স্টাফ রিপোর্টার: সরকারি সিদ্ধান্ত হলেও জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন (এনআইডি) কার্যক্রমের পুরো প্রক্রিয়া নির্বাচন কমিশন থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আসতে সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বৃহস্পতিবার ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে সভা শেষে সাংবাদিকের তিনি এ তথ্য জানান। এ সময় তিনি করোনা সংক্রমণ রোধে ঈদে সবাইকে অনলাইনে কেনাকাটা করার আহ্বানও জানান। তিনি বলেন, কোভিড পরিস্থিতির ওপর লক্ষ্য রেখে পরে যদি কোনো ব্যবস্থা নিতে হয় সেজন্য এবার আগেই সভা করেছি। ঈদের বন্ধে সারা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ও নিরাপত্তা জোরদারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চুরি, ডাকাতিসহ ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধে গোয়েন্দা নজরদারিসহ পুলিশ-র্যাবের টহল বাড়ানো হবে। স্থায়ী ও অস্থায়ী পশুর হাটে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, করোনা সংক্রমণ বিবেচনায় অনলাইন কেনাকাটায় উৎসাহ দেয়া হবে। অস্থায়ী পশুর হাটে পুলিশ ক্যাম্প বসানো হবে। পশুর হাটে জালনোট শনাক্তকরণ মেশিন ও অজ্ঞান ও মলম পার্টি যাতে না আসতে পারে সে ব্যবস্থা করা হবে। ঈদে ব্যবসায়ীদের টাকা পরিবহণে পুলিশ সহযোগিতা করবে। যানজন নিরসনে আনসার মোতায়েন ও যানজটপ্রবণ স্থানে ওয়াচ টাওয়ার থাকবে। তিনি বলেন, যেসব জায়গায় বেশি যানজট হয় যেমন- টঙ্গী থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা রাস্তা এবং যমুনা সেতু এলাকায় যানজট কমাতে সড়ক পরিবহণ বিভাগকে অনুরোধ করা হয়েছে। কোরবানির পশু পরিবহণের ট্রাক ও নৌযানে চাঁদাবাজি বন্ধে নজরদারি থাকবে। পশু বোঝাই যান জোরপূর্বক যে কোনো জায়গায় থামানো যাবে না। শিল্প এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, নাশকতা বন্ধে গোয়েন্দা বাহিনী সজাগ থাকবে। ফেরিঘাটে যাতে যানজট না হয় সে প্রস্তুতি নেয়া হবে। নৌযানে অতিরিক্ত যাত্রী নেয়া যাবে না। চামড়া কেনাবেচনার সিন্ডিকেট রোধে ঈদের আগে চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দেয়া হবে। চামড়া পাচার রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নেবে। ঈদের সময় নিত্যপণের মূল্য বাড়ানো বন্ধ করতে বা ভেজাল রোধে ভ্রাম্যমাণ আদালত থাকবে। ঈদের সময় সড়ক, মহাসড়কসহ যে কোনো জায়গায় দুর্ঘটনা বন্ধে ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স, কুইক রেন্সপন্স টিম প্রস্তুত থাকবে।
মন্ত্রী বলেন, গার্মেন্টসহ সব শিল্প-কারখানার বেতন নির্দিষ্ট সময় দেওয়ার জন্য বিজিএমইএ, বিকেএমইএসহ সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানানো হয়েছে। তারাও নিশ্চয়তা দিয়েছেন সময়মতো শ্রমিকদের বেতন দেবেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নিরাপত্তা বাহিনী নয়, লকডাউন বাস্তবায়ন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীকে তারা অনুরোধ করছেন, সে অনুযায়ী নিরাপত্তা বাহিনী কাজ করছে। তারা যেখানে লকডাউন করার কথা বলেন, নিরাপত্তা বাহিনী সেখানে কাজ করে। তিনি বলেন, পশুর হাটে স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অতিমারি চলছে। যেসব গরু ব্যবসায়ী আসবেন তারা যেন স্বাস্থ্যসম্মতভাবে আসেন সে বিষয়ে আমরা নজর রাখবো।
জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) দায়িত্ব কবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে আসবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এনআইডি মাত্র সরকারিভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে। একটা লম্বা সময় লাগবে। আমাদের মন্ত্রণালয় এটা (এনআইডি) নিয়ে একটা ব্যবস্থার মাধ্যমে কাজ শুরু করবে। সবকিছুই ওখানে (ইটিআই ভবন) থাকবে। মন্ত্রণালয় থেকে মনিটর করা হবে। এনআইডি নিয়ে অনেকে অনেক বিতর্ক করছে। এটা তো হলো এমন এক জিনিস, ব্যাংক হিসাব খুলতেও এনআইডি লাগে, মোবাইলে এনআইডি লাগে, শনাক্ত করতে এনআইডি লাগে।
প্রসঙ্গত, নির্বাচন কমিশন থেকে এনআইডি কার্যক্রম সুরক্ষা বিভাগে নিতে ১৭ মে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে চিঠি দেয়া হয়। ইসির হাতেই এ সেবা রাখতে ৭ জুন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে চিঠি দেয় ইসি। পরে ২০ জুন ইসিকে দেয়া চিঠিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সরকারের সিদ্ধান্ত আবারও জানিয়ে দেয়।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ