দামুড়হুদা কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রান্তিক কৃষকদের সাংবাদিক সম্মেলন
মুখ চিনে এক মেম্বারের মাধ্যমে সরকারি প্রণোদনা দেয়ার অভিযোগ
দামুড়হুদা অফিস: দামুড়হুদা উপজেলার বেশ কয়েকজন প্রান্তিক কৃষক সরকারের বিনামূল্যে দেয়া কৃষি উপকরণ প্রণোদনা বঞ্চিত হওয়ায় দামুড়হুদা প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন। মুখ চিনে ও একজন মেম্বারের সহযোগিতায় বিনামূল্যে সরকারি প্রণোদনা দেয়ার কারণেই ব্যাপক আলোচিত হয়ে পড়েছেন ওই কৃষি কর্মকর্তা। সরকারি মূল্যবান অনুদান প্রকৃতচাষি ও কৃষকদের মাঝে বিতরণ না করে পছন্দের লোককে দেয়ার অভিযোগে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সাংবাদিক সম্মেলন করেন উপজেলা এলাকার প্রান্তিক চাষিরা।
লিখিত বক্তব্যে জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে দামুড়হুদা প্রেসক্লাবে হাজির হয়ে উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন কৃষকজোটের সভাপতি মনোয়ার হোসেন লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত আড়াই বছরে দামুড়হুদা কৃষি কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান আমাদের শুধু আশার বাণী শুনিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সরকারি প্রণোদনা প্রান্তিক পর্যায় চাষি ও কৃষকরা পাবেন কিন্তু আশ্চার্য হলেও সত্য গত আড়াই বছর মনিরুজ্জামান কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করার পর একটি দিনেও হতভাগা বেশকিছু চাষির সাথে তিনি দেখা পর্যন্ত করেননি প্রণোদনা তো দূরের কথা। কিন্তু সরকার যে অর্থে কৃষকের উন্নয়ন কল্যাণে বিনামূল্যে সার বীজ ও নগদ টাকা দিয়ে সহায়তা করেছেন তা একজন দুর্নীতি পরায়ণ কর্মকর্তার কারণে ভেস্তে যেতে বসেছে। তাছাড়া সরকার প্রান্তিক চাষিদের জন্য যে মহতী উদ্যেগ নিয়েছেন তা একজন ব্যক্তির অনিয়ম দুর্নীতির কারনে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি অফিসার মনিরুজ্জামান যোগদানের পর তার নিকটআত্মীয় সামসুল ইসলাম মেম্বারকে দামুড়হুদা উপজেলা কৃষক সংগঠন সিআইজি’র (কমন ইন্টারেস্ট গ্রুপ) সভাপতি বানিয়ে সরকারের বরাদ্দকৃত কৃষি উপকরণ, প্রণোদনা ও প্রর্দশনী পল্টের বরাদ্দসহ বিভিন্ন কৃষি উপকরণে ব্যাপক অনিয়ম করে আসছেন, যা মাঠ পর্যায়ে তদন্ত করলে প্রদর্শনী প্লটের ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি ধরা পড়বে। কৃষিখাতে উন্নয়নে সরকারের মহতি কর্মসূচির উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যমাত্রা এ ধরনের কৃষি কর্মকর্তার অনিয়মের কারণে ব্যাহত হচ্ছে। সরকারি প্রণোদনা থেকে বঞ্চিত কৃষকেরা আরও জানান, কৃষি কর্মকর্তা শুধু মুখ চিনে ও স্থানীয় মেম্বার দামুড়হুদা উপজেলা সিআইজি সভাপতি সামসুল ইসলামের মাধ্যমে পছন্দমত লোককে সরকারি এ প্রনোদণা দিয়ে বেশ আলোচিত হয়েছেন বলে সাংবাদিক সম্মেলনে বলা হয়। কৃষকগণ জোর দাবি জানিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত অভিযোগে বলেন, এমন কৃষি কর্মকর্তা এ উপজেলায় থাকলে সরকারের যেমন দুর্নাম বদনাম হবে তেমনিভাবে প্রকৃত প্রান্তিক কৃষকগণ বিনামূল্যে সরকারি উপকরণ ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতেই থাকবে। সরকারের কোনো সুফল এই কৃষি কর্মকর্তার কারণে হবে না, হতে দেবে না। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ৬জন প্রান্তিক কৃষক লিখিত বক্তব্য পাঠ করে সাংবাদিকদের এ খবর জানান। সাংবাদিক সম্মেলন শেষে কৃষি কর্মকর্তার অফিসে সাংবাদিক নেতারা গিয়ে কথা বলার চেষ্টা করলে তিনি কোনোভাবেই তার গোপনকক্ষ থেকে বের হননি। পরে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সানজিদা বেগমের সাথে কথা বলা হলে তিনি জানান, বিষয়টি উভয়পক্ষের কাছ থেকে জানতে হবে। এ ধরনের ঘটনা হলে সেটা তো অনিয়মের মধ্যে পড়ে। সাংবাদিক সম্মেলনে জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক ও টেলিভিশনের সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।