নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভালো ধান-চাল সরবরাহ করতে হবে
চুয়াডাঙ্গায় ধান ও চাল সংগ্রহের অগ্রগতি বিষয়ে মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক আমিনুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘অভ্যন্তরীণ বোরো সংগ্রহে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভালো ধান-চাল সরবরাহ করতে হবে। অবশ্যই ভালো চাল দিতে হবে। ভাঙা চাল নেয়া যাবে না। নতুন-পুরাতন মিকছার করা যাবে না। ধান সংগ্রহ হয়নি, চাল খুবই কম। আগামী ২০ জুনের মধ্যে মিলারদের চাল সরবরাহ করতে হবে।’ গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে বোরো সংগ্রহ-২০২২ এর ধান ও চাল সংগ্রহের অগ্রগতি বিষয়ে চালকল মালিক ও খাদ্য বিভাগীয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক আমিনুল ইসলাম খান এসব কথা বলেছেন।
অভ্যন্তরীণ বোরো সংগ্রহে ধানের মূল্যে ২৭ টাকা কেজি এবং চালের মূল্যে ৪০ টাকা কেজি নির্ধারণ করেছে সরকার। চুয়াডাঙ্গায় ১৬ মে চাল মিল মালিকদের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে। এ সময় ১৫৭ জন মিলার চাল সরবরাহের জন্য খাদ্য বিভাগের সাথে চুক্তি করেছে। গত ২৮ এপ্রিল থেকে ধান সংগ্রহ এবং ১৬ মে থেকে চাল সরবরাহ শুরু হয়েছে। এসময়ে জেলায় ধান সংগ্রহ হয়েছে শতকরা ২ ভাগ এবং চাল সংগ্রহ হয়েছে শতকরা ৮ ভাগ।
চুয়াডাঙ্গা জেলায় অভ্যন্তরীণ বোরো সংগ্রহ জেলায় ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৬৯১ মেট্রিক টন এবং চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৭৭৬ মেট্রিক টন। শুধুমাত্র দর্শনা এলএসডি গুদামে ১০৫ মেট্রিক ধান সংগ্রহ হয়েছে। বাকী চুয়াডাঙ্গা, সরোজগঞ্জ, আলমডাঙ্গা ও জীবননগর কেন্দ্রে এক গ্রাম ধানও সংগ্রহ করতে পারেনি। অপরদিকে, চাল সংগ্রহ হয়েছে ৭৫০ দশমিক ৪৮০ মেট্রিক টন। এরমধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদরে ১৮৯ দশমিক শূন্য ৩০ মেট্রিক টন, সরোজগঞ্জে ৮০ দশমিক ৪৯০ মেট্রিক টন, অলমডাঙ্গায় ১৭০ দশমিক শূন্য ৪০ মেট্রিক টন, দর্শনায় ২৯৮ দশমিক ৯২০ মেট্রিক টন ও জীবননগরে ৭৫০ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক আমিনুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাজিয়া আফরীন, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক একেএম শহিদুল হক, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাবিবুর রহমান ও জাকির হোসেন, জেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি হাজি মো. আব্দুল্লা শেখ, মার্কেটিং অফিসার সহিদুল ইসলাম, আলমডাঙ্গা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুল হামিদ, দামুড়হুদা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক দেলোয়ার হোসেন, সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম ও শাহ আলম সনি, মিল মালিক মনিরুজ্জামান, আশরাফুল হক, জয়নাল মিয়া, তোফাজ্জেল হোসেন ও নজরুল ইসলামসহ জেলার খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ এবং মিল মালিকরা উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক আমিনুল ইসলাম খান আরো বলেন, মান নিয়ন্ত্রণ করে চাল সরবরাহ করতে হবে। ভাঙ্গা-চোরা চাল দেয়া যাবে না। নি¤œমানের চাল ঢোকালে পার পাবে না। খাদ্য গুদাম ও মিল পরিদর্শন করা হবে। ধান সংগ্রহের ব্যাপার দেখেন। কোথায় অবৈধ মজুদ হচ্ছে তা খুঁজে বের করা হবে। ধড়-পাকড় আমাদের নিয়ত না। জনগণ দুর্ভোগে না পড়ে। ইউএনও-ম্যাজিস্ট্রেট পরিদর্শনে যাবে।
মতবিনিময় সভায় ধান ও চাল ব্যবসায়ীরা জানান, আফিল, সিটি গ্রুপ, স্কয়ার, এসিআই, প্রাণ ও বসুন্ধরা গ্রুপের লোকেরা এলাকায় এসে বেশি দামে বাসমতি, মিনিকেট ও কাজললতা ধান কিনছে। কল বেরুনো ধানগুলো কিনছে স্থানীয় মিলাররা। এর ফলে চাল ভালো হচ্ছে না। ধান শুকাতে পারছে না। যত লসই হোক আমরা চাল সরবরাহ করবো। দুর্যোগের কারণে ধান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এ জন্য হতাশার মধ্যে আছি।