ইবি প্রতিনিধি: পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১৫ দিনের জন্য হল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) প্রভোস্ট কাউন্সিল। সিদ্ধান্ত মোতাবেক আগামী ৩০ জুন সকাল ১০টায় হল বন্ধ করে দেয়া হবে।তার আগে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগ করতে হবে। আগামী ১৫ জুলাই সকাল ১০টায় হল খুলবে। রোববার বিকেলে রেজিস্ট্রার দপ্তরের প্রেরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানা গেছে। অন্যদিকে ১৯ জুন রেজিস্ট্রার দফতরের দেয়া অন্য এক বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, আগামী ২ জুলাই ক্যাম্পাস বন্ধ হবে। ক্যাম্পাস বন্ধের আগেই রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে হল ছাড়ার নির্দেশনা দেয়ায় বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। প্রশাসন ও প্রভোস্ট কাউন্সিলের সমন্বয়হীন এমন সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়েছেন পূর্ব সূচি অনুযায়ী পরীক্ষা থাকা কয়েকটি বিভাগের শিক্ষার্থীরা। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন শিক্ষার্থীর। রাত সাড়ে ৮টায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন। জিয়া মোড় এলাকা থেকে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। পরে রাত ৯টার দিকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ভিসি বাংলোর সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন।
এদিকে একই দাবিতে বিক্ষোভ করেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের ছাত্রীরা। হল গেটের মধ্যে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা। এ সময় তারা প্রশাসনের এ সিদ্ধান্তকে হটকারী আখ্যা দিয়ে সিদ্ধান্ত পুনঃবিবেচনার দাবি জানান। একইসঙ্গে তারা ৩৬৫ দিন হল খোলা রাখার দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে আগামীকাল (সোমবার) প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিলে রাত সাড়ে ৯টার দিকে আন্দোলন স্থগিত করেন শিক্ষার্থীরা। তবে আগামীকাল (সোমবার) সকাল ১০টার মধ্যে বিষয়টি সমাধান না হলে ফের আন্দোলনে যাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, আগামী ২৯ জুন লোকপ্রশাসন বিভাগের স্নাতকোত্তর, ৩০ জুন হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের স্নাতক ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের এবং ১ জুলাই ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইসিটি) বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা রয়েছে। এর মাঝে হঠাৎ হল বন্ধের নোটিশে বিপাকে পড়েছেন এসব বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থী তৌফিক আহম্মেদ বলেন, সম্প্রতি প্রশাসনের বেশ কিছু সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই শিক্ষার্থীবান্ধব মনে হচ্ছে না। ৩০ জুন আমাদের অনেকের পরীক্ষা থাকা স্বত্ত্বেও হল বন্ধের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। প্রশাসনের এমন হঠকারী সিদ্ধান্তে আমরা হতবাক হয়েছি। শিক্ষার্থীদের কথা না ভেবে প্রশাসনের এমন অযৌক্তি সিদ্ধান্ত মেনে নেবো না। আমরা সিদ্ধান্ত পুনঃবিবেচনার দাবি করছি। পাশাপাশি বছরের ৩৬৫ দিনই হল খোলা রাখার দাবি জানাচ্ছি।
আইসিটি বিভাগে শিক্ষক ও পরীক্ষা কমিটির সভাপতি প্রফেসর ড. জাহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষার্থীদের করোনাকালীন ক্ষতি পুষিয়ে দিতে শুক্রবার ছুটির দিন থাকা সত্ত্বেও ১ জুলাই রুটিনে পরীক্ষা রেখেছি। এখন হঠাৎ হল বন্ধের নির্দেশ দেয়ায় কী করবো সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি। আগামীকাল (সোমবার) মিটিং করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে এভাবে হল বন্ধ করে দেয়াটা সমীচীন নয়। শিক্ষার্থীদের দিকে তাকিয়ে ছুটির আগের দিন পরীক্ষা রেখেছি, তবুও মনে হয় শেষ রক্ষা হবে না।
প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি প্রফেসর ড. ইয়াসমিন আরা সাথী বলেন, ‘প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভায় সবার মতামতের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এটি আমার ব্যক্তিগত কোনো সিদ্ধান্ত নয়।’