মুজিবনগর প্রতিনিধি: মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়নের জয়পুর হাফেজিয়া ও এবতেদায়ী মাদরাসার প্রধান শিক্ষক হাফেজ মোহাম্মদ ইয়ামিন হুসাইনের বিরুদ্ধে আবারো এক শিশু শিক্ষার্থীকে (১২) বলৎকারের করার অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতিত শিশুর বাবা আব্দুল কুদ্দুস এ ঘটনায় ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন। এছাড়া মাদরাসা পরিচালনা কমিটি জরুরী অধিবেশন ডেকে তাকে আজীবন বহিস্কার ও তার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নিতে তদন্ত কমিটি করেছেন। এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচারের দাবিতে গ্রামবাসী ফুঁসে উঠেছে। বর্তমানে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক হাফেজ মোহাম্মদ ইয়ামিন হুসাইন পলাতক রয়েছেন। তবে তার স্ত্রী তাকে নির্দোষ দাবী করেছেন।
গত ১৫ আগস্ট ভোরের দিকে জয়পুর হাফেজিয়া ও এবতেদায়ী মাদরাসার প্রধান শিক্ষক হাফেজ মোহাম্মদ ইয়ামিন হুসাইন ওই প্রতিষ্ঠানের এক শিশু শিক্ষার্থীকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে বলাৎকার করেন। এছাড়া বিষয়টি ধামাচাপা দিতে তিনি শিশুটিকে নানাভাবে প্রলোভন দেখান। কিন্তু দেরিতে হলেও এ কথা শিশুটি তার পরিবার ও সহপাঠিদের জানায়। এ ঘটনায় গত ২৮ আগস্ট নির্যাতিত শিশুটি ও তার কয়েকজন সহপাঠী প্রতিষ্ঠানের সভাপতি স্থানীয় জয়পুর গ্রাম আ.লীগ নেতা আব্দুস সামাদের বাড়িতে যায় এবং এসব কথা খুলে বলে ও অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার দাবি করে। এদিকে বলৎকারের শিকার শিশুটির পিতা আব্দুল কুদ্দুস জয়পুর হাফেজিয়া ও এবতেদায়ী মাদরাসার অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক হাফেজ মোহাম্মদ ইয়ামিন হুসাইনের বিরুদ্ধে মুজিবনগর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এছাড়া অভিযোগ পেয়ে ওই মাদরাসার সভাপতি আব্দুস সামাদ জরুরী সভা ডেকে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক হাফেজ মোহাম্মদ ইয়ামিন হুসাইনকে বরখাস্ত করেছেন। এছাড়াও মাদরাসার আয়-ব্যয়ের হিসাব-নিকাশ করে ওই শিক্ষকের কাছে ৬২ হাজার টাকা পাওনা দেখিয়েছেন।
এদিকে মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাশেম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। ওই শিক্ষককে গ্রেফতার করে আইনের কাছে সোপর্দ করা হবে।
এ ঘটনার পর থেকে জয়পুর গ্রামের অনেকের অভিযোগ, হাফেজ মোহাম্মদ ইয়ামিন হুসাইন একজন লম্পট চরিত্রের মানুষ। তিনি ইতোপূর্বে একাধিকবার ওই মাদরাসার একাধিক ছাত্রের সাথে একই ঘটনা ঘটিয়েছিলেন। তিনি বারবার ক্ষমা চেয়ে পার পেয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া তার পিতা বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকান্ডের অভিযোগে অভিযুক্ত ছিলেন। তার আপন ভাইদের বিরুদ্ধেও অনেক নষ্টামির অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া ওই শিক্ষক অপকর্ম করতে গিয়ে জনতার হাতে আটক হয়ে বাধ্য হয়ে বিয়ে করেছেন।
মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুস সামাদের নিকট উক্ত বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, নির্যাতিত শিশুটি ও তার কয়েকজন সহপাঠী আমার কাছে অভিযোগ করেছে। এ নিয়ে মাদরাসা পরিচালনা কমিটি জরুরী মিটিং করেছে এবং মাদরাসা থেকে আজীবন বরখাস্ত করা হয়েছে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক হাফেজ মোহাম্মদ ইয়ামিন হুসাইনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার স্ত্রী আশিনুর বেগম তার স্বামী সৎ ও চরিত্রবান দাবি করে বলেন, আমার স্বামীর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে তাকে চাকুরীচ্যুত করার চেষ্টা চলছে। ইতোপূর্বে প্রধান শিক্ষক হাফেজ মোহাম্মদ ইয়ামিন হুসাইনের বিরুদ্ধে একাধিকবার ওই মাদরাসার কয়েকজন শিশুকে বলৎকারের অভিযোগ রয়েছে।