রেলপথ অবরোধ করে আদেশ প্রত্যাহারসহ শাস্তির দাবিতে আলটিমেটাম
চুয়াডাঙ্গায় পাঁচ রেলশ্রমিককে বরখাস্তের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন
স্টাফ রিপোর্টার: সিগন্যাল অমান্য করে পণ্যবাহী ট্রেন চালিয়ে রেলশ্রমিকদের হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে ও পাঁচ শ্রমিকের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে চুয়াডাঙ্গায় মানববন্ধন করেছেন রেলওয়ে শ্রমিকেরা। গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশনের পশ্চিমে রেলপথে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। পাঁচ শ্রমিকের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার ও শ্রমিক হত্যাচেষ্টায় জড়িত অভিযুক্ত ট্রেনচালক ও তার সহকারীর শাস্তির দাবি জানিয়ে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাবি আদায় না হলে রেলপথ অবরোধ, শ্রমিক ধর্মঘটসহ কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা। মানববন্ধনে শ্রমিক নেতা হুমায়ুন কবীর ও মুস্তাফিজুর রহমান বক্তব্য দেন। এদিকে, মানববন্ধন কর্মসূচি চলাকালে সদর থানার ওসি মাহাব্বুর রহমান শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করে তাদেরকে শান্ত থাকতে অনুরোধ করেন।
গতকাল শুক্রবার ঢাকা-কলকাতা পথে চলাচলকারী মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন চলার লাইনে লাল পতাকা তুলে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন শ্রমিকেরা। সমাবেশ থেকে কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানানো হয়। তখন শহরজুড়ে খবর ছড়িয়ে পড়ে, রেলশ্রমিকেরা মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন অবরোধ করে রেখেছেন। খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাহাব্বুর রহমান দুপুর ১২টায় সমাবেশস্থলে যান। তিনি শ্রমিক নেতাদের বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে সরে এসে কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে দাবি-দাওয়া পেশসহ শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পরামর্শ দেন। তখন শ্রমিকেরা আন্দোলন সংক্ষিপ্ত করেন।
আন্দোলনরত শ্রমিকদের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার দুপুরে আলমডাঙ্গা উপজেলার কুমার নদের ওপর রেলসেতুতে ৩৫ জন ওয়েম্যান, কি-ম্যান ও মেট কাজ করছিলেন। তখন লাল পতাকা ও সিগন্যাল অমান্য করে খুলনা থেকে সিরাজগঞ্জগামী পাথরবাহী একটি ট্রেন সেতুর ওপর তুলে দেয়। এ সময় শ্রমিকদের কেউ নদে ঝাঁপ দিয়ে, কেউ ঝুলে পড়ে নিজেদের আত্মরক্ষা করেন। একপর্যায়ে পাথরবাহী ট্রেনটি থামলে উত্তেজিত জনতা চালকের সহকারীকে মারধর করেন।
শ্রমিকনেতাদের দাবি, হত্যাচেষ্টার ঘটনায় অভিযুক্ত ট্রেনচালক ও তার সহকারীকে শাস্তি না দিয়ে কর্তৃপক্ষ পাঁচ শ্রমিককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে, যা সম্পূর্ণ অন্যায়। অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাতে তারা সংগঠিত হয়ে রেলপথে নেমেছেন।
সাময়িক বরখাস্ত হওয়া শ্রমিকেরা হলেন ভারপ্রাপ্ত কি-ম্যান হাফিজ আল আসাদ, ভারপ্রাপ্ত মেট মুস্তাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত কার্পেন্টার (ওয়ে) হুমায়ুন কবীর, ওয়েম্যান সাব্বির হোসেন ও মেট শহিদুল ইসলাম।
বহিষ্কারাদেশের বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী শ্যামল কুমার দাসের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ধরেননি।