স্টাফ রিপোর্টার: সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাজা বাতিল করে তাকে মুক্তি দিয়ে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা গ্রহণের আদেশ দিতে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদের কাছে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের একাংশের করা আবেদন নিষ্পত্তির জন্য আবেদন করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের ১১জন আইনজীবী স্বাক্ষরিত রাষ্ট্রপতির নিকট প্রেরিত আবেদনপত্রটি সংবিধানের ৪৮(৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মানবিক দিক বিবেচনায় নিষ্পত্তির জন্য পাঠানো হয়।
গতকাল শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মির্জা আল মাহমুদ ও অ্যাডভোকেট এসএম জুলফিকার আলী জুনু বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে গত ২৩ নভেম্বর রাষ্ট্রপতির কাছে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাজা বাতিল করে তাকে মুক্তি দিয়ে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা গ্রহণের আদেশ দিতে আবেদন করেছিলেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের একাংশ। তাদের মধ্যে ১১ জন ওই আবেদনে স্বাক্ষর করেছিলেন।
ওই আবেদনে বলা হয়, ‘রাষ্ট্রপতি হিসেবে সাবেক একজন প্রধানমন্ত্রীকে নিঃশর্ত মুক্তি দিয়ে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা গ্রহণের আদেশ দেয়ার ক্ষমতা আপনার আছে। যে ক্ষমতা সংবিধান আপনাকে দিয়েছে। দেশের একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জীবন রক্ষায় সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ প্রয়োগ করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাজা বাতিল করে বিদেশে গিয়ে উন্নত চিকিৎসা গ্রহণ করে বাঁচার সুযোগ দিন।’
আইনজীবীরা বলেন, সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ হলো ক্ষমা প্রদর্শনের অধিকার। কোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত যে কোনো দ-ের মার্জনা, বিলম্বন ও বিরাম মঞ্জুর করার এবং যে কোনো দ- মওকুফ, স্থগিত বা হ্রাস করার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির আছে।
খালেদা জিয়ার সাজা নিঃশর্তে বাতিল করে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে তাকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দেয়ার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করা আইনজীবীরা হলেন- জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম থেকে বহিষ্কৃত অ্যাডভোকেট মির্জা আল মাহমুদ, অ্যাডভোকেট এসএম জুলফিকার আলী জুনু, অ্যাডভোকেট ড. মো. হামিদুর রহমান রাশেদ, অ্যাডভোকেট আকবর হোসেন, অ্যাডভোকেট মুহিত জোবায়ের, অ্যাডভোকেট নাজমুল হাসান, অ্যাডভোকেট হেমায়েত উদ্দীন বাদশা, অ্যাডভোকেট শওকতুল হক, অ্যাডভোকেট ওবায়দুল হাসান, অ্যাডভোকেট এমাদুল হক এবং অ্যাডভোকেট মোস্তাক আহমেদ।
বৃহস্পতিবারের আবেদনে বলা হয়েছে, মহামান্য রাষ্ট্রপতি আপনি রাষ্ট্রের অভিভাবক, সংবিধান আপনাকে এই ক্ষমতা দিয়েছে। অতএব রাষ্ট্রের সাংবিধানিক অভিভাবক হিসেবে দেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাজা বাতিল/স্থগিত করার এখতিয়ার সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আপনার এখতিয়ার।
তাই সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবী হিসেবে তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাজা বাতিল/স্থগিতপূর্বক তার জীবন সুরক্ষা অধিকারের সাংবিধানিক সুযোগ দিতে সুপ্রিম কোর্টের ১১ আইনজীবী বিগত গত ২৩ নভেম্বর তারিখের আপনার নিকট আবেদনক্রমে অনুরোধ করেছিলাম।
মহামান্য রাষ্ট্রপতি আপনার নিকট আমাদের আকুল আবেদন, যেহেতু সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া মারাত্মক অসুস্থ এবং জরুরি ভিত্তিতে বিদেশে চিকিৎসা প্রয়োজন। অতএব বেগম খালেদা জিয়ার জীবন রক্ষার্থে সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বিগত ২৩ নভেম্বর তারিখের ১১ আইনজীবী কর্তৃক প্রেরিত আবেদনপত্রটি অনতিবিলম্বে সংবিধানের ৪৮(৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নিষ্পত্তি করার জন্য বিশেষভাবে মর্জি হয়। জাতীয় স্বার্থের বিষয়টি অতীব জরুরি।
এছাড়া মানবিক কারণে চিকিৎসার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের অপর একটি প্রতিনিধি দল।
গত ২৩ নভেম্বর সচিবালয়ে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্যসহ ১৫ জন বিএনপিপন্থী আইনজীবী মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে এই স্মারকলিপি দেন।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ