দুপুর গড়িয়ে বিকেল। ভদ্রলোকের মাথায় টুপি, চোখে চশমা। দেখে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। একটি বাড়ি থেকে গ্যাস সিলিন্ডার ও এক বস্তা চাউল নিয়ে বের হলেন রিকসার অপেক্ষায়। ঠিক এই মুহুর্তে স্থানীয় কয়েক যুবক এসে হাতেনাতে ধরে ফেললেন। কারণ যে বাড়ি থেকে বের হলেন ভদ্রলোক, ওই বাড়িটা যে তার নয়। জিজ্ঞাসাবাসের এক পর্যায়ে স্বীকার করেন তিনি এগুলো চুরি করেছেন ঠিকই, তবে সেগুলো দেয়া হবে এতিমখানায়।
ঠিক এমনই এক ঘটনা ঘটেছে বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) বিকেলে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার সদর হাসপাতাল রোডের কলেজপাড়ায়। আটককৃত শান্তি (৩৫) চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার কলেজপাড়ার সমির আলীর ছেলে বলে পরিচয় দেয়। পরে জানা যায় সে সিনেমাহলপাড়ার বাসিন্দা। খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে আটক করে থানায় নেয়। এসময় তার নিকট থেকে বেশকিছু চাবি, একটি চুরি, একটি আয়না ও এক বস্তা চাউল উদ্ধার করে।পুলিশ বলছে, আটক শান্তি এলাকার একজন চিহৃিত চোর ও মাদকাসক্ত। এর আগে তার নামে কয়েকটি মামলা ও আছে। ছাড়া পেয়ে আরাবো জড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন অপরাধে।
স্থানীয়রা জানায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে পৌর এলাকার কলেজপাড়াস্থ সাবেক চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী সমিরুল ইসলামের ভাড়াটিয়া রাশেদুলের ঘর থেকে একটি গ্যাস সিলিন্ডার চুরি করে নিয়ে যাচ্ছিল। এসময় পাশের বাড়ির কয়েকজন যুবক বিষয়টি সন্দেহ হলে হাতেনাতে আটক করে। তারা আরও বলেন, প্রথম দেখে বোঝাই যায়নি উনি এমন কাজ করতে পারেন। মাথায় টুপি, চোখে চশমা, যে কেউ দেখে চোর বলে ভাবতেই পারবেনা। পরে এলাকাবাসির জিজ্ঞাসাবাসে চুরির ঘটনাটি স্বীকার করে বলে, আমি চুরি করেছি এগুলো এতিম খানায় দেয়ার জন্য। এ কথা শুনে কেউ কেউ তাকে ছেড়ে দেয়ার কথা ভাবতে শুরু করে। অবশ্য যারা কয়েকজন চিনে ফেলায় খবর দেয় পুলিশে।
এদিকে, প্রায়ই চুয়াডাঙ্গার এ এলাকায় প্রতিটি বাড়িতে কোন না কোন কিছু চুরির ঘটনা ঘটেই চলেছে। এ নিয়ে অতিষ্ঠ এলাকাবাসি। পুলিশে অভিযোগ করলেও কোন প্রতিকার হতো না। মাঝেমধ্যেই বাসা-বাড়ি থেকে গ্যাস সিলিন্ডারসহ বিভিন্ন মালামাল চুরি হয়ে যাচ্ছে। এমনকি ঘরের গ্রিল কেটে বা দরজা ভেঙ্গে আসবাবপত্রসহ মূল্যবাস জিনিষও চুরির ঘটনা ঘটছে। পুলিশের কাছে অভিযোগ করলেও তারা চোর ধরা তো দূরে থাক, তাদের টিকিটিও ছুতে পারতো না।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) আবু জিহাদ খান বলেন, শান্তি এলাকার চিহৃিত চোর ও মাদকাসক্ত। তার নামে ইতিপূর্বে মামলা ও আছে। খবর পেয়ে আবারো তাকে আটক করেছি। তার বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন। মামলা রুজু হলেই এ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হবে।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ