লিবিয়ায় পাঠিয়ে অপহরণের পর অমানুষিক নির্যাতন ও চাঁদা দাবি
উদ্ধারের দাবিতে জীবননগরে ভুক্তভোগী পরিবারের সংবাদ সম্মেলন
জীবননগর ব্যুরো: মোটা অংকের বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে আতাউর রহমান নামের এক ব্যক্তিকে লিবিয়ায় পাঠিয়ে তাকে সেখানে অপহরণ করা হয়েছে। অপহরণের পর তার ওপর চালানো হচ্ছে অমানুষিক নির্যাতন। দাবি করা হচ্ছে মোটা অংকের চাঁদা। এ অবস্থায় দেশে অসহায় হয়ে পড়েছে তার পরিবার। অসহায় স্বামী ও পিতাকে উদ্ধার ও মানবপাচার চক্রের সদস্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ভুক্তভোগীর পরিবারের উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার সকালে শহরের রাজনগরপাড়ায় এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে মা জোসনা বেগমের পক্ষে মেয়ে আঁখি খাতুন সাংবাদিকদের সামনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান।
জীবননগর রাজনগরপাড়ার জোসনা বেগম জানান, তার স্বামী আতাউর রহমান জীবননগর বাজারে সেলুনের ব্যবসা করতো। জীবননগর বাজারপাড়ার শাহিন ও তার পিতা তাজিম হোসেন, নারায়নপুর মোড়ের আত্তাব হোসেনের ছেলে উসমান আলী এবং পার্শ^বর্তী ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের রহম আলীর ছেলে নোয়াব আলী পারস্পরিক যোগসাজসে আতাউর রহমানকে ৫০ হাজার টাকার বেশি বেতনের চাকরির মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে গত ১০ অক্টোবর সাড়ে ৪ লাখ টাকা নিয়ে লিবিয়ায় প্রেরণ করে। লিবিয়ায় পৌছানোর পর আতাউর রহমান কথামতো কাজ পায়নি। এ অবস্থায় মানব পাচার চক্রের সদস্যরা তাকে কোন কাজ না দিয়ে অজ্ঞাত স্থানে বন্দি করে রাখে। এর একপর্যায়ে স্থানীয় পুলিশ অভিযান চালিয়ে আতাউরকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করে এবং ১ মাসের জেল খেটে তিনি ছাড়া পায়। জামিনে আতাউরকে ছাড়িয়ে নিয়ে চক্রটি আবারও আতাউরের পরিবারের কাছে আরও সাড়ে ৪ লাখ টাকা দাবি করে। ওই টাকা দিতে দেরি হলে তাকে অমানষিক শারীরিক নির্যাতন করে। আতাউরের স্ত্রী জোসনা বেগম আরও জানান, তার স্বামীকে ফিরিয়ে আনতে বিমান টিকিট পাঠানো হলেও পাচার চক্র সেই টিকিট বাতিল করায়। অতঃপর কয়েকদফায় তাদেরকে লক্ষাধিক টাকা দেয়া হয়েছে। কিন্তু এর পরে আরও টাকার দাবিতে আটক আতাউরকে একইভাবে নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে। বারবার ওই দালাল চক্রের কাছে ধর্না দিয়ে কোন সুরাহা না পেয়ে ২৮ নভেম্বর জীবননগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি। সাংবাদিক সম্মেলনে আতাউর রহমানের স্ত্রী ও দুই মেয়েসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাবীদ হাসান বলেন, এ ব্যাপারে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আমরা আতাউর রহমানকে লিবিয়া থেকে ফিরিয়ে আনার কৌশল অবলম্বন করছি।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.