চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের বার্ষিক সাধারণসভা ও সদস্যদের পরিবার পরিজনসহ দাতা সদস্যদের উপস্থিতিতে মিলন মেলা
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের বার্ষিক সাধারণসভা ও সদস্যদের পরিবার পরিজনসহ দাতা সদস্যদের উপস্থিতিতে মিলন মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার চুয়াডাঙ্গা বিলাসবহুল সাহিদ প্যালেসে এ আয়োজন করা হয়।
উৎসবমুখর পরিবেশে বার্ষিক সাধারণসভায় সংগঠনের সকল সদস্যের পেশাগত দায়িত্বপালনের পথ মসৃণ করার বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়াও চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাবসহ সাধারণ সম্পাদকের পেশকৃত প্রতিবেদনও সর্বসম্মতক্রমে অনুমোদিত হয়েছে। বার্ষিক সাধারণসভার পর দুপুরে হোটেল সাহিদ প্যালেসের রাফেল কনভেনশন রুমে সদস্যরা তাদের মাতা-পিতা স্ত্রী সন্তানসহ দাতা সদস্যদের সাথে মধ্যাহ্নভোজে মিলিত হন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে দিনব্যাপী রকমারি আয়োজনে ক্লাবের প্রবীণ সদস্য সাংবাদিকদের অভিভাবকতুল্য অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মাহতাব উদ্দীনকে বিশেষ সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব সভাপতি সরদার আল আমিনের সভাপতিত্বে বেলা ১১টায় অনুষ্ঠিত সাধারণসভার শুরুতে কোরআন থেকে তেলওয়াত করা হয়। প্রয়াত সদস্যদের স্মরণে ও তাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনায় এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রাজীব হাসান কচির উপস্থাপনায় অনুষ্ঠিত সভায় গত সাধারণসভার কার্যবিবরণী উপস্থাপন করেন দফতর সম্পাদক আবুল হাসেম। সর্বসম্মতিক্রমে তা অনুমোদন করার পর সাধারণ সম্পাদক বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। পেশকৃত প্রতিবেদন সর্বসম্মতক্রমে অনুমোদনের পর বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাব উপস্থাপন করেন অর্থসম্পাদক আতিয়ার রহমান। কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন ক্লাব সদস্য বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা ইউনিট সেক্রেটারি বিপুল আশরাফ। প্রয়াতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন প্রবীণ সদস্য প্রেসক্লাব ও সাংবাদিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা ইউনিটের সাবেক সভাপতি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং ক্লাবের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মাহতাব উদ্দীন। গঠনতন্ত্র সংশোধন ও সংযোজন উপ-কমিটির পেশকৃত খসড়া প্রস্তাবনা কার্যকরী কমিটি কর্তৃক অনুমোদিত অংশ সাধারণসভায় উপস্থাপন করা হয়। বিশদ আলোচনা শেষে বেশকিছু সংশোধনী ও সংযোজন আনা হয়। এর মধ্যে ক্লাবের সদস্যদের আইনগত সহায়তা প্রদানের বিষয়টিও রয়েছে। সভায় বিবিধ আলোচনায় উঠে আসে চলতি বছরে দুটি আনন্দভ্রমণ প্রসঙ্গ। গাজীপুরস্থ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাফারি পার্ক ও নুহাশ পল্লী পরিদর্শনসহ বার্ষিক বনভোজন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ায় ক্লাব নেতৃবৃন্দসহ দায়িত্বপালনকারী সকলকে প্রশংসা করেন উপস্থিত সকলে। জাকজমকপূর্ণ পরিবেশে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বার্ষিক সাধারণসভার আয়োজন করাও ইতিবাচক বলে মন্তব্য করেন সাধারণ সদস্যগণ। চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করার লক্ষ্যে দাতা সদস্যসহ সকল সদস্যের সহযোগিতার ধারা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে সভাপতি সরদার আল আমিন বার্ষিক সভার সমাপনী ঘোষণা করেন। এরপরই মিলন মেলা ও আপ্যায়ন উপ-কমিটির আহ্বায়ক ক্লাবের কার্যকরী সদস্য রফিকুল ইসলামসহ ক্লাবের সদস্যরা আপ্যায়নে মেতে ওঠেন। মধ্যাহ্নভোজ শেষে ক্লাব সদস্যদের পরিবারের সদস্যদের হাতে বিশেষ উপহার তুলে দেয়া হয়। একই সাথে ক্লাবের সকল সদস্যকেও দেয়া হয় হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও এক বক্স করে মাস্ক। প্রবীণ সদস্যকে বিশেষ সম্মানে ভূষিত ও সদস্যদের মাঝে উপহার প্রদান অনুষ্ঠানটি ক্লাবের সহসাধারণ সম্পাদক ইসলাম রকিব উপস্থাপন করেন। সভাপতিত্ব করেন সরদার আল আমিন। সার্বিক দায়িত্বপালন করেন সাধারণ সম্পাদক রাজীব হাসান কচি। সহযোগিতায় ছিলেন সাংবাদিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক বিপুল আশরাফ। সাধারণসভাসহ অনুষ্ঠানমালায় সদস্যদের মধ্যে শেখ সেলিম, কামাল উদ্দীন জোয়ার্দ্দার, চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু, অ্যাড. রফিকুল ইসলাম, মিজানুল হক মিজান, মাহফুজ উদ্দীন খান, ফাইজার চৌধুরী, রফিক রহমান, আহাদ আলী মোল্লা, আনজাম খালেক, আলমগীর কবীর শিপলু, খাইরুজ্জামান সেতু, শামীম রেজা, রেজাউল করিম লিটন, অ্যাড. ফজলে রাব্বী সাগর, কামরুজ্জামান চাঁদ, উজ্জ্বল মাসুদ, রিফাত রহমান, আব্দুস সালাম, নাজমুল হক স্বপন, সঞ্জিত কর্মকার, মফিজুর রহমান জোয়ার্দ্দার, হুসাইন মালিক, জহির রায়হান সোহাগ, সোহেল সজিব, পলাশ উদ্দীন, খায়রুল ইসলাম, মাহফুজ মামুন, জামান আখতার, মশিউর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। দাতা সদস্যদের মধ্যে ওয়ায়েচ কুরুনী টিটো, মনিরুল ইসলাম, কিশোর কুমার কু-ু, এমরাজ উদ্দীন খোকনসহ অনেকেই উপস্থিত হয়ে আয়োজনকে পূর্ণতা এনে দেন।
আয়োজনে বিশেষ সম্মানে ভূষিত হওয়ায় প্রবীণ সাংবাদিক মাহতাব উদ্দীন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব আমাকে যে সম্মাননা দিলো তা পেয়ে আমি গর্বিত। মৃত্যুর আগপর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব এবং সাংবাদিক সমিতির সাথে আছি এবং থাকবো। ক্লাবের গতিশীল কার্যক্রমে আমি ও আমরা মুগ্ধ। ক্লাব সদস্যদের মধ্যে যারা তাদের পিতা-মাতা ও স্ত্রীসহ সন্তানদের সাথে নিয়ে মিলন মেলায় অংশ নেন তাদের হাতে উপহার তুলে দেয়ার সময়ও উপস্থিত সদস্যরা ক্লাবের এ আয়োজনকে ভূয়সী প্রশংসা করেন। ক্লাবের সাধারণসভায় সকল সদস্য সফেদ গেঞ্জিতে সকলে সজ্জিত হয়ে আয়োজনের শোভা বর্ধনে নতুন মাত্রা যোগ করেন।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ