আবহাওয়া পূর্বাভাস জানার কারণেই ফসল সুরক্ষা সম্ভব হয়
চুয়াডাঙ্গায় কৃষি রোভিং সেমিনার কৃষিবিদ হামিদুর রহমান
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় কৃষি আবহাওয়া তথ্য পদ্ধতি উন্নতকরণ প্রকল্পের আওতায় রোভিং সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় শহরের চেম্বার অব কমার্স ভবনের তৃতীয়তলায় এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সেমিনারটি বাস্তবায়ন করে। সেমিনারে জেলার দুই শতাধিক কৃষক অংশগ্রহণ করেন।
চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ বিভাস চন্দ্র সাহা’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত রোভিং সেমিনারে কৃষি মন্ত্রণালয়ের এপিএল পুলের সদস্য ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের প্রাক্তন মহাপরিচালক কৃষিবিদ হামিদুর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। সেমিনারে বিএডিসি’র বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রের যুগ্ম-পরিচালক সেলিম হায়দার, জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মো. আলী জিন্নাহ, দর্শনা ইক্ষু গবেষণা উপকেন্দ্রের উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জামাল উদ্দিন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তালহা জুবায়ের মাসরুর, দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান, জীবননগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন আক্তার, চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা আফরিন বিনতে আজিজ, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন, চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার কাউন্সিলর কামরুজ্জামান চাঁদ ও ইমরান মহলদার রিন্টু, চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রকিবুল হাসান এবং গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
রোভিং সেমিনারের প্রধান অতিথি কৃষিবিদ হামিদুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের লোকসঙ্গীত স¤্রাট আব্বাস উদ্দিন। ছোট বেলায় আব্বাস উদ্দিন ও আব্দুল আলিমের গান শুনে বড় হয়েছি। আব্বাস উদ্দিন গান করতেন আল্লাহ মেঘ দে, পানি দে। আজকে সেই অবস্থা নেই। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ডাকে দেশ স্বাধীন হয়েছে। সাড়ে ১৭ কোটি মানুষ বর্তমান। সেই সময়ের তুলনায় জমি হারিয়ে গেছে, ১০ কোটি লোক বেড়েছে। ১৯৭১ সালে ৩০-৪০ লাখ মে. টন ধান ঘাটতি ছিলো। এখন বিদেশ থেকে খাদ্যশষ্য আমদানী করা লাগে না। সরকারের দাযিত্বশীল পরিকল্পনা ও কৃষক ভাইদের আন্তরিকতার কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। ২০১৬ সালে ব্রাসেলসে ১৪৭টি দেশের কৃষি সম্মেলনে আমি বলেছিলাম, বাংলাদেশে বৃদ্ধিমান ও পরিশ্রমিক কৃষক ভাইদের জন্য এবং দেশপ্রেমিক সরকারের কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। বিজ্ঞানিদের অগ্রযাত্রার কারণে এবং সাংবাদিকদের প্রচারের কারণে কৃষক ভাইয়েরা অনুপ্রাণিত হয়ে আমন ও আউশ ধান চাষ করছে। আগে বলা যেত না, আবহাওয়া কিভাবে হবে। ২০১৫ সালে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক থাকা অবস্থায় আমি সরকারের সাথে আবহাওয়া অ্যাপস তৈরী করেছিলাম। ২০১৭ সালে শুরু হয় ১৫ দিন আগে আবহাওয়ার খবর জানতে পারি। আবহাওয়া জানার কারণে ফসল সুরক্ষা সম্ভব হয়। সুনামগঞ্জে ধান কাটার জন্য ৫০০ হারভেস্টার কাজ করেছে। সমতলে কৃষক ভাইদের শতকরা ৫০ ভাগ ভর্তুকী মূল্যে ধান কাটার হারভেস্টার দেয়া হয়েছে। এবছর সরকার কৃষিতে ৩০ কোটি টাকা ভর্তুকী দিচ্ছে। বেশি দিচ্ছে সারের ওপর। গত ১০-১৫ বছরে কৃষি এলাকা বদলে দিয়েছে। ভুট্টার সবচেয়ে বড় জেলা চুয়াডাঙ্গা। ১৯৪৩ সালে দুর্ভিক্ষ হয়েছিলো। ওই সময় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম কবিতা লিখেছিলেন। বর্তমানে খাদ্যের কোনো ঘাটতি নেই। লাখো সালাম জানাই শেখ মুজিবকে। তার সাড়ে ৩ বছরের শাসনামলে ৮০০ কোটি টাকা বাজেটে কৃষি ছিলো শতকরা ২৫ ভাগ। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষি উন্নয়নে কাজ করছেন। কৃষি এগিয়েছে। একথা মানতে হবে। এমন একজন ব্যক্তিকে কৃষিমন্ত্রী বানিয়েছেন যিনি কৃষকের কল্যাণের জন্য এক প্রাপ্ত থেকে দেশের অন্য প্রান্তে কৃষকদের জন্য ঘুরে বেড়ান। পৃথিবী যতদিন থাকবে, কৃষি ততদিন থাকবে। মৌলিক চাহিদার ১নং খাদ্য। কৃষি সম্মানের পেশা। কৃষি যান্ত্রিককরণের কাজ চলছে। কৃষি শ্রমিকের সঙ্কটের কারণে ধান কাটতে কষ্ট হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু কৃষকদের উন্নয়নে সমবায় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।