দীর্ঘ ২৭ বছর একতরফা ভোগ-দখলের পর ১৯ বিঘা জমি উদ্ধারের পথে
উদ্ধারকৃত জমির কিছু জমি বিনাশর্তে এক বছরের জন্য মাদরাসায় প্রদান
স্টাফ রিপোর্টার: ২৭ বছর একতরফা ভোগদখলের পর ১৯ বিঘা জমি এখন উদ্ধারের পথে। উদ্ধারকৃত জমির কিছু পরিমাণ জমি বিনাশর্তে এক বছরের জন্য মাদরাসায় প্রদান করলেন ৩ ভাই-বোন। ঘটনাটি ঘটেছে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার নাগদহ গ্রামে। জমি মালিকগণ এহতেশাম হোসেন জোয়ার্দ্দার, মহাম্মদ আসাদুজ্জামান ও সুরাইয়া জাবীন জানান, আমার মেজভাই ইফতেকার হোসেন জোয়ার্দ্দার বুবলা মিয়া ভুল বুঝিয়ে আমাদের স্বাক্ষর জাল করে পাওয়ারনামা করে আমাদের পারিবারিক সম্পত্তি দীর্ঘদিন ধরে ভোগ দখল করে আসছিলো। তাদের একমাত্র বোন সুরাইয়া জাবীন জানান, আমার মেজভাই এহতেশাম হোসেন জোয়ার্দ্দার বুবলা যখন পাওয়ারনামা করেন তখন আমি ছিলাম মধ্যপ্রাচ্যের দুবাইয়ে। অথচ পাওয়ার নামায় আমার স্বাক্ষর করা আছে। ওই জাল স্বাক্ষর করে আমিসহ আমার অন্য দু-ভাইকে ঠকিয়ে বছরের পর বছর ধরে আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি ভোগ করে এসেছে। এমনকি আমার নিজ টাকায় খরিদ করা ৮ বিঘা জমিও অন্যায়ভাবে দখল করে সেই জমিতে পুকুর কেটে মাছ চাষ করে আসছে। এতোদিন গ্রামবাসী জানতো সবই জমিই বুবলা মিয়ার। কিন্তু আমরা তার জালিয়াতি জানতে পেরে পাওয়ার নামা বাতিল করার জন্য ২৭/০২/২০১৭ তারিখে বিজ্ঞ আদালতে আবেদন করা হয়। শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মতো করে ২৫/০৪/২০২৭ ইং তারিখে আমাদের সকলকে বঞ্চিত করেন তার একমাত্র ছেলে আরিফ ইসকিয়াখ ইনামের নামে ২৮৮১/১৭ নং দলিলে সম্পূর্ণ। বেআইনিভাবে রেজিস্ট্রি করে দেন। যা পাওয়ার নামা বা আমামোক্তারনামা বাতিলের আবেদনের পর মোটেই আইন সম্মত নয়। ওই দলিলে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে ও জালিয়াতি করে আমাতের শরিকানা জমি ফাঁকি দেয়ার হীন উদ্দেশ্য নিয়েই তার ছেলের নামে জমিগুলো রেজিস্ট্রি করে দেয়ার অপচেষ্টা করেন। শুধু তাই নয় আমার সেজো ভাই মহাম্মদ আসাদুজ্জামান বাচ্চু, তৎকালীন বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারী জজ মাহাবুবা শারমিন (ইংরেজিতে ইউনিশয়াল স্বাক্ষর এ্যলাউড) এ্যাড. মসলেম উদ্দীন, এ্যাড. মহসীন আলীর স্বাক্ষর জাল করে সোলেনামা সংশোধনের একটি আদেশপত্র ২৪/০৭/২০১৮ তারিখ দিয়ে নথির অভ্যান্তরে রেখে দেন। যা কখনোই বিচারেকর নজরে আনা হয়নি বা শুনানীর জন্য আবেদন করা হয়নি।
কোন কিছুতে উতরাতে না পেরে বুবলা মিয়া অন্যান্য ভাই বোনদের সমানভাবে বন্টন নামা রেজিস্ট্রি করে দিতে বাধ্য হয়। যার দলিল নং-২৩০৪/২১, তাং-২৩/০৩/২১। শুধু তাই নয় নিজে আমিন ডেকে সব ভাই-বোনদের মাঝে জমি মেপে সীমানা নির্ধারণ করে দেন। কিন্তু তার একদিন পর ২৫/০৩-২১ ইং তারিখে বুবলা মিয়া কার সন্তান আরিফ ইসতিয়াখ ইনামের দিয়ে ৭৬/২০২১ ইং দলিলমূল্য ৫০৪ শতক জমি তার নিজ নামীয় বলে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা করেন।
গতকাল আমরা আমাদের পৈত্রিক জমির পুকুর মাছ ছাড়তে গেলে আরিফ ইসকিয়াখ ইনাম তার লোকজন দিয় বাঁধা দেয় ও গালাগালি করে। ফলে এলকার মানুষ উপস্থিত হলে তাদের বিষয়টি জানালে এলাকাবাসী মূল ঘটনাটি বুঝতে পারে। একই সাথে এলকাবাসী বুবলা মিয়া ও তার সন্তান ইনামকে ধিক্কার দিতে থাকে। অবশেষে জমি মালিক এহতেশাম হোসেন জোয়ার্দ্দার, মহাম্মদ আসাদুজ্জামান ও সুরাইয়া জাবীন এলাকার সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে তার অংশমত জমির পুকুরে বলিয়ারপুর দারুল উলুম কওমীয়া হাফেজিয়া মাদরাসার উন্নয়নে মাছ ছাড়েন। ওই মাছ ১ বছরের জন্য মাদারাসার উন্নয়নে বিনাশর্তে এক বছরের জন্য প্রদান করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধক্ষ্য আলী রেজা সজল, মহিউদ্দীন জোয়ার্দ্দার, আজমের জোয়ার্দ্দার, কমল জোয়ার্দ্দার, রিপন, হাফেজ কামাল, রুমিসহ এলাকাবাসী।