স্টাফ রিপোর্টার: আগামীর কোনো ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেবে না বিএনপি। গত শনিবার সন্ধ্যায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। পরে গতকাল দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের স্বাক্ষরে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে বলেই চরম প্রতিকূল অবস্থায় স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো। কিন্তু সম্প্রতি অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলোতে প্রমাণ হয়েছে- এই নির্বাচন কমিশন কোনো নির্বাচনই নিরপেক্ষ, অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের যোগ্য নয়। এই অনির্বাচিত সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করাই তাদের প্রধান কাজ। এছাড়া স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের বিরোধিতা বিএনপি সবসময়ই করেছে। এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে অনুষ্ঠিতব্য ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ভার্চুয়ালে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির সভায় লন্ডন থেকে সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। অংশ নেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ। সভায় সাম্প্রতিক সময়ে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন উপজেলা পরিষদের উপ-নির্বাচন ও পৌরসভার নির্বাচনে সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের ভূমিকার তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানানো হয়। সভায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আটক থাকা মুশতাক আহমেদের কারাগারে আকস্মিক মৃত্যুতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। আটক থাকাবস্থায় অসুস্থ হওয়ার পরও মুশতাককে কোনো চিকিৎসা না দেয়া এবং জামিন না দেয়ারও নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই গণবিরোধী স্বৈরাচারী সরকার নিজেদের অবৈধ ক্ষমতাকে ধরে রাখার জন্য সব সাংবিধানিক অধিকার হরণ করে বিভিন্ন কালা-কানুন বিশেষ করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো একটি ভয়ঙ্কর আইনের মাধ্যমে জনগণের বাক-স্বাধীনতা, লেখার স্বাধীনতা, সব সাংবিধানিক অধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করে চলেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বিএনপি স্থায়ী কমিটি জানায়, ডিজিটাল আইনে ৭০০ ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। সাংবাদিক, লেখক, পেশাজীবীকে বিনা বিচারে কারাগারে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে। এই অবৈধ দখলদার আওয়ামী লীগ সরকারের প্রশ্রয়ে হত্যা নির্যাতন ক্রমেই বেড়ে চলেছে। নোয়াখালীতে তরুণ সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত হয়েছেন। সাংবাদিক বুরহান হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানায় স্থায়ী কমিটি। অবিলম্বে লেখক মুশতাক আহমেদের কারাগারে অস্বাভাবিক মৃত্যুর বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে সত্য উদঘাটন এবং দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানানো হয়। সভায় ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের আওতায় আটক থাকা সব ব্যক্তির অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করা হয় এবং ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনকে গণবিরোধী উল্লেখ করে তা বাতিলের জোর দাবি জানায় বিএনপি স্থায়ী কমিটি।
পূর্ববর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ