জীবননগর ব্যুরো: জীবননগর উপজেলাবাসী নতুন এক যন্ত্রনার মধ্যে পড়েছে। উপজেলার অর্ধশত ইটভাটার শত শত ট্রাক্টর রাতের নিস্তবতা ভেঙে মাটি বহনে উপজেলা জুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। একের পর এক ট্রাক্টরের চলাচলের ফলে বিকট শব্দে উপজেলাবাসীর ঘুম হারাম হয়ে গেছে। সেই সাথে মাটি পড়ে নষ্ট হচ্ছে পিচঢালা রাস্তা। নতুন এ যন্ত্রনা থেকে মুক্তির উপায় কী-তা জানে না ভুক্তভোগীরা।
সম্প্রতি উপজেলার কাটাপোল গ্রামে মাটি বহনকালে ট্রাক্টরের চাকায় পিষ্ট হয়ে মহিদুল ইসলাম নামের এক বাইসাইকেল আরোহী নিহত। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গেলে বিক্ষুদ্ধ গ্রামবাসীর হামলায় আহত হন উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম মুনিম লিংকন। এ ঘটনার পূর্বাপর ইট ভাটার ট্রাক্টরের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে জরিমানা করেন ইউএনও। ঝামেলা এড়াতে ইটভাটার মাটি ও বালি বহনকারী ট্রাক্টরগুলো তাদের পরিকল্পনা পরিবর্তন করেছে। দিনের পরিবর্তে রাতে বহন করছে মাটি ও বালি। রাত ৯টার পর শুরু হয় ট্রাক্টরের চলাচল। চলে ফজর নামাজের পূর্ব পর্যন্ত।
উপজেলার ডুমুরিয়া থেকে এক ভুক্তভোগী জানান, দর্শনার নূর ইসলাম ডুমুরিয়া বিলের পাশের জমি পুকুর খননের নামে মাটি ইটভাটায় বিক্রি করেছেন। প্রতিদিন রাতে অর্ধশত ট্রাক্টর এ মাটি বহন করাতে বিকট শব্দে ঘুম হারাম হয়ে গেছে এলাকাবাসীর। একই রকম অভিযোগ এসেছে হাসাদাহ, কাটাপোল, আন্দুলবাড়িয়া, দেহাটি ও সীমান্ত ইউনিয়ন থেকে। এ সকল এলাকায় অবস্থিত ইটভাটাতে রাতের আঁধারে মাটি টানা হচ্ছে। ট্রাক্টরের বিকট শব্দের যন্ত্রনায় এলাকাবাসীর ঘুম হারাম হয়ে গেছে। অপরদিকে পিচঢালা রাস্তার ওপর মাটি পড়ে সে এক অন্যরকম রাস্তায় পরিণত হয়েছে। দুপুর হলেই এ মাটি পাউডার হয়ে উড়তে থাকায় বাজারের দোকানীরা মহাবিপদে পড়েছে। ধুলা-বালিতে নষ্ট হচ্ছে দোকানের মালামাল ও রাস্তা। এ ছাড়া একটু বিষ্টি হলেই পিচ রাস্তা কর্দমাক্ত রাস্তায় পরিণত হয়ে দুর্ঘটনা ঘটনার আশঙ্কা তৈরী হয়েছে। এলাকাবাসী ইটভাটার নতুন সৃষ্ট এ যন্ত্রনা থেকে কীভাবে মুক্ত পেতে পারে তা নিয়ে দুঃচিন্তায় পড়েছেন বলে স্বীকার করেছেন জীবননগর পৌর মেয়র রফিকুল ইসলাম।
এছাড়াও হাসাদাহ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, মাটি টানা ট্রাক্টার দাপিয়ে বেড়াচ্ছে হাসাদাহ বাজারের প্রধান ও গ্রামীণ সড়ক। রাত-দিন মাটিটানা ট্রাক্টর চলাচল করলে বড় আকারে দুর্ঘটনার আশঙ্কা দেখা দিতে পারে। মহামারি করোনা ভাইরাসের মধ্যে থেমে নেই মাটি কাটা কাজ। ফলে রাস্তা দিয়ে চলাচল ঝুঁকি হচ্ছে যেমন তেমনই নষ্ট হচ্ছে রাস্ত ঘাট ও ফসলি জমি। একাধিক ব্যক্তির অভিযোগে জানা গেছে, জীবননগর উপজেলা হাসাদাহ বাজারের প্রধান সড়কের ওপর দিয়ে বিভিন্ন ভাটার মাটিটানা ২০ থেকে ২৫টি ট্রাক্টর দিন-রাতে মাটি নিয়ে বেপোয়ারাভাবে চলাচল করছে। এতে ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে। পুকুর খননের নামে মাটি বিক্রি করছে ভাটায় এবং ভাটা মালিকেরা এ সুযোগে বেশি ট্রাক্টর ভিড়িয়ে মাটি নিয়ে ভাটায় পাহাড় করছে।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ