দামুড়হুদা ব্যুরো: দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে (চিৎলা হাসপাতালে) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাহানারা খাতুন (৬০) নামের এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। ৫ম সন্তানের জননী নিহত শাহানারা খাতুন দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর নওদাপাড়ার বদীউজ্জামানের স্ত্রী। গতকাল সোমবার ভোরে চিৎলা হাসপাতালে ভর্তির পর সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে নিহতের লাশের জানাজার নামাজ শেষে নিজ গ্রামের কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়। এদিকে করোনা ভাইরাসের কারণে মৃত্যু হতে পারে বলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মেডিকেল অফিসার ডা. তানভীর মোহাম্মদ আসিফ মজতুবা জানালেও চিকিৎসকের ভূল চিকিৎসা আর অবহেলায় মায়ের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের ছেলে আজগার আলী। তিনি কর্তব্যরত চিকিৎসকের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, উনি একজন সেবক হয়েও আমাদের পরিবারের লোকজনের সাথে চরম দূর্ব্যবহার করেছেন। যা ওনার কাছ থেকে আশা করিনি।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়নের জয়রামপুর নওদাপাড়ার বদীউজ্জামনের স্ত্রী শাহানারা খাতুন (৬০) গতকাল সোমবার ভোর ৪ টার দিকে আকস্মিক অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি বেশ কয়েকবার বমিও করেন। পরিবারের লোকজন তাকে দ্রুত দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে (চিৎলা হাসপাতালে) ভর্তি করেন। সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. তানভীর মোহাম্মদ আসিফ মজতুবা জানান, ভোর ৫ টার তাকে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পর তার ডায়রিয়ার লক্ষণ ছিলো। সে মোতাবেক রোগিকে ফ্লুইড এবং এন্টিবায়েটিক হিসেবে সিফ্রোফ্লক্সাসিন এবং মেট্রোনিডাজল দেয়া হয়। তাকে প্রপার ট্রিটমেন্টই দেয় হয়। ২ ঘন্টা পর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। আমি ফের ছুটে যায় রোগীর কাছে। তাকে চোখ মেলতে বললে তিনি জানান, চোখ মেলতে সমস্যা হচ্ছে এবং শরীরের বিভিন্নস্থানে ব্যাথা করছে। তিনি আরও জানান, আমি পরে জানতে পারি ২০ দিন আগে নিহতের পরিবারের ৮ বছর বয়সী এক শিশু মারা গেছে। সে হিসেবে আমার ধারণা নিহত বৃদ্ধা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন।
এদিকে চিকিৎসকের বক্তব্য মিথ্যা দাবী করে নিহতের ছেলে আজগার আলী বলেছেন, আমার মাকে ভোর সাড়ে ৪ টার দিকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। ওই সময় জরুরি বিভাগ বন্ধ ছিলো। ইতোমধ্যেই আমার অসুস্থ মা পুনরায় ২ বার বমি করেছে। ডাক্তারের রুমের দরজা বেশ কয়েকবার ধাক্কামারার পর ওনি দরজা খুলে বাইরে আসেন। ওনি রোগি দেখে বলেন, ওনার ডায়রিয়া হয়েছে বলে ভর্তি করেন। এরপর রোগির দেহে স্যালাইন ও ইনজেকশন পুশ করেন। আমি মাকে হাসপাতালে ভর্তি করে বাড়ি ফেরার সময় কাঁঠালতলায় পৌছুলে মায়ের কাছে থাকা বড় ভাবি নাজমা খাতুন মোবাইলফোনে জানান, মায়ের অবস্থা ভাল না। চোখ মেলছেনা। পেসার মাপতে বললে ওনি ভাবিকে ধমক দিয়ে বলেন পেসার মাপা লাগবেনা। ডায়রিয়া রোগির পেসার বাড়েনা। এরপর আমার ভাবি কর্তব্যরত নার্সের সাহায্যে পেসার মেপে দেখেন পেসার ১৮০/১৪০। পেসার অতিরিক্ত বেশী দেখে মাকে পেসারের ট্যাবলেট খাওয়ানো হয়। ট্যাবলেট খাওয়ানোর ১০ মিনিট পর আমার মা মারা যান। আমার মায়ের ডায়াবেটিসও ছিলো না। আজগার আলী চিকিৎসকের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ওনার ভূল চিকিৎসায় মায়ের মৃত্যু হয়েছে। কারণ, ওনি যদি প্রথএেন পেসারটা মাপতেন তাহলে হয়তো আমার মা মারা যেতেন না। তিনি কর্তব্যরত চিকিৎসকের প্রতি অনুযোগ করে আরও বলেছেন, আমি মামলা করলে করতে পারতাম। কিন্তু মামলা করবো না। তবে ওনার প্রতি অনুরোধ এ ধরণের অবহেলা এবং ভূল চিকিৎসায় আর কেউ যেনো মারা না যায়।
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ