স্টাফ রিপোর্টার: চলতি বছরের মতো সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের এসএসসি ও সমমান এবং এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এসএসসি-সমমান পরীক্ষা আগামী বছরের এপ্রিল মাসে এবং এইচএসসি-সমমান পরীক্ষা জুনে অনুষ্ঠিত হবে। ২০২৩ সালের এ দুই পাবলিক পরীক্ষা সব বিষয়ে পূর্ণ নম্বর ও সময়মতো আয়োজন করা হবে। অন্যদিকে চলতি বছরের জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষার সম্ভাবনা কম। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এসব তথ্য জানান। ২০২৩ সালের দুটি পাবলিক পরীক্ষা নিয়ে সাংবাদিকদের অবহিত করতেই এ সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়। শিক্ষামন্ত্রী ২০২৩ সালে পাবলিক পরীক্ষা দুটির সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেন, বর্তমানে দশম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা ২০২৩ সালে এসএসসি/দাখিল ও সমমান পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে। এসব পরীক্ষার্থী নবম শ্রেণিতে ২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সরাসরি শ্রেণি কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়নি। ২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের ১৪ মার্চ পর্যন্ত সপ্তাহে দুদিন করে সরাসরি ক্লাস করার সুযোগ পেয়েছে। এর মধ্যে ২০ জানুয়ারি থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ওমিক্রনের সংক্রমণে আবারও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ বন্ধ ছিলো। তবে গত ১৫ মার্চ থেকে তারা সরাসরি শ্রেণি কার্যক্রমে সপ্তাহে ৬ দিন করে অংশগ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে। আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত সরাসরি শ্রেণি কার্যক্রম অব্যাহত থাকলে এসব পরীক্ষার্থী নবম ও দশম শ্রেণি মিলে ১৬২ কর্মদিবস শ্রেণি কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে যেখানে স্বাভাবিক অবস্থায় তাদের ৩১৬ কর্মদিবস ক্লাস করার কথা ছিলো।
ডা. দীপু মনি বলেন, তারা ২০২০ সালের ৮ম শ্রেণির ফাইনাল ও জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা দিতে পারেনি। নবম শ্রেণিতেও পরীক্ষা দিতে পারেনি। পুরো সময়টা তারা টেলিভিশন এবং অনলাইন ক্লাসে অংশ নিয়েছে, অ্যাসাইনমেন্ট করেছে। এসব ক্লাস এবং অ্যাসাইনমেন্টগুলো ২০২২ সালের জন্য পরীক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত ১৫০ কর্মদিবসের পরিমার্জিত পাঠ্যসূচি অনুসারে পরিচালিত হচ্ছে।
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমানে একাদশ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা ২০২৩ সালের এইচএসসি/সমমান পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে। এই শিক্ষার্থীরা গত ৮ মাস ক্লাস করার সুযোগ পায়নি। আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত ক্লাস চালু রাখা সম্ভব হলে তারা মোট ২০০ কর্মদিবস শ্রেণি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পাবে পক্ষান্তরে স্বাভাবিক অবস্থায় তাদের ৩৩০ দিন ক্লাস নেয়া হয়। মন্ত্রী আরও বলেন, এ সমস্ত দিক বিবেচনায় ২০২৩ সালের এসএসসি/দাখিল ও সমমান এবং এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা ২০২২ সালের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস অনুসারে অনুষ্ঠিত হবে। এসএসসি-সমমান পরীক্ষা এপ্রিলে এবং এইচএসসি-সমমান পরীক্ষা জুন মাসে আয়োজন করা হবে। তবে এসএসসি-সমমান পরীক্ষার্থীদেও শ্রেণিকার্যক্রম ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ও এইচএসসি-সমমান পরীক্ষার্থীদের শ্রেণিকার্যক্রম ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত চলবে। এ বছরের উভয় পরীক্ষায় সব বিষয়ের পূর্ণ নম্বরে এবং পূর্ণ সময়ে অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব ছিদ্দীকুর রহমান, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান (রুটিন) অধ্যাপক মশিউজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে আগামী ১৯ জুন ২০২২ সালের এসএসসি ও সমমান এবং ২২ আগস্ট এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে ঢাকা শিক্ষাবোর্ড।
অপরদিকে চলতি বছর জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষার সম্ভাবনা কম বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে তাতে আলাদা করে বোধ হয় জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা নেয়ার সুযোগ থাকছে না। মনে হয় না, এ পরীক্ষা নিতে শিক্ষা বোর্ড প্রস্তুতি নেয়ার জন্য সময় পাবে। তবে অন্য শ্রেণির মতো অষ্টম শ্রেণিতেও শ্রেণির মূল্যায়ন হিসেবে স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষা আয়োজন করা হবে। যেহেতু চলতি বছরের এসএসসি-সমমান পরীক্ষা জুনে ও এইচএসসি-সমমান পরীক্ষা আগস্টে আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এজন্য নভেম্বরে জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা আয়োজন করা কঠিন হয়ে পড়বে।
দীপু মনি বলেন, জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা হবে কিনা সেটি আগামী এক-দুই মাস পর ঘোষণা দেয়া হবে। পরীক্ষা নেয়ার চেষ্টা আমাদের থাকবে। সেটা সম্ভব না হলে বাতিলের ঘোষণা দেয়া হবে। তবে আগামী বছর থেকে এমনিতেই জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা থাকছে না।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ