কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়া শহরের পৌর এলাকায় আবোরো দোকনপাট বন্ধ করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। সেই সাথে ভোড়ামারা উপজেলাও রেডজোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে শহরের সকল দোকান বন্ধ রয়েছে। তবে নিত্য প্রয়োজনীয় ও ওষুধের দোকান খোলা রয়েছে। এ নিয়ে তৃতীয় দফায় কুষ্টিয়ায় নির্দেশনা দিলো কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন। গত ২৪ জুন বুধবার কুষ্টিয়া জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি আসলাম হোসেনের স্বাক্ষরিত এ নির্দেশনা দেয়া হয়।
জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন জানান, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে জনস্বার্থে দোকান বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকান (মুদি, কাঁচামাল, ওষুধ, মোবাইল ব্যাংকিং, মোবাইল রিচার্জ, পশুখাদ্য-মৎস্যখাদ্য, সার-বীজ, কীটনাশক) বেলা ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। এছাড়া অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ভোর ৬ টার মধ্যে কেউ রাস্তায় বের হবেন না। নির্দেশনা না মানলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এর আগে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী কুষ্টিয়ার দোকানপাট বন্ধ ঘোষণা করেন জেলা প্রশাসন।
লকডাউনে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দোকানপাটের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের দুরাবস্থা নিরসনের দাবির মুখে গত ১০ মে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কঠোর শর্ত সাপেক্ষে মার্কেট ও শপিংমল সকাল ১০টা হতে বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলা রাখার অনুমতি দিয়েছিলেন জেলা প্রশাসন।
স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরুত্ব না মানায় করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের সুপারিশ ও বিভিন্ন মহলের দাবির মুখে এক সপ্তাহ পর ১৬ মে সর্বপ্রকার মার্কেট ও শপিংমল বন্ধ ঘোষণা করেন জেলা প্রশাসন। গত ২৩ মে ব্যবসায়ীদের তোপের মুখে পড়ে জেলা প্রশাসন এক জরুরীসভায় ব্যবসায়ীদের লোকাসনের কথা চিন্তা করে ঈদুল ফিতর পর্যন্ত দোকান-পাট স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে খোলার সিদ্ধান্ত দেয়া হয়। এরপর থেকেই আর স্বাস্থ্য বিধি মানেনি দোকান মালিকগণ। এরপর থেকেই লাগামহীনভাবে বেড়ে চলেছে কুষ্টিয়ায় করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় ১৮ জুন কুষ্টিয়ার পৌর এলাকার ৮টি ওয়ার্ড, হরিপুর ইউনিয়ন, ভেড়ামারা পৌরসভার ১, ২, ৩, ৪, ৬, ৮, ৯ নং ওয়ার্ড এবং বাহিরচর ও চাঁদগ্রাম ইউনিয়ন রেডজোন চিহ্নিত করে জেলা স্বাস্থ্যবিভাগ। পরে জেলা প্রশাসন ওই এলাকা লকডাউন করে। ২২ এপ্রিল প্রথম কুষ্টিয়ায় করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়। ২২ এপ্রিল থেকে ২৩ মে পর্যন্ত কুষ্টিয়ায় মোট ৩৬ জন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়।
২৩ মে থেকে চলতি মাসের ২৪ জুন পর্যন্ত এক মাসে কুষ্টিয়ায় করোনা রোগী শনাক্ত হয় মোট ৪২৫ জন। বর্তমানে (২৪ জুন) পর্যন্ত কুষ্টিয়ায় মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৪৬১ জন। সেই সাথে ৬ জন করোনা পজেটিভ রোগীর মৃত্যু হয়েছে এবং ১২জন ব্যক্তি করোনা উপসর্গ নিয়ে জেলায় মৃত্যুবরণ করেছে।
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ