দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদা উপজেলার দলকা বিল নিয়ে পূর্ববিরোধের জের ধরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের ৪জন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। আহতরা হলেন-জুড়ানপুর ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম নজু (৫০) ও বিল পাহারাদার রুহুল আমিন (৩০), মোজাম্মেল হক (৭০) ও বখতিয়ার উদ্দিন (৩০)। গতকাল রোববার বেলা আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে দামুড়হুদা থানাধীন গোপালপুর গ্রামস্থ দলকা বিলগামী রাস্তার ছোটপুল নামক স্থানে রাস্তার ওপর এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষ বাদী হয়ে পৃথক দুটি এজাহার দায়ের করেছেন দামুড়হুদা মডেল থানায়। বিল পাহারাদার রুহুল আমিনের লিখিত এজাহার সূত্রে জানা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলার জুড়ানপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে রুহুল আমিন দীর্ঘদিন যাবত হেমায়েতপুর প্রগতি মৎসজীবী সমবায় সমিতির পক্ষে দলকা বিলে পাহারাদার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল রোববার সকালে স্থানীয় বেশ কয়েকজন অবৈধভাবে বিলে প্রবেশ করে মাছ ধরতে যেতে থাকে। সে তাদেরকে মাছ ধরতে যেতে বারণ করায় তারা পাহারাদারের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে গালিগালাজ করতে থাকে। এরই এক পর্যায়ে এজাহারে উল্লেখিত আসামিগণ তাকে খুন জখমের হুমকি ধামকি প্রদান করে। আসামিগণ পূর্বশত্রুতার জের ধরে দেশীয় অস্ত্রসহ লাঠিসোটা নিয়ে ৬নং আসামি মো. খোকনের হুকুমে ১নং আসামি মো. বখতিয়ারের হাতে থাকা লোহার রোড দিয়ে পাহারাদারকে খুন করার উদ্দেশ্যে মাথা বরাবর আঘাত করলে সে আঘাত পেয়ে গুরুতর আহত হয়। চিৎকার দিয়ে মাটিতে পড়ে গেলে পুনরায় তার মাথায় আঘাত করে জখম করে। তার চিৎকার শুনে মাঠে থাকা মো. নজরুল ইসলাম ছুটে এসে তার প্রাণ রক্ষার চেষ্টা করে। ৩নং আসামি মো. ওমর আলী তার হাতে থাকা রামদা দিয়ে ইউপি সদস্য নজরুল ইসলামকে খুন করার উদ্দেশ্য তার মাথা লক্ষ্য করে পরপর দুটি কোপ মেরে গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম করে। ধারালো অস্ত্রের কোপে রক্তাক্ত জখম হয়ে নজরুল মেম্বার মাটিতে পড়ে গেলে ২নং আসামি বিশু তার হাতে থাকা হকস্টিক দিয়ে নজরুল মেম্বারকে পেটে, পিঠে ও বুকেসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে বেধড়ক মারপিঠ করে জখম করে। ওই সময় আহত জখমকৃত দুজনের ডাক চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে আসলে আসামিরা ঘটনাস্থল থেকে চলে যান। স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদেরকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। রক্তাক্ত জখম নজরুল ইসলাম নজু মেম্বারের মাথায় ৩০টা সেলাই ও বিল পাহারাদার রুহুল আমিনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করে নেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। এ ঘটনায় আহত বিল পাহারাদার রুহুল আমিন বাদী হয়ে গোপালপুর গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে বখতিয়ার উদ্দীনকে ১নং আসামি করে ৭জনের নাম উল্লেখ করে দামুড়হুদা মডেল থানায় একটি লিখিত এজাহার দায়ের করেছেন। অপরপক্ষের এজাহার সূত্রে জানা গেছে, একই ঘটনায় উভয় পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় গোপালপুর গ্রামের মৃত জালাল মন্ডলের ছেলে মোজাম্মেল হক (৭০) বাদী হয়ে ৮জনকে আসামিসহ ৫/৬জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে দামুড়হুদা মডেল থানায় এজাহার দায়ের করেছেন। এই পক্ষের আহতরা হলেন-দামুড়হুদা উপজেলার গোপালপুর গ্রামের মৃত জালাল মন্ডলের ছেলে মোজাম্মেল হক ও একই গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে বখতিয়ার উদ্দিন। তারাও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানাগেছে। দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি আলমগীর কবির বলেন, উভয়পক্ষ পৃথক দুটি এজাহার দায়ের করেছেন। মামলা প্রক্রীয়াধীন।
পূর্ববর্তী পোস্ট
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.