সরিষা ফুলের মধু চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৌয়ালরা
মেহেরপুরে হলুদ রঙে ভরে উঠেছে দিগন্ত জোড়া ফসলের মাঠ
তৌহিদুল ইসলাম তুহিন: সরিষা ফুলের হলুদ রঙে ভরে উঠেছে দিগন্ত জোড়া ফসলের মাঠ আর মাঠ। সরিষার মাঠ থেকে মৌমাছির দল গুনগুন শব্দে সংগ্রহ করছে মধু। এক ফুল থেকে অন্য ফুলে বিরতিহীন শ্রমে ঘুরে ঘুরে মধু সংগ্রহ করতে ব্যস্ত মৌমাছি। আর সেই মধু জমাট বাধছে বিভিন্ন বক্সে। এ এক অপরূপ প্রাকৃতিক দৃশ্য। এমনই দৃশ্য দেখা যাচ্ছে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার তেরাইল মাঠে। বর্তমানে সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছে মৌ চাষিরা। সরিষা ক্ষেতের পাশে মৌয়ালরা ৭২ টিরও বেশি মৌ বাক্স স্থাপন করেছেন। এখানে ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে মধু সংগ্রহ ও পরিষ্কার-পরিচর্যার কার্যক্রম এবং সপ্তাহে একবার বাক্স থেকে সংগ্রহ করা হয় মধু। সরিষা, ধনিয়া ও লিচু গাছ থেকে মৌমাছি মধু সংগ্রহ করে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের জন্য ২০ লক্ষ টাকা খরচ করে ঘর নির্মাণ করে মধু সংগ্রহ করছেন বলে জানান মৌয়াল রোকনুজ্জামান।
মৌয়াল আরো জানান, প্রায় এক মাস ধরে এখানে মধু সংগ্রহ করছি, ৭-৮ মণ মধু পাওয়া গেছে। যা খুচরা ৫০০ টাকা কেজি ও পাইকারি ৩৫০ টাকা কেজি বিক্রি করা হয়। আর মধু সংগ্রহের সমস্ত প্রক্রিয়া সম্ভব হয় রাণী মৌমাছির কারণে। রাণী মৌমাছির পাখা কাটা থাকে। তাই বক্সের মধ্যেই থাকে। এই রাণী মৌমাছির টানে মিলনের জন্য পুরুষ মৌমাছি বক্সের মধ্যে আসে। আর তখনই সেখানে সকল পুরুষ মৌমাছি জমাট বেঁধে মধু জমাট করে।
এদিকে বিভিন্ন ক্রেতারা জানিয়েছেন, বাজারে বেশির ভাগ মধু ভেজালে ভরা থাকে। তাই এখান থেকে নিজের চোখে দেখে স্বল্পমূল্যে খাঁটি মধু ক্রয় করি। তাছাড়া যে মধুগুলো আগে কিনেছিলাম সেগুলো মানে অনেক ভালো।
ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস সরিষা ফুল থেকে মধু উৎপাদনের প্রধান মরসুম। এ সময় মধু সংগ্রহের জন্য মৌয়ালদের কৃষি অফিস থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হয়। পাশাপাশি তাদের মধু সংগ্রহে উৎসাহ প্রদান করা হয় বলে জানান মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা রাসেল রানা।
গাংনী উপজেলায় চলতি বছর ২ হাজার ৯৭৫ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করেছে কৃষকেরা। আর এই সকল ক্ষেত থেকে ৭২টি বক্স স্থাপন করে মধু সংগ্রহ করছেন মৌচাষিরা।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.