পদ্মা সেতুর বিরুদ্ধে নয়, বিএনপির অবস্থান ছিলো দুর্নীতির বিরুদ্ধে
আলমডাঙ্গায় বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে কেন্দ্রীয় নেতা অনিন্দ্য ইসলাম অমিত
আলমডাঙ্গায় বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন
উপজেলা সভাপতি জব্বার সম্পাদক রোকন; পৌর সভাপতি পিন্টু সম্পাদক ওল্টু
আলমডাঙ্গা ব্যুরো: বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, পদ্মা সেতুর বিরুদ্ধে বিএনপির অবস্থান কোনোদিনই ছিলো না। পদ্মা সেতু দেশের সম্পদ। বিএনপির অবস্থান ছিলো পদ্মা সেতু নির্মাণের দুর্নীতির বিরুদ্ধে। পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রথম সিদ্ধান্ত ছিলো বিএনপির। সে সময় স্থান নির্ধারণ করাও হয়েছিলো। পরবর্তীতে তত্বাবধায়ক সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসে। তিনি গতকাল রোববার চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় উপজেলা ও পৌর বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। অমিত বলেন, আজকের এই গণ জমায়েত দেখে বোঝা যায় যে এ অঞ্চলের মানুষ শহীদ জিয়াকে কতোটা ভালবাসেন ও ধারণ করেন। আমি স্মরণ করি এই অঞ্চল থেকে নির্বাচিত প্রয়াত সংসদ সদস্য মিঞা মোহাম্মদ মনসুর আলী ও সহিদুল ইসলাম বিশ্বাসকে। একই সাথে স্মরণ করছি সাবেক সংসদ সদস্য কেন্দ্রীয় বিএনপির সহসভাপতি শামসুজ্জামান দুদুকে। রাজনৈতিক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন আমাদের নেতা তারেক রহমান। তিনি চুয়াডাঙ্গা জেলায় যে আহ্বায়ক কমিটি উপহার দিইয়েছেন, তারা মাত্র দু মাসের মাথায় সম্মেলন করে প্রমাণ করেছেন দলটি অনেক সংগঠিত। তৃণমূলের মতামতের ভিত্তিতে গণতান্ত্রিকভাবে যে কমিটি গঠণ করা সম্ভব তা জেলা কমিটি দেখিয়ে দিয়েছে।
আলমডাঙ্গার পান্না কমিউনিটি সেন্টারে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সদস্য রউফুন নাহার রিনা। প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা বিভাগীয় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠণিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। উদ্বোধক ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবু। উদ্বোধনকালে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন, তারেক রহমানের নির্দেশনা মোতাবেক একেবারে তৃণমূল পর্যায়ে আলোচনা করে তাদের মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। প্রধান বক্তা ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব শরিফুজ্জামান শরীফ। তিনি বলেন, তৃণমূলের ত্যাগী নেতাকর্মী নিয়েই নতুন কমিটি গঠন করা হবে। নতুন নেতৃত্ব সকল প্রতিকুলতায় রাজপথে থেকে সংগ্রাম আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করবে ইনশাআল্লাহ।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা বিভাগীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক বাবু জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, জেলা বিএনপির সদস্য খন্দকার আব্দুর জব্বার সোনা, এম জেনারেল ইসলাম, খাজা আবুল হাসনাত, রফিকুল হাসান তনু, ফরিদুুল ইসলাম শিপলু, নুুর নবী সামদানী, আবুু বকর সিদ্দীক, আনোয়ার হোসেন, মোর্কারম হোসেন, মনির উদ্দিন, মাহাতাব উদ্দিন চুন্নু, হাবিবুর রহমান বুুলেট, আবুল কালাম আজাদ, মনিরুজ্জামান লিপ্টন, নজরুল ইসলাম, এমদাদুল হক ডাবু, জেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব ইউপি চেয়ারম্যান তবারক হোসেন। পৌর বিএনপি আহ্বায়ক আজিজুর ররহমান পিন্টু ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আনোয়ার হোসেনের উপস্থাপনায় বক্তব্য রাখেন গাংনী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রেজাউর রহমান রেজুু, চিৎলা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রাজীব ফেরদৌস পাপেন, আইলহাস ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মিনাজ উদ্দিন, কুমারী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম, জামজামি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শাহ আলম, জেহালা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সাহিদুদ্দোজা মিল্টন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ডাউকি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবদার আলী, বিএনপি নেতা প্রবাস, টিপু সুলতান, আমজাদ হোসেন, বোরহান উদ্দিন, আব্দুর রশিদসহ আলমডাঙ্গা পৌরসভা ও ১৫ ইউনিয়ন বিএনপির সকল নেতৃবৃন্দ এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী।
সম্মেলনে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার বাবলুকে সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম রোকনকে সাধারণ সম্পাদক করে আলমডাঙ্গা উপজেলা এবং আজিজুল হক পিন্টুকে সভাপতি ও জিল্লুর রহমান ওল্টুকে সাধারণ সম্পাদক করে আলমডাঙ্গা পৌর বিএনপির কমিটি গঠন করা হয়ে। দীর্ঘ ১৪ বছর পর দ্বিবার্ষিক সম্মেলন শেষে ৩ সদস্যের নির্বাচন কমিশন দুটি কমিটিই ঘোষণা করে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির এ সম্মেলনকে ঘিরে দীর্ঘদিন ধরে উপজেলাব্যাপী নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছিলো। এক যুগেরও অধিক সময় পর অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সকল নেতাকর্মী আবেগে উদ্বেলিত ছিলো। তারা অপেক্ষায় ছিলেন সম্মেলনের মাহেন্দ্র ক্ষণটির। অবশেষে রোববার উৎসবমুখর পরিবেশে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো। তাছাড়া, উপজেলা বিএনপির কমিটিতে সিনিয়র সহসভাপতি আক্তার হোসেন জোয়ার্দ্দার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজি মকবুল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন। পৌর কমিটিতে সিনিয়র সহসভাপতি মাগরিবুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহাবুল হক মাস্টার, সাংগঠনিক সম্পাদক আলী আজগর সাচ্চু।
বিএনপির এ দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে উল্লেখ করার মতো পদক্ষেপ ছিলো নিরপেক্ষভাবে কমিটি গঠনের জন্য নির্বাচন কমিটি গঠন। অ্যাড হেদায়েতুল ইসলাম আসলামকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অ্যাড. অহিদুল আলম মানি ও অ্যাড. আসাদুজ্জামান মিল্টনকে সহকারী নির্বাচন কমিশনার করে এ নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়।