আলমডাঙ্গার বধ্যভূমি ও ভেটেরিনারি ট্রেইনিং ইন্সটিটিউট পরিদর্শনকালে রাষ্ট্রদূত জাহাঙ্গীর আলম
কুমারী ভিটিআই’র উন্নয়নে মন্ত্রী ও সচিবের সাথে কথা বলবো
আলমডাঙ্গা ব্যুরো: উজবেকিস্তানে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত জাহাঙ্গীর আলম আলমডাঙ্গার বধ্যভূমি ও কুমারী ভেটেরিনারি ট্রেইনিং ইন্সটিটিউট পরিদর্শন করেন। জাহাঙ্গীর আলম মেহেরপুরের সন্তান ও আলমডাঙ্গার জামাই। পরিদর্শনকালে তিনি খুলনা বিভাগের একমাত্র ভেটেরিনারি ট্রেইনিং ইন্সটিটিউটের উন্নয়নে দিকনির্দেশনা দেন। এছাড়া সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবের সাথে আলোচনা করার প্রতিশ্রুতি দেন।
জানা যায়, উজবেকিস্থানস্থ বাংলাদেশি দূতাবাসের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মেহেরপুরের সন্তান জাহাঙ্গীর আলম গত দুইদিন আলমডাঙ্গায় ব্যস্ত দিন অতিবাহিত করেন। গত সোমবার তিনি সস্ত্রীক আলমডাঙ্গায় শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে এসেছেন। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় তিনি আলমডাঙ্গা বধ্যভূমি পরিদর্শন করেন। একই দিনে তিনি আলমডাঙ্গার কুমারী গ্রামে অবস্থিত ভেটেরিনারি ট্রেইনিং ইন্সটিটিউট পরিদর্শন করেন। তিনি কুমারী ভেটেরিনারি ট্রেইনিং ইন্সটিটিউটে পৌঁছুলে ইন্সটিটিউটের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রদূতকে ফুলেল অভ্যর্থনা জ্ঞাপন করা হয়। এ সময় কুমারী ভেটেরিনারি ট্রেইনিং ইন্সটিটিউটের শিক্ষক ও স্থানীয়দের পক্ষ থেকে অবহেলিত এ প্রতিষ্ঠানের নানা সমস্যা তুলে ধরে তা সমাধান ও উন্নয়নে সহযোগিতা চাওয়া হয়।
জবাবে রাষ্ট্রদূত জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কুমারী ভেটেরিনারী ট্রেইনিং ইন্সটিটিউটটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে। এখানে প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে প্রাণিসম্পদে সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার জন্য। আমি এখানে আসার পর যেটা দেখলাম, সেটা হচ্ছে এখানে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নজরে আনার মতো অনেকগুলো বিষয় রয়েছে। সেক্ষেত্রে আমি ভিটিআই সংশ্লিষ্টদের বলেছি যে আপনারা একটি শক্ত প্রস্তাব দেবেন মন্ত্রণালয়ের কাছে। ছবিসহ দেবেন। অডিটোরিয়ামের জরাজীর্ণ অবস্থা, যেটা অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে। সরকারি সম্পদ অরক্ষিত অবস্থায় থেকে এটার অনেক ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। এখানে প্রশিক্ষণ ও প্রশিক্ষণার্থীর সংখ্যা বাড়াতে হবে। ট্রেনিং সেন্টারটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে আছে, এটাকে সচল করতে হবে। এগুলার সব শাখার সমস্যাগুলো যুক্তিসহ সরকারের কাছে উপস্থাপন করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী এখন প্রাণিসম্পদের ক্ষেত্রে অনেক উৎসাহী। আমার মনে হয় আপনারা সঠিকভাবে সব বুঝিয়ে বলতে পারলে আশা করি আপনাদের এই সম্ভাবনাময় প্রতিষ্ঠানটিরও উন্নয়ন হবে।
বাংলাদেশের একজন রাষ্ট্রদূত হিসেবে মাননীয় মন্ত্রী ও সচিবের সাথে কথা বলবো। যেনো আপনাদের প্রস্তাবনাটি সুনজরে দেখেন। ২০১৬ সালে যে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছিলেন, সেটি দেখেছি। এটা ছিলো অসম্পূর্ণ, সরকারের কাছে কোনো আবেদন দিতে হলে যথেষ্ট যুক্তিপূর্ণ করে দিতে হয়। আশা করি, আপনারা বিষয়টি বুঝবেন এবং সেইভাবে আবেদন করবেন এবং খুব দ্রুত এই প্রতিষ্ঠানের মান উন্নয়ন হবে সে আশা রাখি।
পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিটন আলী, থানা অফিসার ইনচার্জ আলমগীর কবীর, রাষ্ট্রদূতের শ্যালক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মাহমুদুল কাউনাইন, আলমডাঙ্গা ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি মাসুদ রানা তুহিন, কুমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাঈদ পিন্টু, আব্দুর রাজ্জাক, সাংবাদিক শাহ আলম মন্টু, সাংবাদিক রহমান মুকুল, সাংবাদিক গোলাম সরোয়ার সদু।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কুমারী ভেটেরিনারি ট্রেইনিং ইন্সটিটিউটের সহকারী অধ্যাপক দীনবন্ধু সাহা, সহকারী অধ্যাপক ডাক্তার জাহিদ ইকবাল, সহকারী অধ্যাপক ডাক্তার এসএম আয়ুব আলী, সহকারী অধ্যাপক ডাক্তার রাশিদুল হক, সহকারী অধ্যাপক ডাক্তার শফিকুল আলম, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার আব্দুল্লাহিল কাফি, প্রভাষক ডাক্তার কাজী মেহজাবিন নাহার, প্রভাষক ডাক্তার তাসলিমা খাতুন, প্রভাষক ডাক্তার নীলিমা আক্তার হ্যাপি, হিসাব রক্ষণ অফিসার আলমগীর হোসেন প্রমুখ।
জাহাঙ্গীর আলম ইতোপূর্বে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যে অধ্যয়ন শেষে তিনি ৮ম বিসিএস-এ উত্তীর্ণ হয়ে ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে চট্টগ্রামে চাকরিতে যোগ দেন। তিনি ২০০৮ সালে সৌদি আরবের বাংলাদেশী দূতাবাসে ফার্স্ট সেক্রেটারি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
প্রসঙ্গত, জাহাঙ্গীর আলম মেহেরপুর জেলার পাটকেলপোতা গ্রামের মরহুম মাওলানা রুহুল আমিনের ছেলে ও আলমডাঙ্গার বাবুপাড়ার হাজি মরহুম আকরাম উদ্দীনের একমাত্র জামাই। ৩ দিন আলমডাঙ্গায় অবস্থান শেষে আগামী ১৫ তারিখ সকালে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হবেন। ১৬ অক্টোবর ভোর ৫টায় তিনি উজবেকিস্থানের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করবেন।