একটু উষ্ণতার পর বাড়ছে শীতের দাপট : আসছে দুটি শৈত্যপ্রবাহ
চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরে বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের উদ্যোগে কম্বল বিতরণ অব্যাহত
স্টাফ রিপোর্টার: বৃষ্টিতে কুয়াশা কেটে সূর্যালোকের উত্তাপে গত তিনদিন চুয়াডাঙ্গাসহ সারাদেশে তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করেছিলো। কনকনে শীতের তীব্রতা ক্ষানিকটা হ্রাস পাওয়ায় ফাগুনের নাতিশীতোষ্ণতা অনুভূত হচ্ছিলো। গতকাল শনিবার চুয়াডাঙ্গাতে দিনভর ছিলো রোদের উষ্ণতা। দুপুরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিলো ২৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রংপুর-রাজশাহী বিভাগ বাদে দেশের অধিকাংশ এলাকায় সর্বনিম্ন-সর্বোচ্চ তাপমাত্রার ব্যাবধান বড় মাত্রায় বেড়েছে। অবশ্য উত্তরের জনপদের চিত্র ভিন্ন। দুই দিন শৈত্য প্রবাহ ছিলো না। তাপমাত্রা বেড়ে কিছুটা স্বস্তির পরশ দিয়ে ফের গতকাল সকাল থেকে শীত দাপট দেখাতে শুরু করেছে। একদিনের ব্যবধানেই তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি কমে সকালে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৮ দশমিক ২ ডিগ্রি থেকে কমে হয়েছে ১৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, এখনি শীতকে বিদায় বলার সময় আসেনি। আজ রোববার থেকে আবারও সকালে দেশের অধিকাংশ অঞ্চলের তাপমাত্রা ২ থেকে ৩ ডিগি সেলসিয়াস কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিন বিভাগের ২৮ জেলায় হালকা বৃষ্টি অথবা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে। গতকালও সিলেটসহ কয়েকটি জায়গায় সামান্য বৃষ্টিপাত হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক ও বিশেষজ্ঞ কমিটির চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে জানান, সহসা শীত বিদায় নিচ্ছে না। এ মাসের প্রথমার্ধে দেশের উত্তর, পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে এক থেকে দুটি মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এ সময় দেশের নদী অববাহিকায় মাঝারি বা ঘন কুয়াশা এবং অন্যত্র হালকা বা মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। মাসের শেষার্ধে দেশের কোথাও কোথাও এক-দুই দিন বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। তবে ক্রমান্বয়ে বাড়বে দিন ও রাতের তাপমাত্রা। চলতি ফেব্রুয়ারি মাসে বঙ্গোপসাগরে কোনো ঘূর্ণিঝড় বা নিম্নচাপ সৃষ্টি হওয়ার শঙ্কা নেই। আবহাওয়া অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবহাওয়াবিদ মো. হাফিজুর রহমান বলেন, শীতের তীব্রতা আর থাকবে না; তবে শীত একদম বিদায়ও নিচ্ছে না। ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে মৃদু শীত অনুভূত হবে। কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ গতকাল জানান, আজ রোববার থেকে আবারও দেশের অধিকাংশ অঞ্চলের তাপমাত্রা ২ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ভোর ৬ টার মধ্যে সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলার ওপরে সামান্য পরিমাণে বৃষ্টি হবে। সকাল ৯ টার মধ্যে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের সর্বদক্ষিণের উপকূলীয় এলাকার বেশিভাগ জেলার ওপরে হালকা থেকে মাঝারি ঘনত্বের কুয়াশা থাকার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। তিনি জানান, ১০-২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নতুন আর একটি পশ্চিমা লঘুচাপ বাংলাদেশ ও ভারতের ওপর দিয়ে অতিক্রম করার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে ১৫ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে রংপুর, রাজশাহী, ময়মনিসংহ ও সিলেট বিভাগের জেলাগুলোতে বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা বেশি। গতকাল আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রাত এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। শেষরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী-অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহনে সাময়িক বিঘœ ঘটতে পারে। এদিকে আবহাওয়ার জানুয়ারি মাসের আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা অনুযায়ী বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যাচ্ছে, এ মাসে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিক অপেক্ষা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম ছিল। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকলেও গড় তাপমাত্রা ছিলো ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম। চুয়াডাঙ্গায় ছাত্রলীগের উদ্যোগে শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাত ১০টার দিকে চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশনে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নির্দেশনায় জেলা ছাত্রলীগ নেতা গাজী ইমদাদুল হক সজলের নেতৃত্বে শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইমরান শেখ, খান ফয়সাল, আশিকুর রহমান হিমু, আরফিন সজীব, আব্দুল সালেকিন, রাইসুল, সাব্বির, তন্ময়, ফয়সাল আরাফাত, তানিন, ইমরান, তৌকির আহমেদ, নাজমুল, অনেক আরিয়ান প্রমুখ।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের ব্যক্তিগত উদ্যোগে শীতার্তদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেলে মেহেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের পতœী ও যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি সৈয়দা মোনালিসা ইসলাম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে শীতবস্ত্র বিতরণের উদ্বোধন করেন। এ সময় মেহেরপুর পৌরসভার সংরক্ষিত কাউন্সিলর শারমিন আক্তার, জেলা যুব মহিলা লীগের সভানেত্রী সামিউন বাসিরা পলি, কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কুতুবুদ্দিনসহ স্থানীয় যুব মহিলা লীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মুজিবনগর প্রতিনিধি: মুজিবনগর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র কম্বল বিতরণ করেছে মুজিবনগর উপজেলা যুব মহিলা লীগ। গতকাল শনিবার দুপুরে মুজিবনগর কমপ্লেক্স অডিটোরিয়ামে মুজিবনগর উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি তকলিমা খাতুনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সহ-সভাপতি ও জনপ্রশাসন মন্ত্রীর পতœী সৈয়দা মোনালিসা ইসলাম। এ সময় প্রধান অতিথি বলেন মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরহাদ হোসেন নারীদের সম্মান মর্যাদা দিয়েছে বলেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মেহেরপুর-১ আসনে নৌকার মাঝি ফরহাদ হোসেনের পক্ষে আপনারা নৌকার ভোট চেয়েছেন ভোট দিয়েছেন এবং বঙ্গবন্ধুর নৌকাকে জয়যুক্ত করেছেন। সে জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনা আপনাদের উপহার হিসেবে আপনাদের পছন্দের মানুষকে ফুল মন্ত্রী দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন জননেত্রী শেখ হাসিনার সৈনিক হিসেবে কাজ করতে হবে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে তাহলেই আপনারা আমরা ভালো থাকবো এই শান্তিপ্রিয় মেহেরপুর জেলা ভালো থাকবে এই সোনার বাংলাদেশ ভালো থাকবে সে জন্যে জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং ফরহাদ হোসেনের কোনো বিকল্প নেই। আজকে আপনাদের জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনার উপহার শীতবস্ত্র জনপ্রশাসন মন্ত্রীর হাত দিয়ে পাঠিয়েছেন আপনাদের হাতে পৌঁছিয়ে দিতে আমি আপনাদের মাঝে এসেছি আপনাদের উপহার শীতবস্ত্র কম্বল দিতে। আপনারা সব সময় জননেত্রী শেখ হাসিনা আপা ও জনপ্রশাসন মন্ত্রীর জন্য দোয়া করবেন যাতে করে আপনের জীবন মান উন্নয়ন ও দেশের জন্য কাজ করতে পারে। এ দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে নৌকার কোনো বিকল্প নেই। মেহেরপুর জেলা যুব মহিলা লীগের সম্পাদিকা অ্যাডভোকেট রুত সোভা ম-লের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন মুজিবনগর উপজেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদিকা তাহমিনা খাতুন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাগোয়ান ইউনিয়ন যুব মহিলা লীগের সভাপতি লিপিকা খাতুন, সাধারণ সম্পাদিকা ও ইউপি সদস্য মাবিয়া খাতুন, মোনাখালী ইউনিয়ন সভাপতি শিমুল রেজা, সাধারণ সম্পাদিকা মোরিয়ম, দারিয়াপুর ইউনিয়ন সভাপতি ও ইউপি সদস্য শাহিনা খাতুন, সাধারণ সম্পাদিকা কোহিনুর, মহাজনপুর ইউনিয়ন সভাপতি গুলশান আরা, সম্পাদিকা আল্পনা খাতুন প্রমুখ। মুজিবনগর উপজেলার চার ইউনিয়নের ৩ হাজার জনকে এই শীতবস্ত্র কম্বল দেয়া হয়।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.