মেহেরপুরে ৮৭ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই : ১২১ সহকারী শিক্ষক পদ শূন্য

মেহেরপুর অফিস: গ্রামীণ জনপদ মেহেরপুর সদরের যুগিন্দা গ্রাম। এ গ্রামের যুগিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২৫ বছর ধরে প্রধান শিক্ষক নেই। একজন সহকারী শিক্ষককে প্রধান শিক্ষকের চলতি দায়িত্ব দিয়ে রাখা হয়েছে। এমন বিদ্যালয়ের সংখ্যা অনেক। সহকারী শিক্ষক থাকার কথা এক হাজার ৭৫৪জন। আছে এক হাজার ৬৬৩ জন। অর্থাৎ ১২১জন সহকারীর শিক্ষকের পদও শূন্য রয়েছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, মেহেরপুর জেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৩০৮টি। মেহেরপুর সদরে ১০৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৫০টিতে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। গাংনী উপজেলায় ১৬২টির মধ্যে ২১টিতে, মুজিবনগরে ৩৮টির মধ্যে ১৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। কোনো কোনো বিদ্যালয়ে দুই যুগের অধিক সময় ধরে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। দীর্ঘ বছর এসব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদ পূরণ না করায় প্রশাসনিক কর্মকা- পরিচালনায় ব্যাহত হচ্ছে। সদর উপজেলার যুগিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদে চলতি দায়িত্বে আছেন ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষক আবদুল কুদ্দুস। তিনি বলেন, ৬জন শিক্ষকের পদ থাকলেও ৩জন আছি। এর মধ্যে আমাকে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করতে হয় আবার ক্লাসও নিতে হয়। প্রশাসনিক কাজে বা বিভিন্ন সভায় যোগদান করতে হয় প্রায় প্রতিদিন। ফলে আমি ক্লাস নিতে পারি না। এর ফলে বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পাঠদান ব্যাহত হয়। সিংহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১১ বছর ধরে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। হাসনাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আলফাজ হোসেন প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে আছেন ২০১৮ সাল থেকে। তিনি জানান, ৭জন শিক্ষকের পদ থাকলেও আছেন ৪জন। তিনি সরকারের বিভিন্ন কাজের দায়িত্ব পালনসহ বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজের চাপে ক্লাস নিতে পারেন না। একাধিক শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শহর এলাকায় বা শহরতলীর স্কুলগুলোতে অবসরের কারণে পদ শূন্য হলে অন্য এলাকা থেকে বদলি হয়ে পদ পূরণ হয়। কিন্তু প্রত্যন্ত এলাকার স্কুলগুলোতে অবসরে যাওয়ার পর পদ শূন্যই থেকে যাচ্ছে। তাই প্রতিবছরই বাড়ছে প্রধান শিক্ষকের পদশূন্য স্কুলের সংখ্যা। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রধান শিক্ষকের পদগুলো ৬৫ ভাগ পদোন্নতির মাধ্যমে এবং ৩৫ ভাগ সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে পূরণের বিধান রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সরাসরি প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ করা হচ্ছে না। আবার সহকারী শিক্ষকদের প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি দেওয়াও বন্ধ রয়েছে। তাই প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদ পূরণ করা যাচ্ছে না। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রুহুল আমীন বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতির প্রক্রিয়া শুরু করছে। পদোন্নতি হলে শূন্য পদগুলো পূরণ করা যাবে। শহরের স্কুলগুলোতে অবসরের কারণে পদ শূন্য হলে পূরণ হয়। কিন্তু প্রত্যন্ত এলাকায় অবসরে যাওয়ার পর শূন্যই থেকে যাচ্ছে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More