সংসদে নিন্দা প্রস্তাবসহ অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ডের দাবি
বিশ্বনবীকে নিয়ে কটুক্তি ও অবমাননার প্রতিবাদে চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ
স্টাফ রিপোর্টার: মহানবী (সা.) নিয়ে কটুক্তি ও অবমাননার প্রতিবাদে চুয়াডাঙ্গায় বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে সরকারি কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা। গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১০টায় চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহর প্রদিক্ষণ করে সরকারি কলেজের শহীদ মিনার চত্বরে এসে শেষ হয়।
এসময় শহীদ মিনারের সামনে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের দর্শন বিভাগের ১ম বর্ষের ছাত্র আমিরুল ইসলাম, অর্থনীতি বিভাগের ১ম বর্ষের ছাত্র কামাল আহমেদ ও সাব্বির আহমেদ, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ৪র্থ বর্ষের ছাত্র জাকির হোসেন ও বিএ ২য় বর্ষের ছাত্র ইসমাইল হোসেন বক্তব্য রাখেন। এসময় বক্তারা ভারতীয় পণ্য বর্জনের ঘোষণা দেন।
সম্প্রতি ভারতের বিজেপি মুখপাত্র নূপুর শর্মা ও মিডিয়া প্রধান নবীন জিন্দাল মহানবী (সা.) সম্পর্কে কটুক্তি ও অবমাননার প্রতিবাদে এ বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা।
ডিঙ্গেদহ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ‘বিশ্ব নবীর অপমান সইবেনারে মুসলমান দুনিয়ার মুসলিম এক হও লড়াই করো’ সেøাগানকে সামনে রেখে মহানবী (সা.) কে নিয়ে কটুক্তি করায় প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল সোমবার বাদ আছর ডিঙ্গেদহ বাজারে প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করেন ডিঙ্গেদহ ছাত্র সমাজ। আছরের নামাজ শেষে এলাকার ধর্মপ্রাণ মুসুল্লি, ছাত্র সমাজ, বাজারের ব্যবসায়ীরা ডিঙ্গেদহ বাজারের মোড়ে জমায়েত হয়ে ডিঙ্গেদহ বাজারে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় মিছিলে অংশগ্রহণকারী ইসলামের শত্রুরা নিপাত যাক। দুনিয়ার মুসলিমরা এক হও সেøাগানে সেøাগানে উত্তাল ডিঙ্গেদহ এলাকা। এ সময় রাস্তায় চলাচলকারী সকল পরিবহনের ভেতর থেকেও মিছিলে অংশ নেন। মিছিল শেষে ডিঙ্গেদহ বাজারের মোড়ে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন ডিঙ্গেদহ দাখিল মাদরাসার শিক্ষক মাও. খায়রুল বাসার, ডিঙ্গেদহ জামিয়া কারিমিয়া কওমী মাদরাসার শিক্ষক মাও. আব্দুল্লাহ আল মামুন, ডিঙ্গেদহ বাজার জামে মসজিদের খতিব মাও. আবু বকর সিদ্দিক। এ সময় বক্তারা অপরাধীদের মৃত্যুদ-ের দাবি জানান। তাছাড়া রাষ্ট্রীয়ভাবে জাতীয় সংসদে নিন্দা প্রস্তাব আনা ও ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব করে এর জবাব চাওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। বিক্ষোভ মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন ডিঙ্গেদহ ছাত্র সমাজের পক্ষে আকাশ, আলিফ, রাজু, লিখন, কৌশিক, পলাশ, সজীব, নিয়ামত, রাশেল। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ডিঙ্গেদহ বাজার কমিটির সভাপতি বজলুর রহমান, সেক্রেটারি বখতিয়ার হোসেন, ব্যবসায়ী ডা. আব্দুল বারী, হাজি আনোয়ার হোসেন, মোক্তার আলী, আশশাদ উদ্দিন রুবেল, আবু উবায়দা প্রমুখ।
আলমডাঙ্গা ব্যুরো জানিয়েছে, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর সম্মানহানীর প্রতিবাদে আলমডাঙ্গাতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৩ জুন সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টায় আসরের নামাজের পর পশুহাট মসজিদে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে স্বাধীনতা স্তম্ভের কাছে শেষ হয়। পরে স্বাধীনতা স্তম্ভের কাছে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আলমডাঙ্গা থানা শাখার সভাপতি মাওলানা আকরাম হোসেন সাইরাফীর সভাপতিত্বে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মিছিল পরবর্তী সমাবেশে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হয়। কোরআন তেলওয়াত করেন হাফেজ আনাস। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার অন্যতম সদস্য মাওলানা জহুরুল ইসলাম আজিজী। ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ জেলা শাখার সেক্রেটারি মাওলানা সাইফুল ইসলামের উপস্থাপনায় বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ থানা শাখার সহ-সভাপতি আমিনুল হক, সেক্রেটারি ডা. ওয়ালিদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ফারুক হোসেন, প্রচার সম্পাদক মাওলানা মাহমুদুল হক, উপজেলা মসজিদের খতিব, মাওলানা মাসুদ কামাল, আনন্দধাম মসজিদের খতিব মাওলানা ইমদাদুল হক, বামুক সভাপতি মাস্টার খাজা মইনুদ্দীন, সেক্রেটারি শরিফুল হক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আলমডাঙ্গা পৌর সভাপতি তানভিরুল হক জসেফ, মীর শফিকুল ইসলাম, মুফতি আব্দুস সালাম ও মুফতি সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ। সমাবেশে বক্তারা বলেন যে, ভারতে বিজেপি সরকারের মুখপাত্র নূপুর শর্মা কর্তৃক বিশ্ব মানবতার শান্তির দূত মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে তীব্র অশালীন মন্তব্য করে সমগ্র বিশ্বের মুসলিম উম্মাহর হৃদয়ে রক্তক্ষরণ ঘটিয়েছে। বাক স্বাধীনতার নামে এমন জঘন্যতম অন্যায় কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। বিশ্বনবীর অবমাননার ঘটনা চরম অসভ্যতাকেও হার মানিয়েছে। যে কারণে ইতোমধ্যে সমগ্র বিশ্বে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। মুসলমানরা তাদের নবীকে নিজের জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসে। বিশ্বনবীর মর্যাদা রক্ষায় নিজের জীবন বিলিয়ে দিতেও পিছপা হয় না। এরই প্রেক্ষিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দাবী করে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ভারত সরকারের ওপর কুটনীতিক চাপ সৃষ্টি করে এবং সংসদে তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বিজেপি সরকারকে উচিত শিক্ষা দিতে হবে। এছাড়াও বক্তারা বাংলাদেশের দুই বৃহৎ দল বিএনপি ও আ.লীগের সমালোচনা করে বলেন, বাংলাদেশের পক্ষে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রথম সারিতে তাদের থাকার কথা ছিলো। অথচ তারা বাংলাদেশের মানুষকে নিয়ে রাজনীতি করে কিন্তু গণমানুষের চাওয়া পাওয়ার প্রতিফলন তাদের আচরণে প্রকাশ পায় না। তারা আরও বলেন যে, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ গণমানুষের সাথে ছিলো, আছে এবং থাকবে ইনশাআল্লাহ।