স্টাফ রিপোর্টার: স্ত্রীর নির্যাতন মামালায় দর্শনা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শামসুদ্দোহার (৪০) আড়াই বছরের সশ্রম কারাদ-াদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ফরিদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিচারক প্রদীপ কুমার রায় এ আদেশ দেন। পুলিশ পরিদর্শক শামসুদ্দোহা গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার পশ্চিম গোপীনাথপুর গ্রামের নুরুদ্দিন আহম্মেদের ছেলে। তিনি চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থানায় পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এর আগে নারী নির্যাতন দমন আইনে তার স্ত্রী ফারজানা খন্দকারের করা মামলায় তাকে ঢাকার রাজাবাজার থেকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ফারজানা খন্দকারের সঙ্গে ২০১৫ সালের ৭ আগস্ট পারিবারিকভাবে শামসুদ্দোহার বিয়ে হয়। বিয়ের পর ২০১৯ সালের অক্টোবর পর্যন্ত তিনি ফরিদপুরে পিতার বাড়িতেই থাকতেন। ওই বছরের নভেম্বরে সামসুদ্দোহা তাকে তার কর্মস্থল যশোরে নিয়ে যান। সেখানে ভাড়া বাসায় ওঠেন। যশোরে যাওয়ার কয়েকদিন পর থেকেই স্বামীর আচরণে ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করেন ফারজানা। তিনি জানতে পারেন, অন্য একটি মেয়ের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িত শামসুদ্দোহা।
এ নিয়ে বাধা দিলে তার ওপর নির্যাতন শুরু হয়। এর কিছুদিন পর শামসুদ্দোহা প্রমোশনের জন্য ৭০ লাখ টাকা ফারজানার বাবার কাছ থেকে এনে দিতে বলেন। তিনি ১৫ লাখ টাকা এনেও দেন কিন্তু তিনি তাতে খুশি হননি। এরপর নির্যাতন বাড়তে থাকে। শামসুদ্দোহা প্রতিদিন নেশা করে মারধর করতেন। এক সময় ফারজানা পিতার বাড়ি চলে যান। তখন তিনি তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা। পিতার বাড়িতেই ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। সন্তানের বয়স এখন দুবছর।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাহ মো. আবু জাফর বলেন, ৯ ফেব্রুয়ারি স্ত্রী ফারজানা খন্দকার বাদী হয়ে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় শামসুদ্দোহাকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকার রাজাবাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে গুলশান থানা পুলিশ। পরদিন ২৫ ফেব্রুয়ারি শামসুদ্দোহাকে ফরিদপুর আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মঙ্গলবার আদালতের বিচারক শামসুদ্দোহার কারাদ- ও অর্থদ- দেন।