আনোয়ার হোসেন: চুয়াডাঙ্গার পাইকারি কাঁচাবাজারগুলোতে প্রতিদিনই জেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে কৃষক ও ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা নিয়ে আসেন নানা ধরনের সবজি। পরে খুচরা বিক্রেতারা এখান থেকে মালামাল সংগ্রহের পরই বাড়িয়ে দেন পণ্যের দাম। হাতবদলে বাড়ে সবজির দাম। কৃষকের ক্ষেত থেকে সবজি যায় পাইকারি বাজারে, পাইকারি বাজার থেকে খুচরা বাজারে সবজির দামের ব্যবধান হয় আকাশ-পাতাল। ক্রেতাদের কিনতে হয় বাজারভেদে দুই থেকে তিন গুণ পর্যন্ত বেশি টাকা দিয়ে। কৃষকদের অভিযোগ ন্যায্যমূল্যে শাক-সবজি বিক্রি করতে না পারায় তাদের লোকসান গুণতে হচ্ছে প্রতি মরসুমেই। তবে যুগ যুগ ধরে এই অবস্থা চলে এলেও কৃষকের ভাগ্যের কোনো উন্নতি হচ্ছে না। শীত বা গ্রীষ্মকালীন আগাম সবজির ক্ষেত্রে কৃষক কিছুটা বাড়তি মূল্য পেয়ে থাকলেও খুচরা পর্যায়ে এসব পণ্যের যে দামে বাজারে বিক্রি হচ্ছে তার তিন ভাগের এক ভাগও পান না কৃষকরা। গতকাল বুধবার চুয়াডাঙ্গার নিচের বাজার ঘুরে এ চিত্র পাওয়া গেছে।
সরজমিনে দেখা গেছে, পাইকারি বাজারে আলু প্রতি পাল্লা (পাঁচ কেজি) ১৬০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। এ হিসাবে প্রতি কেজি আলুর দাম পড়ছে ৩২ টাকা। বেগুন ১২৫ টাকা পাল্লা বা ২৫ টাকা কেজি, ফুলকপি ১৭৫ টাকা পাল্লা, পাতা কপি ১২৫ টাকা পাল্লা, পটল ১৫০ টাকা, ভে-ি ৭৫ টাকা, পেঁপে ৯০ টাকা, কাঁচামরিচ প্রতি পাল্লা ৮৫০ টাকা বা ১৭০ টাকা কেজি, কাচকলা ৮০টাকা পাল্লা বা ২০ কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
পাইকারি বাজার থেকে খুচরা বিক্রেতারা মালামাল কেনার পরই দাম বাড়িয়ে দেন। বাজারভেদে দুই থেকে তিন গুণ পর্যন্ত বেশি দরে বিক্রি করেন তারা। যদিও এসব ব্যবসায়ীর অজুহাত, পাইকারি বাজারে পণ্যের পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় বাড়তি রয়েছে সবকিছুর দাম।
চুয়াডাঙ্গার নিচের কাঁচাবাজারে সাড়ে ২৫ টাকা দরের বেগুন বিক্রি করতে দেখা গেছে ৫০ টাকায়। ৩৫ টাকার ফুলকপি ৬০ টাকা, ৩২ টাকার আলু ৪০ টাকা, ২৫ টাকার পাতাকপি ৪০ টাকা, ৩০ টাকার পটোল ৪০ টাকা, ১৫ টাকার ভে-ি ৩০ টাকা, পেঁপে ১৮ টাকার ৩০ টাকা, ১৭০ টাকার কাঁচামরিচ ২০০ টাকা, ২০ টাকার কাচকলা ৪৫ টাকা, ৫৫ টাকার পিয়াজ ৯০ টাকা, ৮০ টাকার রসুন ১২০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।
খুচরা ব্যবসায়ীদের দাবি বাজারে সবজির সরবরাহ কম থাকায় দাম চড়া। অপরদিকে, পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, কৃষকের কাছ থেকে কেনা সবজি প্রতি মণে ২০ টাকা লাভ করা হয়। শুধুমাত্র মরিচের দাম প্রতি মণে ৪০ টাকা লাভ করা হয়।
বাজার করতে আসা মাহমুদ নামে এক ক্রেতা বলেন, কারণে-অকারণে ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন। তাদের অযৌক্তিকভাবে দাম বাড়ানোর ফল ভোগ করতে হয় আমাদের। তিনি আরও বলেন, বাজারে তো কোনো মালের অভাব নেই। তাহলে কেন দাম বাড়ানো হচ্ছে। সরকারের উচিত নিয়মিত বাজার মনিটিরং করা।
কৃষক আবু সাদেক বলেন, সার ও কীটনাশকের দাম আকাশছোঁয়া। সঠিক সময়ে বাজারে সবজি বিক্রি করতে হলে জমিতে বিভিন্ন উপায়ে লায়েক দিতে হয়। পরে সবজি উৎপাদন হয়। কিন্তু বাজারে গিয়ে ঠিক মতো দাম পাই না।
পূর্ববর্তী পোস্ট
চুয়াডাঙ্গার ভোজন বিলাসের স্বত্বাধিকারী হাজি রেজাউল করিম আর নেই
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ