মেহেরপুর অফিস: খুলনা বিভাগের অধস্তন আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন মেহেরপুর জেলা পরিদর্শন ও আদালত মনিটরিং করেছেন। মঙ্গলবার সকালে মেহেরপুর সার্কিট হাউসে এসে পৌঁছান। এসময় মেহেরপুর জেলা পুলিশের একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করে। পরে বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন মেহেরপুর আদালতের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাগণের সাথে আলোচনা ও আদালত পরিদর্শন, প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের সাথে আলোচনা করেন। সন্ধ্যায় জেলা আইনজীবির সমিতির কার্যকরি কমিটির সদস্যগণের সাথে আলোচনাসভা করেন। বিকেলে স্বাধীনতা যুদ্ধে নিহত সকল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন জানিয়ে মেহেরপুরের ঐতিহাসিক মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর জেলা জজ মোহাম্মদ ওয়ালিউল ইসলাম, জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক তহিদুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রিপতি কুমার বিশ্বাস, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শিরিন নাহার, যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতের বিচারক হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতের বিচারক এইচএম কবির হোসেন, মেহেরপুর পুলিশ সুপার রাফিউল আলম, জেলা তথ্য অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন। রাতে সড়কপথে মেহেরপুর হতে চুয়াডাঙ্গা জেলার উদ্দেশ্যে রওনা দেন বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন।
দীর্ঘ সময় ধরে জমি সংক্রান্তসহ বিভিন্ন মামলা আদালতে পড়ে থাকায় কোনো নিরসন হচ্ছে না, বিচার বিভাগের পক্ষ থেকে কি ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, এ ধরনের সকল সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো নিরসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। বাংলাদেশের বিচারপতি আটটি বিভাগের জন্য ৮টি এ ধরনের মনিটরিং কমিটি ও ইনস্পেকশন কমিটি গঠন করে সমস্যাবলী ফাইন্ড আউট করে সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছেন। আমাকে খুলনা বিভাগের দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি কুষ্টিয়া জেলা থেকে শুরু করেছি। জুডিসিয়াল ক্ষেত্রে বিচারের জন্য জনসাধারণ মানুষসহ সকল নাগরিক বিশেষ ক্ষেত্রে নারী ও শিশু এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠী যেনো হয়রানি না হয় সেদিকে খেয়াল রেখে দ্রুত ও সঠিক বিচার যেনো পায়। তিনি আরো বলেন, আপনারা জানেন লিগ্যাল এইডের ব্যবস্থা করেছে বাংলাদেশ সরকার। আইন বিভাগের তত্ত¡াবধানে এগুলো চলছে। তারই একটা সমš^য় করা হবে। পুরাতন মামলা যেগুলো আছে যেগুলা বিচারাধীন এবং ব্যাক পড়ে গেছে সেগুলো কেন দ্রুত বিচার হচ্ছে না এগুলো মূলত আমরা ফাইন্ড আউট করতে এসেছি। কি করলে সেগুলো দূর হতে হবে এবং কি করলে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছুবে এবং মানুষ ন্যায়বিচার পেতে পারবে। পুলিশ ও বিচার বিভাগ প্রশাসন যার যতোটুকু দায়িত্ব রয়েছে এগুলা করা হচ্ছে কি-না এসব বিষয়গুলো দেখা হবে। বিচার বিভাগে যারা দায়িত্বশীল রয়েছে তাদেরকে আমরা এ ধরনের নির্দেশনা দিয়ে যাবো। প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পাওয়ার পর এই ধরনের একটি ভালো উদ্যোগ হাতে নিয়েছেন। এ বিষয় নিয়ে আমাদের সুপ্রিম কোর্টে সবাইকে নিয়ে আলোচনা ও মতবিনিময় হয়েছে। এসব সমস্যা নিরসন করে বিচার বিভাগকে আধুনিকায়ন করতে যে পদক্ষেপ নেয়ার দরকার সেগুলো আমরা করবো।
বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন আরও বলেন, আপনারা জানেন প্রত্যেক আদালতে নেজারত, নকল খানাসহ অনেক সেকশন রয়েছে। নোটিশ জারির ক্ষেত্রে কেন দেরি হবে, সেগুলো দ্রুতি করণ করা হবে, রায় বা অর্ডার যেগুলো দেয়া হয় সেগুলো যেন সাধারণ মানুষ বুঝতে পারে, জানতে পারে। এজন্য আমাদের এই পরিক্রমা কাজের শুরু।