করোনা পরীক্ষায় বেসরকারি পর্যায়ে সর্বোচ্চ ফি হতে পারে দুই হাজার টাকা

স্টাফ রিপোর্টার: করোনাভাইরাস শনাক্তে বেসরকারি পর্যায়ে আরটি-পিসিআর (রিয়েল টাইম-পলিমার চেইন রিঅ্যাকশন) পরীক্ষার মূল্য পুনঃনির্ধারণের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায় থেকে। তবে দুই পর্যায়ের প্রস্তাবিত মূল্যের মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে। কিট-রিএজেন্টের দাম কমায় কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় পরামর্শক কমিটি প্রস্তাব: পরীক্ষার মূল্য ১৫০০-২০০০ টাকা করা হোক। অন্যদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতর প্রস্তাব দিয়েছে সাধারণ এবং বিদেশগামী পর্যায়ে যথাক্রমে ৩০০০ ও ২৫০০ টাকা। এছাড়া বাড়িতে গিয়ে ৩৭০০ টাকা। তবে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০২০ সালের পরিপ্রেক্ষিতে ৩৫০০ টাকা ঠিক ছিলো। তবে বর্তমান সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে কোভিড-১৯ পরীক্ষার মূল্য সর্বোচ্চ ২০০০ টাকা হতে পারে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০২০ সালের শুরুর দিকে যখন দেশে করোনাভাইরাস দেখা দিয়েছিলো তখন একটি পিসিআর পরীক্ষা করাতে কিট-রিএজেন্টসহ আনুষঙ্গিক ব্যয় ছিলো ২৭০০ টাকা। এর সঙ্গে বিদ্যুৎ বিল, স্টাফ বেতন ইত্যাদি মিলিয়ে ৩৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিলো। বর্তমানে কিট-রিএজেন্টসহ আনুষঙ্গিক ব্যয় কমে দাঁড়িয়েছে ৭০০ টাকা। এই পরিস্থিতিতে আরটি-পিসিআর পরীক্ষার মূল্য সর্বোচ্চ ২০০০ টাকা হতে পারে।
সূত্র জানায়, এর আগেও একবার বেসরকারি পর্যায়ে আরটি-পিসিআর পরীক্ষার ফি কমাতে প্রস্তাব দেয়া হয়েছিলো অধিদফতরের পক্ষ থেকে। তবে অজ্ঞাত কারণে সেই প্রস্তাব বাস্তবায়ন হয়নি। মূলত বেসরকারি পর্যায়ের ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক মালিকদের চাপের কারণেই আগেরবার দাম কমানো সম্ভব হয়নি। তবে এবার সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে পরীক্ষার ফি কমানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাই এবার দাম কমবে বলেই মনে করছেন তারা। স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ) ডা. মো. ফরিদ হোসেন মিঞা গত ২৬ এপ্রিল এ সংক্রান্ত চিঠি মন্ত্রণালয়ে পাঠান। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবকে পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেকের উপস্থিতিতে একটি অনলাইন সভা অনুষ্ঠিত হয়। অধিদফতরের মহাপরিচালকের সভাপতিত্বে সভায় আরটি-পিসিআরের সঙ্গে সম্পৃক্ত সকল পর্যায়ের স্টেকহোল্ডাররা উপস্থিত ছিলেন। ওই অনলাইন সভায় সংযুক্ত সবার মতামতের ভিত্তিতেই বেসরকারি পর্যায়ে আরটি-পিসিআর পরীক্ষার মূল্য পুননির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। তিনি ওই চিঠিতে অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে তিন ধরনের পরীক্ষার মূল্য পুননির্ধারণের প্রস্তাব করেছেন। ১. সাধারণ জনগণের ক্ষেত্রে পিসিআর পরীক্ষায় বর্তমানে ব্যয় করতে হয় সাড়ে তিন হাজার টাকা; এখানে প্রস্তাবিত মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে তিন হাজার টাকা। বিদেশগামীদের পরীক্ষায় বর্তমানে মূল্য রয়েছে তিন হাজার টাকা; প্রস্তাবিত মূল্য আড়াই হাজার টাকা। এ ছাড়া বাড়ি গিয়ে নমুনা পরীক্ষার ক্ষেত্রে বর্তমানে সেবামূল্য রয়েছে সাড়ে চার হাজার টাকা; প্রস্তাবিত মূল্য করা হয়েছে তিন হাজার ৭০০ টাকা।
এদিকে করোনা নির্ণয় পরীক্ষার মূল্য কমাতে সুপারিশ করেছে করোনা সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। বুধবার গভীর রাতে এক সভায় কমিটি এ সুপারিশ করে। কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. শহিদুল্লা জানান, কোভিড পরীক্ষায় প্রয়োজনীয় কিটের দাম ৩০০০/২৭০০ টাকা থেকে কমে ৮০০-১০০০ টাকায় নেমে এসেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বেসরকারি পর্যায়ে পরীক্ষার সংখ্যা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করে মূল্য পুননির্ধারণের বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দেয় তারা। এক্ষেত্রে বেসরকারি পর্যায়ে পরীক্ষার মূল্য ১৫০০-২০০০ টাকার মধ্যে নির্ধারণের পরামর্শ দেয় পরামর্শক কমিটি।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More