স্টাফ রিপোর্টার: আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। মির্জা ফখরুল আপনার দলের জেলার আহ্বায়ক এক দফার নামে প্রকাশ্যে বলেছে-শেখ হাসিনাকে কবরস্থানে পাঠাতে হবে। তারা নাকি এ এক দফা পালন করবে! তাই মহানগরসহ সারা দেশের মহানগর, জেলা, উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ডের সব নেতাকর্মীকে বলতে চাই-আর শান্তি নয়, এবার প্রতিরোধ। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিজ্ঞান জাদুঘরের সামনে রোববার বিকেলে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। ঢাকা মহাগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচির পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সাদেক খান, আব্দুল কাদের খান, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মতি, জহিরুল হক জিল্লু, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক রানা, দপ্তর সম্পাদক উইলিয়াম প্রলয় সমদ্দার বাপ্পি, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম মিজু প্রমুখ।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির সাম্প্রদায়িক, দুর্বৃত্তপরায়ণের রাজনীতিকে আমরা কবরস্থানে পাঠাব। তারা আমাদের নেত্রীকে কবরস্থানে পাঠাতে চায়! দুর্বৃত্তদের, দুর্নীতিবাজদের বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। অনেক শান্তি সমাবেশ আমরা করেছি। ষড়যন্ত্রকারীরা প্রকাশ্যে প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা করার জন্য লন্ডনের ফরমায়েশে এরা দলে দলে লন্ডন যাচ্ছে। অস্ত্র শানাচ্ছে। শেখ হাসিনাকে হত্যা করাই তাদের একমাত্র লক্ষ্য। আমাদের দাবি একটাই-অপশক্তির আস্তানা ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও।
ওবায়দুল কাদের বলেন, রাজশাহীতে আবু সাইদ চাঁদ যে শেখ হাসিনাকে হত্যার কথা বলেছেন, এটা তো মির্জা ফখরুলেরই মনের কথা। মির্জা ফখরুল চাপাবাজি অনেক করেছেন। আপনি কি জিজ্ঞাসা করেছেন ওই চাঁদকে শেখ হাসিনাকে প্রকাশ্যে হুমকি দেয়ার পরও? লজ্জা করে না? আপনাদের কর্মীরা বিপদে আছে? আপনাদের কর্মীদের অ্যারেস্ট (গ্রেফতার) করা হচ্ছে? হয়রানি করা হচ্ছে? ১৯ তারিখে শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিয়ে আজ (গতকাল) ২১ তারিখ, এখনো তিনি জেলে যাননি। তিনি রাজশাহীতে আছেন। সরেজমিনে শুনে আসেন। আমার কাছে ভিডিও আছে। চাঁদ বলেন, ‘আমাদের এক দফা-শেখ হাসিনাকে গোরস্তানে পাঠাতে হবে।’ দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচনের আর মাত্র কয়েক মাস বাকি। এখন থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে। নেত্রী (শেখ হাসিনা) সম্পর্কে যে কূটক্তি করেছে, এর প্রতিবাদে সারা বাংলায় বিক্ষোভ করতে হবে। এভাবে আজ ছেড়ে দেব না। এই নগরীতে তাদের বিক্ষোভের পাশে শান্তির সমাবেশ করেছি। একটা টুঁ শব্দ হয়নি। কোনো হানাহনি-মারামারি আওয়ামী লীগের কর্মীরা করতে যায়নি। মির্জা ফখরুলের লজ্জা থাকলে এ কথা স্বীকার করতেন। সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে আজ শেখ হাসিনাকে রক্ষা করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর কন্যার বিরুদ্ধে এ ষড়যন্ত্রকে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে শক্তিকেই মোকাবিলা করতে হবে। এ ষড়যন্ত্র গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে, সম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিরুদ্ধে। এ ষড়যন্ত্র শেখ হাসিনা উন্নয়নশীল বাংলাদেশের বিরুদ্ধে, পদ্মা সেতুর বিরুদ্ধে। এ অপশক্তি দেশকে আবারও দুর্নীতির পাহাড় বানাতে চায়। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারেক রহমান বাইরে বসে ফন্দি আঁকছেন, পরামর্শ দিচ্ছেন। তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন নয়। তারা নির্বাচন করবে না, সেটা আমরা জানি। কিন্তু নির্বাচন ঠেকাতে এলে বাংলার জনগণকে নিয়ে প্রতিরোধ করব। কোনো অপশক্তিকে দেশের শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে বাধা দিতে দেব না। ওবায়দুল কাদের বলেন, সারা দেশে প্রতিরোধের সংগ্রাম চলবে। চক্রান্তকারীদের বিরুদ্ধে, ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে আজ থেকে প্রতিরোধ চলবে। আজ থেকে ষড়যন্ত্রকারীদের দুর্গ আমরা চূর্ণবিচূর্ণ করে দেব। আমরা সত্যের পক্ষে আছি, আমরা ইমানের পক্ষে আছি। শেখ হাসিনা একজন সৎ ও পরিশ্রমী নেতা। সারা জীবন মানুষের জন্য কষ্ট করেছেন। পিতা বঙ্গবন্ধুর মতো শেখ হাসিনাও রাতে তিন ঘণ্টা ঘুমান। এ বয়সে তিন ঘণ্টা ঘুমিয়ে সারাক্ষণ দেশের মানুষের জন্য কাজ করেন। ১৯৭৫ সালের পর শেখ হাসিনার মতো নেতা আমরা আর পাইনি, আমরা ভাগ্যবান। এই নেতাকে আমরা হারাতে পারি না। শেখ হাসিনার নেতৃত্ব দেশের জন্য আশীর্বাদ। তত্ত্বাবধায়ক মরে গেছে আর ফিরে আসবে না জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, তত্ত্বাবধায়ক কবরে শুয়ে আছে। তিনি আরও বলেন, সংবিধানের বাইরে কোনো নির্বাচন হবে না। সব দেশে সংবিধানে নির্বাচন হয়। আমার দেশে কেন নয়? শেখ হাসিনা কেন পদত্যাগ করবেন?