স্টাফ রিপোর্টার: করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলমান কঠোর বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে সপ্তমদিন বুধবারও রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে তৎপর ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকার প্রায় সব এলাকায় মানুষ এবং ব্যক্তিগত গাড়ি ও রিকশা চলাচল অনেকাংশে বেড়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চেকপোস্টগুলোতে কঠোর তল্লাশি করতে দেখা গেছে। রাজধানীর বাইরেও একই পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সিলেট, বরিশাল, রাজশাহী ও চট্টগ্রামসহ ছোটবড় সব শহরে মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। মাস্ক ব্যবহার না করেই তারা চলাফেরা করছেন। বিধিনিষেধ না মানায় বিভিন্ন স্থানে জরিমানা ও বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। অনেককে সতর্কও করা হয়েছে।
বিধিনিষেধ বাস্তবায়নের দায়িত্বপ্রাপ্তরা বলেন-বাইরে বের হওয়া মানুুুুুুুুুুুুষ জরুরি নানা প্রয়োজনের অজুহাত দেখাচ্ছেন। কারণ বিশ্লেষণে কাউকে চলাচলের অনুমোদন দেয়া হচ্ছে। কাউকে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে। আর গ্রেফতার, আটক ও জরিমানা কার্যক্রমও অব্যাহত রয়েছে। এরপরও পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা কঠিন হচ্ছে। দিনমজুর, ক্ষুদ্র আয়ের মানুষ তাদের আয়ের ক্ষেত্রগুলো সচল করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।
এরমধ্যেও লোকজন ঢাকা ছাড়ছে। বিশেষ করে, বিধিনিষেধের মেয়াদ আরো সাত দিন বৃদ্ধির পর এটা আরো বেড়েছে। বাস চলাচল বন্ধ থাকলেও বিকল্প পরিবহনে ভেঙে ভেঙে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে দূরদূরান্তে যাত্রা করছেন অনেকেই, যাদের অধিকাংশই শ্রমজীবী ও খেটে খাওয়া মানুষ। চাপ বেড়েছে সড়কে যানবাহন চলাচলেও। অনেক মোটরবাইকে চালকসহ যাত্রীসংখ্যা চার জন দেখা গেছে। রাজধানীর প্রবেশমুখ আমিনবাজার, উত্তরার আব্দুল্লাহপুর ও যাত্রাবাড়ী এলাকায় এ দৃশ্য এখন নিত্যদিনের চিত্র।
যতই দিন যাচ্ছে বিধিনিষেধ পালন ও বাস্তবায়নে শিথিলতা দেখা যাচ্ছে। গাবতলী মহাসড়কে দাঁড়িয়ে থাকা এক তরুণ জানান, মুন্সীগঞ্জ থেকে এখানে আসা পর্যন্ত তাকে পুলিশ আটকায়নি। বিনা বাধায় তিনি এখানে আসতে পেরেছেন। আরেক জন বলেন, ‘লকডাউন তো বেড়েছে, ঢাকায় বসে থেকে কী করবো। কাজ তো নেই। তাই বাড়ি যাচ্ছি।’
রাজধানীতে প্রবেশ কিংবা বের হওয়ার অন্যতম পয়েন্ট গাবতলী এলাকায় গেলেই চোখে পড়ছে ভারী ব্যাগ নিয়ে মানুষের পায়ে হাঁটার দৃশ্য। আমিনবাজার ব্রিজ পার হওয়ার পর অপেক্ষমাণ মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকারে চেপে দূরপাল্লায় যাত্রা করলেও সেখানে ছিল না আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সদস্যের উপস্থিতি। অন্যদিকে পুলিশকে চাঁদা দেওয়ার অভিযোগ করেন এক মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী। তারা বলেন, পুলিশ যদি গাড়ি না ছাড়ত, আমরা সেটি চালাতে পারতাম না। এদিকে গত কয়েক দিনের মতো গতকালও রাজধানীর সড়ক জুড়ে যানবাহনের সংখ্যা ছিল অনেক বেশি। যান নিয়ন্ত্রণ ও আরোহীর তথ্য যাচাই-বাছাই করতে হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে।
গাবতলীর সড়কে থাকা পুলিশ কর্মকর্তা মো. ইস্তেখার বলেন, ‘আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি, যাদের ছাড়া যায় তাদেরই শুধু অনুমতি দেয়া হচ্ছে। আর না হলে মামলা দেয়া হচ্ছে এবং অনেককে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’ এদিকে রাজধানীর প্রধান সড়কের পাশাপাশি অলিগলি ও পাড়া-মহল্লায়ও ছিল পুলিশের বিচ্ছিন্ন নানা কার্যক্রম। মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) লালবাগ জোনের পক্ষ থেকে চেকপোস্ট, কনভয় প্যাট্রলিংসহ নানা উদ্যোগ নিতে দেখা গেছে।
পূর্ববর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ