মুজিবনগর প্রতিনিধি: মুজিবনগরে প্রধান সড়কসহ অলিগলি বিভিন্ন সড়কে দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে ইটভাটার কাজে নিয়োজিত অবৈধ যান ট্রাক্টর ট্রল। এতে জনদুর্ভোগ সৃষ্টির পাশাপাশি অনাকাক্সিক্ষত দুর্ঘটনাও ঘটছে। ফলে এর নাম যন্ত্রদানব বলে আখ্যায়িত করেছেন এলাকার মানুষ। এই দানবের কার্যক্ষেত্রের মালিকরা এতটাই শক্তিশালী যে উপজেলা প্রশাসনের নাকের ডগায় চলাচল করলেও তা থামানো যাচ্ছে না। তবে অবৈধ এসব যানবাহন নিয়ন্ত্রণে অভিযানের কথা জানালেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, মুজিবনগর উপজেলার প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ও সবথেকে ব্যস্ততম বাজারেও এই দানবের দাপট কমছে না। যানবাহন ও জনবহুল এলাকাতেও এই যানটি দ্রুতবেগে চলাচল করছে কাউকে তোয়াক্কা না করেই।
জানা গেছে, জমি চাষাবাদের জন্য আমদানিকৃত এসব ট্রাক্টরের পেছনে লাগানো হয়েছে একটি ট্রলি। যা দেখতে ট্রাকের পেছনের অংশের মতো। ট্রাক্টরের বড় দুই চাকার সাথে সামঞ্জস্য রেখে টলির চাকাগুলো স্থাপন করা হয়েছে। ফলে অতিরিক্ত শক্তিধর যান হিসেবে ইটভাটা মালিকদের কাছে এই যানটি বেশ জনপ্রিয়। পুকুর ও নদী থেকে মাটি বালু তুলে ইটভাটা পর্যন্ত পৌঁছান এবং বিভিন্ন স্থানে ইট বহনের কাজেই মূলত ট্রাক্টর ট্রলির ব্যবহার বেশি।
স্থানীদের অভিযোগ, প্রতিদিন সকাল থেকে রাত অবধি প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে গ্রামের অলিগলি সড়কেও এ যানের দাপটে অতিষ্ঠ মানুষ। কিন্তু প্রভাবশালী ইটভাটা মালিকদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় সাধারণ মানুষ অসহায় হয়ে এ যানের যন্ত্রণা সহ্য করছেন। জানা গেছে, প্রতিনিয়ত নতুন সড়ক নির্মাণ ও সংস্কার করা হলেও যন্ত্রদানব ট্রাক্টরের চাকায় পিষ্ট হয়ে সড়কগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে আর ধুলোবালুতে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ।
প্রতিদিনই কোনো কোনো এলাকা থেকে মাটি ও বালু বহন করা হয় এ যানযোগে। এ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে কৃষি জমির টপ সয়েল ফেলে দেয়া ও পুকুর সংস্কারের অজুহাতে সমস্ত মাটি যাচ্ছে ইট ভাটার পেটে। এসব ট্রাক্টরযোগে নরম ও কাদামাটি দেদারসে সড়কে পড়ে পিচ্ছিল হয়ে যাচ্ছে। ফলে চলাচলের অযোগ্য হচ্ছে রাস্তাগুলো। অন্যদিকে রাস্তায় পড়ে থাকা কাদা এক সময় শুকিয়ে ধুলোয় পরিণত হচ্ছে। এতে সড়কে চলতে গিয়ে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা। দিন রাত এসব ট্রাক্টরগুলো দাপিয়ে বেড়ালেও এসব বন্ধে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কোনো কার্যকর ভূমিকা চোখে পড়ে না।
অবৈধ যন্ত্রদানবের দাপট আর এলাকার মানুষের দুর্ভোগ নিরসনের বিষয়টি তুলে ধরে প্রতিকার জানতে চাইলে মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনিমেষ বিশ^াস দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে বলেন, এ বিষয়ে আমরা কয়েকটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি যার প্রতিকার করা হচ্ছে। অন্যদিকে এলাকার চেয়ারম্যানদের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণের জন্য উদ্যোগ নিতে বলেছি। তাছাড়া বিভিন্ন ক্যাম্পে পুলিশ দিয়ে ধরা হচ্ছে এবং আমি নিজেও অভিযান করবো। অবৈধ এ যান নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।