প্রতিবন্ধীকে হাত-পা বেঁধে নির্মম নির্যাতন : গ্রেফতার ২

আলমডাঙ্গার ডাউকি ইউনিয়নের ছত্রপাড়ায় টাকা না পেয়ে  আত্মস্বীকৃত নেতার কান্ড
আলমডাঙ্গা ব্যুরো: প্রতিবন্ধীকে হাত-পা বেঁধে নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করে ধর্ষণের মিথ্যা দোষারোপ করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়ার অভিযোগে আলমডাঙ্গার ছত্রপাড়ার নাসির উদ্দীন ওরফে রাশিদুলসহ দুই ব্যক্তিকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রতিবন্ধীর বড় ভাই বাদী হয়ে ৩ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় লিখিত অভিযোগ করলে পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতার করে।
অভিযোগসূত্রে জানা যায়, আলমডাঙ্গা উপজেলার ডাউকী ইউনিয়নের ছত্রপাড়া গ্রামের আব্দুল কাদেরের প্রতিবন্ধী ছেলে (প্রতিবন্ধী কার্ড নং -১৯৭৮১৮১০৭৩১০০০৯১১-০৬) আব্বাস উদ্দীনকে (৪২) গত ১২ আগস্ট বিকেলে কিছু ব্যক্তি বাড়ির ভেতর থেকে টেনে হিচড়ে নিয়ে যায়। প্রথমে হাত-পা পা বেঁধে নির্মমভাবে পেটানো হয়। পরে গাছের সাথে বেঁধে নৃশংসভাবে পিটিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়। পরে প্রতিবন্ধীর বিরুদ্ধে শিশু ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করা হয়। শিশু ধর্ষণের অভিযোগে প্রতিবন্ধী আব্বাস উদ্দীন এখন জেলহাজতে।
এ ঘটনায় বাদী হয়ে নির্মম নির্যাতনের শিকার প্রতিবন্ধীর বড় ভাই রিয়াজুল হক বাদী হয়ে যাদের নেতৃত্বে এ জঘন্য পৈশাচিক ঘটনা ঘটানো হয়েছে তাদের ৩ জনের নাম উল্লেখ করে আলমডাঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে গতকালই পুলিশ ছত্রপাড়া গ্রামের মৃত ওয়াজেদ আলীর ছেলে নাসির উদ্দীন ওরফে রাশিদুল ও হাফিজুর রহমানের ছেলে জামাল উদ্দীনকে গ্রেফতার করেছে।
গ্রামের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, আটক নাসির উদ্দীন ওরফে রাশিদুলের রোষানলে পড়ে প্রতিবন্ধীর পরিবার। নাসির ওরফে রাশিদুল নিজেকে প্রজন্মলীগের নেতা দাবি করে গ্রামের নব্য ম-ল সেজে বিচার শুরু করে। জমিজমা সংক্রান্ত জটিলতায় প্রতিবন্ধীর বড়ভাই রিয়াজুলের পক্ষে তিনি থাকবেন এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। রিয়াজুল টাকা দিতে অস্বীকার করলে নাসির ওরফে রাশিদুল ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে রিয়াজুলের পরিবারের ওপর। তার জের ধরে প্রতিবন্ধীকে অমানসিকভাবে হাত-পা ও গাছের সাথে বেঁধে পিটিয়ে ধর্ষণের মিথ্যা অভিযোগ তুলে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।
অভিযোগকারীরা আরও জানান, পিতিশ বাবুর সম্পত্তি নামে পরিচিত বিবাদমান সরকারি সম্পত্তিতে টাকার বিনিময়ে নাসির উদ্দীন ওরফে রাশিদুল বহু ব্যক্তিকে অবৈধভাবে ঘর করার অনুমতি দিয়ে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ৯০ হাজার টাকা নিয়ে জাফর আলী, ৬০ হাজার টাকা নিয়ে ওই গ্রামের ঘরজামাই ইমারত আলী, ৩০ হাজার টাকা নিয়ে হানেফ আলীসহ অনেককে অর্থের বিনিময়ে অবৈধভাবে বিবাদমান সরকারি জমিতে ঘর করার অনুমতি দিয়েছে। এমনকি স্যানা ফকির নামে এক হতদরিদ্র ব্যক্তিকে ঘর করার অনুমতি দিয়ে তার নিকট থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে বলে গ্রামে জোর গুঞ্জন রয়েছে। প্রশাসনের নিকট এ বিষয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন অনেকে। গ্রামের একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা গেছে, এই নির্মম ও পৈশাচিক ঘটনা ধারণকৃত ভিডিওটি প্রতিবন্ধী আব্বাস উদ্দীনের ১৪ বছরের ছেলে আবীর হাসান অচেনা অতিথি নামক ফেসবুক আইডি থেকে জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আপলোড করে। এ ভিডিও ভাইরাল হলে প্রশাসনের নজরে আসে। প্রশাসনের সহযোগিতায় প্রতিবন্ধীর বড় ভাই বাদী হয়ে গতকাল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More