ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় ক্যাম্পাসে উপস্থিত হয়ে আত্মপক্ষের সমর্থন করে বক্তব্য দিয়েছেন অভিযুক্ত পাঁচ শিক্ষার্থী। সোমবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত উপাচার্যের সভাকক্ষে ছাত্র-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য দেন তারা। একইসঙ্গে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রীরও সাক্ষাৎকার নেয়া হয়। এসময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আব্দুস সালাম, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভুঁইয়া, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী, প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ ও ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরীনসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, লিখিত বক্তব্য ছাড়াও অন্য কোনো বক্তব্য আছে কি না জানতে আজ ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তদের আত্মপক্ষের সমর্থনে সাক্ষ্য নিয়েছি। অভিযুক্তদের মধ্যে দুজন নতুন বক্তব্য সংযোজন করেছেন। প্রক্টর আরও বলেন, ঈদের ছুটি শেষে তাদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে। আগামী ১৯ জুলাইয়ের মধ্যে সব কার্যক্রম শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত।
এদিকে, অভিযুক্ত শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা নিরাপত্তাহীনতার কথা জানিয়ে বলেন, আমি আজ ক্যাম্পাসে এসেছি। আমার সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলেছিলাম। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাকে নিরাপত্তা দেয়নি।
এ বিষয়ে ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরীন বলেন, আমরা গত মিটিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে তাদের নিরাপত্তার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু যাওয়ার সময় তাদের গাড়িতে উঠতে বলা হলে তারা ওঠেনি। তারা বলেছে, আমরা হেঁটেই যেতে পারবো।
এদিকে, সাক্ষ্য দেয়া শেষে অভিযুক্তদের ক্যাম্পাসে চলাফেরা করতে দেখা গেছে। এসময় সানজিদা চৌধুরী অন্তরা শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদকসহ নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে গত ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি দুই দফায় ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্রীকে রাতভর নির্যাতন করার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ফিন্যান্স বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের তাবাসসুমসহ আরও সাত-আটজন জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ছাত্রী। পরে এ ঘটনায় ইবির পাঁচ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী সানজিদা চৌধুরী ওরফে অন্তরা, চারুকলা বিভাগের হালিমা আক্তার ঊর্মি, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মিম, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের তাবাসসুম ইসলাম ও একই বিভাগের মুয়াবিয়া জাহান। এর মধ্যে সানজিদা চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। অন্যরা ছাত্রলীগের কর্মী। এছাড়া নির্যাতনের ঘটনায় ওই পাঁচজনকেই সংগঠন থেকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।