মেহেরপুর প্রতিনিধি : বৈষ্ণিক মহামারিতে বিপর্যস্ত তরুন ক্রিকেটাররা। জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন হুমকির মুখে পড়েছে তাদের। লীগ বন্ধ থাকায় অনেকেই ফিরে গেছেন গ্রামে। ক্রিকেট ছেড়ে করছেন দোকানদারী কেউবা কৃষি কাজ। হতাশ অভিভাবকরাও।
মাশরাফি, সাকিব, তামিম, মুশিফক হবার স্বপ্ন নিয়ে অনেক তরুণ ক্রিকেটারের পথ চলা। লাল সবুজের জার্সি গায়ে জড়াতে ব্যাট বলের সাথে সক্ষতা গড়ে তোলেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের যুবারা। অথচ বৈষ্ণিক মহামারী করোনা ছেদ কেটেছে তাদের সেই স্বপ্নে।
মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি গ্রামের এক ক্রীড়ামোদি পরিবারে জন্ম আসাদুজ্জামান পল্লবের। ছোট বেলা থেকেই স্বপ্ন জাতীয় দলের জার্সি গায়ে একদিন মাঠ মাতাবেন। জেলার গন্ডি পেরিয়ে তিন বছর থেকেই ঢাকার ক্রিকেটে বিচরন তার। প্রথম বিভাগ লীগে নিজের যৌগ্যতা প্রমান করে এখন প্রিমিয়ারে খেলায় স্বপ্ন দেখছেন তিনি। অথচ বৈষ্ণিক মহমারিতে বন্ধ ঢাকার ক্রিকেট। পল্লব এখন নিজ এলাকায় ফিরে দিয়েছেন একটি স্পোর্টসের দোকান। বি.কে.এস.পি থেকে বের হওয়া শালিকা গ্রামের আর এক ক্রিকেটার শামীম ইখলাস ক্রিকেট ছেড়ে এখন কৃষক।
তবে ঢাকার ২য় বিভাগ খেলা ইমনের গল্পটা একটু ভিন্ন। পারিপারিক অবস্থা ভাল থাকায় এখনও লড়াই করে যাচ্ছেন ক্রিকেট টিকে থাকার। তারপরও চোখে মুখে হতাশার ছাপ। কারণ বয়সতো আর থেমে থাকছেনা।
পল্লব জানান, নিজের যোগ্যতা প্রমান করেছেন জেলার বয়স ভিত্তিক ক্রিকেট থেকে। ঢাকার ২য় বিভাগ লীগ খেলে যে টাকা আয় হতো তা দিয়ে নিজের পড়ালেখা ও থাকার ব্যবস্থা হয়ে যেতো। ২য় বিভাগে নিজের যৌগ্যতা প্রমান করেছেন। এখন প্রিমায়ারে কয়েকটি দলের সাখে যোগাযোগ চলছে। অথচ আর্থীক সঙ্কটের কারণে তাকে ঢাকা ছাড়তে হয়েছে। নিজের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে নিজ এলাকায় একটি স্পোর্টেসের দোকান দিয়েছি। সেখান থেকে যা আয় হয় তা দিয়েই চলছে নিজের খরচ। দীর্ঘদিন ঢাকা লীগ বন্ধ থাকলে এক সময় ক্রিকেটই ছেড়ে দিতে হবে তাকে।
শামীম ইখলাছ বলেন, বাবা মার অনুপ্রেরনায় বিকেএসপিতে ভর্তি হয়েছিলাম। নিজে লেগব্রেক বল করি। বড় ক্রিকেটার হবার স্বপ্ন ছিলো। কিন্তু এখন বাধ সেধেছে বয়স। ২৬ বছর পার করে ফেলেছি। এখন আর বাবা মা আগ্রহ দেখাচ্ছেননা ক্রিকেট নিয়ে। ফলে গ্রামে ফিরে নিজেদের জমিজমা দেখাশোনা করছি। পাশপাশি বিভিন্ন ধরনের চাষবাদ করে সময় কেটে যাচ্ছে। ক্রিকেট নিয়ে কোন ভবিষ্যত দেখছেননা তিনি। করোনার কারণে তার সব স্বপ্ন আজ শেষ।
ইমন ম্থাাভাঙ্গাকে বলেন, বাবা মা চাকুরি করেন। তাই এখনও তাকে সাহায্য করে যাচ্ছেন। এখন বয়স ২৩ বছর। ফলে জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন দেখছেন। কিন্তু মহামারির কারণে এখন গ্রামে অবস্থান করছি। কবে যে ঢাকা ফিরে যেতে পারবো সেই অপেক্ষায় প্রহর গুনছি। সাথে ভর করেছে হতাশা। কারণ সময়ের সাথে সাথে বয়স বাড়ছে।
পল্লবের বাবা আজিমুদ্দীন বলেন, ছেলের স্বপ্ন পূরনে নিজে সাধ্য মতো চেষ্টা করেছি। কিন্তু এখন আর কোন ভবিষ্যত দেখছিনা। ফলে নিজে থেকে আয়ের পথ দেখানোর চেষ্টা করছি। কারণ ভবিষ্যতে যেন ছেলেকে বেকার হতে না হয়।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ