মেহেরপুর অফিস: নিম্নমানের বাইসাইকেলের অভিযোগ এনে ফিরে যাওয়ার মাত্র একদিন পর সেই বাইসাইকেল গ্রহণ করলেন মেহেরপুরের ১৭৫ গ্রাম পুলিশ (দফাদার-মহল্লাদার)। মেহেরপুরের গ্রাম পুলিশদের (দফাদার-মহল্লাদার) জন্য টেন্ডারে নেয়া বাইসাইকেল বিভিন্ন কোম্পানীর যন্ত্রাংশ দিয়ে তৈরী নিম্নমানের উল্লেখ করে মুজিবনগর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ (দফাদার-মহল্লাদার) গণক্ষোভ নিয়ে বাড়ি ফিরে যান। তবে দারিয়াপুর ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রাম পুলিশ (দফাদার-মহল্লাদার) বাইসাইকেলসহ অন্যান্য মালামাল গ্রহণ করেছিলেন। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ঢাকার ঝুমা এন্টারপ্রাইজের একজন স্বত্তাধিকারী পরিচয়ের আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান স্যাম্পলে যে বাইসাইকেল দিয়েছিলো সেটাই সরবরাহ করেছে। এখানে দুর্নীতির কোনো আশ্রয় নেয়া হয়নি। তিনি বলেন, বরং অন্যান্য মালামালগুলোর মধ্যে কিছু মাল রয়েছে যেগুলো দরপত্রের দেয়া দামের অধিক মূল্য দিয়ে কেনা হয়েছে। এক্ষেত্রে আমরা লাভের কথাটা ভাবিনি। তবে, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক (ডিডি এলজি) মৃধা মো. মুজাহিদুল ইসলামের মোবইল ফোন কথা বলার চেষ্টা করা হলে ফোনে পাওয়া যায়নি। বাইসাইকেল নিম্নমানের দিয়েছে অভিযোগ এনে গত মঙ্গলবার সাইকেল নিলেন না। অথচ, একদিন পরেই আবার বাইসাইকেল নিলেন এমন প্রশ্ন করলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন গ্রাম পুলিশ জানালেন ভাই এ ব্যাপারে আমাদের কোনো প্রশ্ন করবেন না। আমরা সরকারের সব চাইতে ছোট কর্মচারী। বাধ্য হয়ে নিতে হয়েছে। গতকাল বুধবার সকালে মেহেরপুর জেলা প্রশাসন কার্যালয় চত্বরে এ সকল বাইসাইকেল ও তাদের পোশাক প্যান্ট-শার্ট, জুতা, ছাতা, টর্চলাইট ও অন্যান্য সরঞ্জাম বিতরণ করা হয়। এসব নিম্নমানের জোড়াতালি দিয়ে তৈরি বাসাইকেল ব্যবহারযোগ্য না বলে গতকাল ফিরিয়ে দিয়েছিলেন অধিকাংশ দফাদার ও মহল্লাদার। এইসব বাইসাইকেলর অধিকাংশই নিম্নমানের বিভিন্ন কোম্পানির খুচরা যন্ত্রাংশ জোড়াতালি দিয়ে তৈরি করা বলে জানিয়েছিলেন গ্রাম পুলিশরা। বাইসাইকেলগুলোর ওপরে হিরো জেট লেখা থাকলেও হ্যান্ডেল, প্যাডেল, মাঠগার্ড, চাকা বিভিন্ন কোম্পানির।
জানা গেছে, মেহেরপুরের ১৮ ইউনিয়ন পরিষদে ১৭৫ জন কর্মরত গ্রাম পুলিশদের (দফাদার ও মহল্লাদার) ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে পোশাক ও সরঞ্জামাদি বিতরণের জন্য ৩৮ লাখ ৪৩ হাজার ৭৫০ টাকার প্রকল্প নেয় স্থানীয় সরকার বিভাগ। তবে, বাইসাইকেল ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন যে কোম্পানীর সাইকেল হবে সেটির সব অংশই একই কোম্পানীর হবে। বিভিন্ন অংশ দিয়ে জোড়াতালি দিয়ে তৈরী বাইসাইকেল প্রতিষ্ঠিত কোনো কোম্পানীর হতে পারে না। সিডিউল অনুযায়ী প্রতিটি বাইসাইকেলের মূল্য সাড়ে ১০ হাজার টাকা ধরা হলেও বাজারে নামী কোম্পানীর দামী ব্র্যান্ডের সাইকেলের মূল্য সাড়ে ৭ হাজার থেকে ৮ হাজার ২শ টাকা বলে জানিয়েছেন বাইসাইকেল ব্যবসায়ীরা।