়ে। সমাবেশকে কেন্দ্র করে পরিবহণ ধর্মঘট ঘোষণা করা না হলেও সকাল থেকে রাজধানীর সড়কে কোনো গণপরিবহণ দেখা যায়নি। ব্যক্তিগত যানও ছিল কম। শহরের বিভিন্ন মোড়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সতর্কাবস্থান লক্ষ্য করা যায়।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু ও উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য দেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, বরকতউল্লাহ বুলু, এজেডএম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আজম খান, কেন্দ্রীয় নেতা ফরহাদ হালিম ডোনার, মাহবুব উদ্দিন খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জয়নাল আবেদীন, আবদুস সালাম আজাদ, নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীম, তাবিথ আউয়াল, সালাহউদ্দিন আহমেদ, কায়সার কামাল, মীর সরাফত আলী সপু, শিরিন সুলতানা, আবুল কালাম আজাদ, বেনজীর আহমেদ টিটু, দেওয়ান মো. সালাউদ্দিন, ডা. রফিকুল ইসলাম, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, নজরুল ইসলাম আজাদ, কাজী আবুল বাশার, আশরাফ উদ্দিন বকুল, হুমায়ুন কবির খান, সাইফুল আলম নিরব, ইশরাক হোসেন, ওমর ফারুক শাফিন, আকরামুল হাসান, হাবিবুর রশিদ হাবিব, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরী, নরসিংদীর সদস্য সচিব মঞ্জুর এলাহী প্রমুখ। এছাড়া অঙ্গসংগঠনের মধ্যে মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, যুবদলের মামুন হাসান, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানি, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসাইন, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, তাঁতী দলের কাজী মনিরুজ্জামান, মৎস্যজীবী দলের আবদুর রহিম, উলামা দলের মাওলানা আবুল হোসেন, ছাত্রদলের কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ। সম্প্রতি হামলায় মারা যাওয়া সাবেক সংসদ-সদস্য শাজাহান খানের ছেলে শিপুল খান, গুম হওয়া সাজেদুল ইসলাম সুমনের বোন সানজিদা ইসলাম তুলিও এদিন বক্তব্য দেন। সমাবেশে সিনিয়র নেতা ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, আবদুল আউয়াল মিন্টু, শামসুজ্জামান দুদু, নিতাই রায় চৌধুরী, মিজানুর রহমান মিনু, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, জয়নুল আবদিন ফারুক, ভিপি জয়নাল আবেদীন, তাজমেরী এসএ ইসলাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, এসএম ফজলুল হক, মজিবুর রহমান সারোয়ার, হাবিব উন নবী খান সোহেলসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সরকারের দমন-পীড়ন ও গণবিরোধী কার্যক্রম তুলে ধরে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, অতীতে ৯টি সমাবেশ করেছি সেগুলোতে সরকার বাধার সৃষ্টি করেছে। সবশেষ পল্টনে বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করেছে। কিন্তু সরকারের এত বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও মানুষ নদী সাঁতরিয়ে, ভেলাতে পার হয়ে, সাইকেলে, হেঁটে তারা ওইসব সমাবেশ সফল করেছে। আজও (শনিবার) সরকার এই সমাবেশে বাধা দিতে চেয়েছিল। কিন্তু ঢাকা বিভাগের সাধারণ মানুষ এই সমাবেশে অংশ নিয়ে সরকারের রক্তচক্ষুর জবাব দিয়েছে। জনগণ বার্তা দিয়েছে যারা গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে, তাদের নিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। তারা এ সরকারকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না, অনতিবিলম্বে এ সরকারের বিদায় দেখতে চায়।
তিনি বলেন, সরকার জনবিচ্ছিন্ন বলেই বিএনপির সমাবেশকে ভয় পায়। তারা বিএনপিকে কোনো সমাবেশ করতে দিতে চায় না। এরা গণতন্ত্র চায় না। স্বাধীনতার পর এই আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র হত্যা করে বাকশাল কায়েম করেছিল। এখন আবারও অলিখিত বাকশাল কায়েম করা হয়েছে। ফলে যারাই আজ গণতন্ত্র চায়, ভোটের অধিকারের কথা বলে তাদের ভয় পায়।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, শেখ হাসিনা ও তার সরকার এই সমাবেশ বানচাল করতে অনেক ষড়যন্ত্র করেছে। যানবাহন বন্ধ করেছে, জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করেছে। আর তারা (সরকার) বলে নয়াপল্টনের সড়কে যদি বিএনপিকে সমাবেশ করতে দেওয়া হয় তাহলে নাকি জনদুর্ভোগ হবে। অথচ ৫ দিন ধরে পল্টনের রাস্তা দিয়ে মানুষ যেতে দেয় না, গাড়ি চলে না, দোকানপাট, বিপণিবিতান, মার্কেট বন্ধ।
সিইসিকে উদ্দেশ করে গয়েশ্বর বলেন, এখনো সময় আছে আপনি মানে মানে কেটে পড়েন। রাষ্ট্রপতিকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনি মন্ত্রিসভা ভেঙে দিয়ে নতুন একটি নির্বাচন দিন। দেশের বিশিষ্টজনদের ডেকে নির্বাচনকালীন একটি নিরপেক্ষ সরকার গঠন করুন।
ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, সরকার মিথ্যা মামলা-হামলা, গুম-খুন, হুমকি-ধমকি দিয়ে এ দেশের মানুষকে দমন করে রাখতে চায়। কিন্তু ইতিহাসের শিক্ষা প্রমাণ করে যে, পৃথিবীর কোথাও কোনো স্বৈরাচারী সরকার জোর করে ক্ষমতায় থাকতে পারে না।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, অনেকে সমাবেশের কয়েক দিন আগে এসেছেন। অনেক কষ্ট করেছেন। দেশকে ভালোবেসে তারা এসেছেন, তাতে কারও কোনো যন্ত্রণা নেই। বুকের রক্ত দিয়ে হলেও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনব।
ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, এতো বাধার পরও সমাবেশে মানুষের ঢল নেমেছে। প্রমাণ হয়েছে, যত গুলি করেন, কোনো গুলি মানুষের কাছে গুলি না। দশটা সমাবেশের মধ্যদিয়ে আমরা ওয়ার্মআপ করেছি। এরপর থেকে শুরু হবে রাজপথে মিছিল, সংগ্রাম।
১০ দফা দাবি ও কর্মসূচিতে বিভিন্ন দলের সমর্থন : দীর্ঘদিন পর জামায়াতের প্রকাশ্য কর্মসূচি ঘোষণা : এদিকে বিএনপি ঘোষিত ১০ দফা দাবি ও কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে সমমনা বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল। শনিবার বিবৃতির মাধ্যমে তারা এ সমর্থন জানায়। এদের বেশিরভাগই ২০ দলীয় জোটের শরিক। দলগুলো হলো-বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর), এনপিপি, বাংলাদেশ জাতীয় দল, জাগপার একাংশ, বাংলাদেশ এলডিপি, ইসলামী ঐক্য জোট, এনডিপি, ন্যাপ-ভাসানী, মুসলিক লীগ, জমিয়াতে ওলামা ইসলাম, বাংলাদেশ লেবার পার্টি ও এবি পার্টি।
এদিকে ২০ দলীয় জোটের শরিক জামায়াতে ইসলামী বিএনপি ঘোষিত ১০ দফা দাবি ও কর্মসূচির প্রতি সরাসরি সমর্থন জানায়নি। তারা দলীয়ভাবে ১০ দফা দাবি ও নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে। দেশব্যাপী যুগপৎ গণআন্দোলন গড়ে তোলার জন্য শনিবার রাজধানীর একটি মিলনায়তনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও জনগণের ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে এ ১০ দফা দাবি ঘোষণা করা হয়েছে বলে দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়। একইসঙ্গে এ দাবি আদায়ে ২৪ ডিসেম্বর রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভাগীয় শহর ও জেলায় জেলায় গণমিছিল করবে দলটি।
তবে সাত দল নিয়ে গঠিত গণতন্ত্র মঞ্চ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এ দফা ও কর্মসূচিতে সমর্থন জানায়নি। তারা আলোচনা করে দ্রুতই সিদ্ধান্ত জানাবে। এ প্রসঙ্গে গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, শত বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে বিএনপির গণসমাবেশে যোগ দেওয়ায় জনগণকে ধন্যবাদ জানাই। এতে প্রমাণ হয় সরকারকে আর এক মুহূর্তও চায় না জনগণ। মানুষ ভোটাধিকার চায়। একই সঙ্গে প্রশাসন ও রাষ্ট্র সংস্কার চায়। একটি গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণ করতে চায়। সেই লড়াইয়ে সবাইকে যুগপৎভাবে অংশ নিতে হবে। এটাকে এখন বাস্তব রূপ দিতে হবে।
এমপিদের পদত্যাগের ঘোষণা: একাদশ জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির সংসদ-সদস্যরা। গোলাপবাগ মাঠে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশে দলের সাতজন সংসদ-সদস্যই পদত্যাগের ঘোষণা দেন। সমাবেশে বগুড়া-৬ আসন থেকে নির্বাচিত বিএনপির সংসদ-সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ প্রথম পদত্যাগের ঘোষণা দেন। এরপর অন্য সংসদ-সদস্যরা একে একে পদত্যাগের কথা জানান। দেশের বাইরে থাকায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের মো. হারুনুর রশীদের পক্ষে গোলাম মোহাম্মদ পদত্যাগের কথা জানান।
সংসদ-সদস্য রুমিন ফারহানা বলেন, আমরা সাতজন এমপি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পদত্যাগ করেছি। এ সরকারের অবৈধ পার্লামেন্টে আমরা আর থাকতে পারি না। আমাদের একজন হারুন অর রশীদ ৭ বার এমপি ছিলেন। বিদেশে থাকায় এ সমাবেশে নেই। উনি পদত্যাগপত্রে সই করে গেছেন। উনি আপনাদের সবার কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন, দলের সব কর্মকা-ের সঙ্গে আছেন। তিনি আরও বলেন, আমাদের সবার পদত্যাগপত্র অলরেডি ই-মেইলে (স্পিকারের কাছে) পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল (রোববার) হাতে হাতে সংসদে পৌঁছে দেব।
পদত্যাগের কারণ জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা দলের সিদ্ধান্তে সংসদে যোগ দিয়েছিলাম। আমরা চেয়েছিলাম যেটুকু স্পেস আছে, সেটুকুকে কাজে লাগাতে। তারপরেও তারা আমাদের বক্তব্য দিতে দেয়নি, মাইক বন্ধ করে দিয়েছে। এখন এই সংসদে থাকা আর না থাকা সমান কথা।
বিএনপির সাতজন সংসদ-সদস্য হলেন-উকিল আব্দুস সাত্তার (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২), হারুন অর রশীদ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩), জিএম সিরাজ (বগুড়া-৭), আমিনুল ইসলাম (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২), জাহিদুর রহমান (ঠাকুরগাঁও-৩), মোশাররফ হোসেন (বগুড়া-৪) ও রুমিন ফারহানা (সংরক্ষিত নারী আসন)।