দর্শনা কেরুজ চিনিকল এলাকায় কয়েক দফায় বোমা উদ্ধারের রহস্য উন্মোচিত হয়নি : পৃথক ৩টি মামলায় এ পর্যন্ত গ্রেফতার-৪
স্টাফ রিপোটার: কেরুজ চিনিকল এলাকাসহ দর্শনায় একমাসের ব্যবধানে পৃথক ৬টি স্থান থেকে ১৪টি বোমা উদ্ধারের ঘটনায় থানায় একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলায় পুলিশ গ্রেফতার করেছে কেরুজ টগর ও লিপনসহ ৪জনকে গ্রেফতার করেছে। ঘটনার প্রায় আড়াই মাস পেরিয়ে গেলেও বোমা উদ্ধার ঘটনায় রহস্য উন্মোচন হয়নি আজও। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ২ জনের জামিন হলেও এখনো কারাবাস করছেন রাসেল উদ্দিন টগরসহ ২জন। টগরের জামিনের জন্য পরিবারের সদস্যরা আদালতে ছুটছেন বারবার। জানা গেছে, কেরুজ চিনিকল এলাকায় গত ১৩, ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি পৃথক ৩টি স্থান থেকে পরিত্যাক্ত অবস্থায় ৬টি বোমা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় কেরুজ চিনিকলের নিরাপত্তা বিভাগের কর্মকর্তা মুজাহিদুল ইসলাম বাদি হয়ে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন। এছাড়া ২০ ফেব্রুয়ারি দর্শনা ঈশ্বরচন্দ্রপুর ও আকন্দবাড়িয়া থেকে পৃথক ৭টি বোমা উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনায় ঈশ্বরচন্দ্রপুরের রুবেল বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। এ ছাড়া ১৪ মার্চ কেরুজ ইটখোলা মাঠ থেকেও পরিত্যাক্ত একটি বোমা উদ্ধারের ঘটনা ঘটে। দর্শনায় ১৪টি বোমা উদ্ধারে থানায় পৃথক তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে। এ মামলায় গ্রেফতার করা হয় দক্ষিণচাঁদপুরের আলহীম, লিপন, রানা ও কেরুজ করপোরেশন লাইনপাড়ার রাসেল উদ্দিন টগরকে। পুলিশ গ্রেফতারকৃত আলহীম, লিপন ও রানাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে রিমান্ডের আবেদন করলেও তা নামঞ্জুর করেন বিজ্ঞ বিচারক। রাসেলে উদ্দিন টগরের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করে বলেন, কেরুজ নির্বাচন কেন্দ্রীক প্রতিহিংসা বসত টগরকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে। প্রশাসনকে ভুল বুঝিয়ে যেমন করানো হয়ে গ্রেফতার, তেমনি তার ঘাড়ে চাপানো হয়েছে দুইটি বোমা মামলা। খাদিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের বিএনপির মনোনীত সাবেক সফল চেয়ারম্যান শাহজালাল বেনার ছেলে, জাতীয়তাবাদী পেশাজীবী পরিষদের চুয়াডাঙ্গা জেলা নেতা, কেরুজ বেগমপুর কৃষি খামারের করনীক রাসেল উদ্দিন টগরকে ২৪ মার্চ গ্রেফতার করে পুলিশ। ষড়যন্ত্রকারিদের মিথ্যা দোষারোপে টগরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলগেটে একদিনের জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন বিজ্ঞ আদালতের বিচারক। টগরের পরিবারের অভিযোগ হয়তো পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে বোমা ঘটনায় জড়িত থাকার কোন তথ্য মেলেনি। এ ছাড়া মামলার বাদীর অজান্তেই আরও একটি বোমা মামলায় টগরকে আসামি করা হয়। এ ঘটনায় মামলার বাদী মুজাহিদুল ইসলাম সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন টগরকে যে আরও একটি মামলায় আসামি করা হয়েছে তা আমার জানা নেই। কেরুজ শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ফিরোজ আহমেদ সবুজ বলেন, টগর জনপ্রিয় একজন শ্রমিক। টগরকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে কারো কারো স্বার্থ হাসিলের জন্য। সঠিক পুলিশি তদন্তে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব যে টগর বোমা ঘটনার সাথে কোনভাবে জড়িত না। টগর শারীরিকভাবে অসুস্থ। তাকে দ্রুত জামিনে মুক্তিসহ মামলা থেকে নাম প্রত্যাহারের দাবি করছি। দর্শনা থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সুলতান মাহমুদ বলেন, মোবাইল ফোনে নয়, স্বাক্ষাতে মতামত জানাবো। দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ শহীদ তিতুমীর বলেন, মামলাগুলো তদন্তাধীন। তাই তদন্ত শেষ হওয়ার আগে মন্তব্য করা সম্ভবনা। এ দিকে কেরুজ শ্রমিক-কর্মচারীসহ দর্শনাবাসী দর্শনায় পৃথক ৬টি স্থানে ১৪টি বোমা উদ্ধারের রহস্য জানতে আপেক্ষার প্রহর গুনছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপারের কাছে দাবি উঠেছে সর্বমহল থেকে।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.