মায়ের হত্যাকারীর বিচার চেয়ে মানববন্ধনে দেড় বছরের শিশু
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী গাংনীর উর্মি হত্যার বিচারের দাবিতে ইবিতে মানববন্ধন
স্টাফ রিপোর্টার: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের নিশাত তাসনিম উর্মির হত্যার বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছে ওই বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। গতকাল রোববার বেলা ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব ম্যুরালের সামনে এ মানববন্ধন করেন তারা। মায়ের হত্যার বিচার দাবিতে মানববন্ধনে সামিল হন কথা বলতে না পারা দেড় বছরের ছোট্ট শিশুটিও। তার অবুঝ মনের চোখের চাহনী দেখে মনে হয় শিশুটিও তার মায়ের হত্যাকারীর বিচার চাই। এর আগে পৌনে ১২টায় তারা অনুষদ ভবন থেকে প্রতিবাদ র্যালি বের করে। র্যালিটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব ম্যুরালের সামনে মানববন্ধনে মিলিত হয়। আমার বোনের হত্যার বিচাই চাই, হত্যাকারীর ফাঁসি চাইসহ বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত প্লাকার্ড হাতে তারা মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন। এসময় বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান ও ড. এরশাদুল হকসহ শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও উর্মীর মা, বাবা ও ছোট বোন মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে তার সহপাঠীরা বলেন, উর্মি আমাদের সবসময় বলতো আমার ছেলেকে অনেক বড় করবো। যার ভেতরে সন্তানকে নিয়ে এমন স্বপ্ন থাকে সে কখনও আত্মহত্যা করতে পারে না। তার স্বামী তাকে হত্যা করে আত্মহত্যার নাম দিয়ে নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে। আমরা হত্যাকারীর ফাঁসি চাই।
ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আজ আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ম্যুরালের সামনে এসে দাঁড়িয়েছি উর্মি হত্যার বিচারের দাবিতে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ, বিভাগের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দসহ সকল শিক্ষার্থীরা এই হত্যাকা-ের বিচার চাই। অভিযুক্তরা এ ঘটনাকে আত্মহত্যা হিসেবে চালানোর পাঁয়তারা করছে। আমরা তা হতে দেবো না। আমরা চাই কোনরকম কাল বিলম্ব না করে দ্রুত এর বিচার হোক।
মানববন্ধনে উর্মীর মা বলেন, আমি চাইতাম আমার মেয়েটা মানুষের মতো মানুষ হোক। আমার মেয়ের কপালে যা ঘটে গেছে তার জন্য আজ আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে এসেছি। সমস্ত ছাত্র সমাজের কাছে আমার আবেদন তারা আমার মেয়ে হারানোর যন্ত্রণাটাকে নিজেদের যন্ত্রণা মনে করে এবং তারা ন্যায় বিচারের দাবি করে। সবাই যেন আমরা একসাথে আমার মেয়ের প্রত্যাশাজনক বিচারের দাবিতে এক হয়ে রাস্তায় নামতে পারি।
উল্লেখ্য, গত বছরের (৮ সেপ্টেম্বর) রাতে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাথুলী মোড় এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নিশাত তাসনিম উর্মিকে (২৩) শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় বলে পরিবার অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় উর্মির পরিবার বাদী হয়ে গাংনী থানায় হত্যা মামলা করেন। ঘটনার এতদিন পরেও কোনো সুরাহা হয়নি বলে জানান তার পরিবারের সদস্যরা। বরং এ ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেন তারা।