মনোনয়ন যেই পাক দুটি আসনে ধানের শীষকে বিজয়ী করতে হবে
চুয়াডাঙ্গার মখালডাঙ্গা ইউনিয়ন বিএনপির ইফতারে শরীফুজ্জামান শরীফ
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মাখালডাঙ্গা ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে দলের চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেল পাঁচটায় হানুড়বাড়াদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বিএনপির নেতাকর্মীদের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিপুলসংখ্যক মানুষ অংশ নেয়। অনুষ্ঠানে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নূরনবী সামদানীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান শরীফ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শরীফুজ্জামান শরীফ বলেন, ‘বিগত ১৬ বছর ধরে গণতন্ত্রকে বন্দী করে রাখা হয়েছিলো। জনগণের কণ্ঠ রুদ্ধ করে দেয়া হয়েছিলো, আমাদের কথা বলার স্বাধীনতা পর্যন্ত হরণ করা হয়েছিলো। ন্যায্য দাবির আন্দোলনে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর দমন-পীড়ন চালানো হয়েছে-নির্যাতন, হামলা, মামলা, গুমের শিকার হতে হয়েছে। কিন্তু কোনো বাধাই আমাদের পথ রুদ্ধ করতে পারেনি। আমরা আন্দোলন চালিয়ে গিয়েছি, আর তারই ধারাবাহিকতায় জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে সেই দীর্ঘ ১৬ বছরের স্বৈরশাসনের অবসান ঘটেছে।’ তিনি বলেন, ‘আজকের এই ইফতার আয়োজন আমাদের জন্য একটি বার্তা বহন করে-স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদী সরকারকে পতনের জন্য আমাদের যে দীর্ঘ ১৬ বছরের সংগ্রাম, তা ছিল এক অবিচল লড়াই। নির্যাতন, জুলুম ও সংঘর্ষ সত্ত্বেও আমরা এগিয়ে গেছি। আমরা এতদিন ধরে ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব’-এই গণতান্ত্রিক অধিকারের জন্য লড়াই করেছি। এখন সময় এসেছে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার। যতদিন দেশে প্রকৃত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচন নিশ্চিত না হবে, ততদিন বিএনপি, এর অঙ্গসংগঠন এবং ধানের শীষের প্রতিটি সমর্থককে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ চালিয়ে যেতে হবে।’
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আপনাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চান যে, আগামী নির্বাচন অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে কঠিন হবে। চুয়াডাঙ্গার দুটি আসনে ধানের শীষের প্রার্থী যেই হোন না কেন, সবাইকে একসঙ্গে কাজ করে বিজয় নিশ্চিত করতে হবে। চুয়াডাঙ্গা-১ ও চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে ধানের শীষের বিজয়ই হবে আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের জন্য শ্রেষ্ঠ উপহার। আমাদের মনে রাখতে হবে-সবার আগে দেশ, দলের স্বার্থ ও জনগণের অধিকার। এজন্যই আদর্শ ও যোগ্য নেতা তারেক রহমানকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে আনতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দীর্ঘ ১৬ বছর গণতান্ত্রিক চর্চার সুযোগ না থাকলেও আমরা রাজপথে ছিলাম। এখন সময় এসেছে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে আরও সক্রিয় থাকার। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে আমাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মীকে স্মরণ রাখতে হবে, আমাদের এই লড়াই কেবল একটি নির্বাচনকে ঘিরে নয়, এটি প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম। আসুন, ঐক্যবদ্ধ থেকে আমাদের লক্ষ্য অর্জনের পথে এগিয়ে যাই।’ ইফতার ও দোয়া মাহফিলে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সফিকুল ইসলাম পিটু, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম নজু, সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান লিপটন, জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক মোকাররম হোসেন, জেলা জাসাসের সাধারণ সম্পাদক সেলিমুল হাবিব সেলিম, সদর উপজেলা বিএনপির যুগ্মসম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মহাবুল হক মহাবুব, জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহেদ মোহাম্মদ রাজিব খান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি শরিফুল আলম বিলাস, জেলা মৎস্যজীবী দলের সাবেক আহ্বায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক বকুল, সদর উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ইকরামুল হক ইকরা। মাখালডাঙ্গা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আতিয়ার রহমান লিটনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্মসম্পাদক জুয়েল মাহমুদ, যুগ্মসম্পাদক আমানুল্লাহ আমান, ক্রীড়া সম্পাদক বিক্রম সাদিক মিলন, সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক ইমরান হোসেন, সদর উপজেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মতিউর রহমান মিশর, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রুবেল হাসান, পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক কৌশিক আহমেদ রানা, ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি সানোয়ার হোসেন, যুগ্মসম্পাদক সাইদুর রহমান এবং সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া। দোয়া ও ইফতার মাহফিলে দলীয় নেতাকর্মীরা বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় বিশেষ মোনাজাত করেন।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.