দীর্ঘ ১৬ বছর পর ভূমিদস্যুদের থেকে দখলমুক্ত হলো সরকারি ৬৭ একর জমি

বিএডিসির জীবননগরের পাথিলা খামারের জমি দখলে নিয়ে মাছসহ অন্যান্য চাষাবাদ

জীবননগর ব্যুরো: এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম বিএডিসির ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার দত্তনগর বীজ উৎপাদন খামারের অধীন জীবননগর উপজেলার পাথিলা বীজ উৎপাদন খামারের বে-দখলকৃত ৬৭ একর জমি দীর্ঘ ১৬ বছর পর ভূমিদস্যুদের কবল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জহিরুল ইসলামের নেতৃত্বে বিএডিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ ও পুলিশের উপস্থিতিতে গতকাল শুক্রবার দুপুরে পাথিলা বীজ উৎপাদন খামারের সুটিয়া ও তেঁতুলিয়া এলাকা হতে ওই জমি উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত জমিতে বীজ উৎপাদনের জন্য চারা রোপনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ফার্ম কর্তৃপক্ষ।
পাথিলা বীজ উৎপাদন খামারসূত্রে জানা যায়, জীবননগর উপজেলার বাঁকা ইউনিয়নাধীন পাথিলায় ১৯৬২ সালে ৬০৫ একর জমির ওপর পাথিলা বীজ উৎপাদন খামার গড়ে তোলেন দত্তনগর ফার্মের প্রতিষ্ঠাতা হেমন্ত দত্ত। এ খামারে ধান, আলু, পাট ও গমসহ অন্যান্য ডাল ফসলের বীজ উৎপাদন করা হয়।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে ১৬ বছর আগে চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য হাজি আলী আজগার টগরের ঘনিষ্ঠ সহচর ও নিকট আত্মীয় মনোহরপুর ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন খান সুরুদ্দিন ও যুবলীগ নেতা জুয়েল আহমেদের নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ পদ্মা-গঙ্গা বিলের সাথে মাছ চাষের জন্য পাথিলা খামারের ৬৭.৪ একর জমি জবর দখলে নেয়। ওই জমি দখলে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মাছসহ অন্যান্য চাষাবাদ করা হচ্ছিলো। এ সময় ওই জমিতে ফার্ম কর্তৃপক্ষকে চাষাবাদ করতে দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
এ অবস্থার মধ্যে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর পথিলা বীজ উৎপাদন খামার কর্তৃপক্ষ বে-দখলকৃত ওই জমি উদ্ধারের উদ্যোগ গ্রহণ করে। এ উদ্যোগের ফলে গতকাল বে-দখলকৃত ৬৭ একর জমি পুনরায় উদ্ধার করা হয়। জমি উদ্ধারকালে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন বিএডিসির উপ-সচিব ড. কেএম মামুন-উজ্জামান, বিএডিসির মহাব্যবস্থাপক (বীজ) মোহাম্মদ আবীর হোসেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, বিএডিসির অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক (খামার) ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, পাথিলা বীজ উৎপাদন খামারের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন মোল্লা ও জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আল-আীমন জমি উদ্ধারে নেতৃত্ব প্রদান করেন। জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ মামুন হোসেন বিশ্বাস সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে এ জমি উদ্ধারে সহযোগিতা প্রদান করেন।
বিএডিসির পাথিলা বীজ উৎপাদন খামারের উপ-পরিচালক কামাল উদ্দিন মোল্লা সাংবাদিকদের জানান, দীর্ঘদিন বিপুল সংখ্যক জমি ভূমিদস্যুদের কবলে থাকায় খামারের প্রতি বছরের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা মারাত্মকভাবে কমে যায়। এ জমি উদ্ধারের পর ফার্মটি তার স্বাভাবিক উৎপাদন ফিরে পাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More