জীবননগর ব্যুরো: জীবননগরে রাজনীতির উজ্জ্বল নক্ষত্র গোলাম মোর্তুজা। গত প্রায় ৩ যুগ ধরে তিনি সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি হিসেবে আওয়ামী লীগকে পরম মমতায় আগলিয়ে রেখেছিলেন। সেই নক্ষত্র রাজনীতিক গোলাম মোর্তুজার পতন হয়েছে! তিনি সভাপতির পদ হারিয়ে অশ্রæসজল নয়নে গতকাল সোমবার দলের কাউন্সিল স্থল থেকে বিদায় নিয়েছেন।
উপজেলার মিনাজপুর গ্রামের মৃত মেহের আলী মিয়ার বড় ছেলে গোলাম মোর্তুজা। রাজনীতির টানে সরকারি চাকরি ছেড়ে ১৯৮৪ সালে তিনি এলাকায় ফেরেন। প্রথমকার পরাজিত হলেও দ্বিতীয় বারের নির্বাচনে তিনি অধুনালুপ্ত বৃহত্তর বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়ে সকলের নজরে আসেন। পরবর্তীতে ২০০৯ সালের নির্বাচিনে তিনি আওয়ামী লীগ হতে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে তিনি দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হলে বিদ্রোহী প্রার্থী হন। আওয়ামী লীগের স্বর্ণ যুগ কাটানো সেই গোলাম মোর্তুজার কেন এই পতন? তা নিয়ে চলছে রাজনৈতিক ওয়াকিবহাল মহলে চুল চেরা বিশ্লেষণ। বিগত উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করাই তার জীবনে কাল হয়ে দেখা দিলো। বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে যারা নির্বাচন করেছিলেন এই সকল দলীয় প্রার্থীদের প্রতি দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরাগভাজন হন। আওয়ামী লীগের নির্বাচন ওয়ার্কিং কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয় দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করার। গোলাম মোর্তুজাকে এমন সিদ্ধান্তের বলি হতে হয়েছে বলে মনে করা হলেও মূলে আরো অনেক কারণ রয়েছে। গত কয়েক মাস ধরে তিনি অসুস্থতার মধ্যে রয়েছেন। মাত্র কয়েক দিন হলো ঢাকা বারডেম থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফেরেন। এরই মধ্যে তাকে মুখোমুখি হতে হয় দলের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিলের। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থসহ নানা কারণে তৃণমূল পর্যায়ে নেতাকর্মীদের সাথে তার যোগাযোগের ঘাটতি সৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে একটি বড় অংশ তার পেছন থেকে সরে গেছে। সমর্থন হারানোসহ অভ্যন্তরীণ নানা কারণে তাকে দলীয় পদ হারাতে হলো বলে মনে করা হচ্ছে। অভিজ্ঞ ও বর্ষীয়ান এ রাজনীতিবিদের অভাববোধ আওয়ামী লীগকে অনেক দিন ধরে করতে হবে এমনটি মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।